সংসদে ‘অসভ্য’ বক্তব্য: শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

সংসদে ‘অসভ্য’ বক্তব্য: শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
সর্বশেষ আপডেট: 11-03-2025

সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের ‘অসভ্য’ শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। DMK সাংসদ কনিমোঝি একে অপমানজনক ও অসংসদীয় বলে অভিহিত করে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের নোটিশ দিয়েছেন।

দিল্লি: সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। DMK সাংসদ কনিমোঝি করুণানিধি প্রধানের বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের নোটিশ দাখিল করেছেন। এই বিতর্ক তখন শুরু হয় যখন প্রধান তামিলনাড়ুর সাংসদদের ‘অসভ্য’ বলে অভিহিত করেন।

কনিমোঝির প্রতিবাদ

প্রধানের এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে কনিমোঝি একে অপমানজনক ও অসংসদীয় বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরণের শব্দ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য অগ্রহণযোগ্য এবং সংসদে এগুলি ব্যবহার করা উচিত নয়। তিনি একে তামিলনাড়ুর নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিও অসম্মানজনক বলে মনে করেন।

ত্রি-ভাষা নীতিকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ

DMK দীর্ঘদিন ধরে ত্রি-ভাষা নীতির বিরোধিতা করে আসছে, যেখানে হিন্দিকে বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানোর বিধান রয়েছে। তামিলনাড়ুতে ঐতিহ্যগতভাবে দ্বি-ভাষা নীতি (তামিল ও ইংরেজি) প্রযোজ্য। কনিমোঝি অভিযোগ করেছেন যে, কেন্দ্র সরকার দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলিতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যার ফলে স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি বিপন্ন হতে পারে।

দক্ষিণ ও উত্তর রাজ্যের মধ্যে অসমতা

কনিমোঝি দক্ষিণ ও উত্তর রাজ্যগুলির মধ্যে উন্নয়নের অসমতার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, দক্ষিণের রাজ্যগুলি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রতি লক্ষ্য রাখছে, কিন্তু পুনর্নির্বাচন নীতির কারণে তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্পষ্ট নীতির দাবি জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, দক্ষিণের রাজ্যগুলি উন্নয়ন ও সম্পদের বণ্টনে অন্যায়ের শিকার হচ্ছে।

পুনর্নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ

DMK সাংসদ পুনর্নির্বাচন (লোকসভা আসনের পুনর্বণ্টন) নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই প্রক্রিয়া দক্ষিণের রাজ্যগুলির ক্ষতি করতে পারে, যখন বৃহৎ জনসংখ্যার উত্তরের রাজ্যগুলি আরও আসন পেতে পারে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার দাবি জানিয়েছেন।

তামিলনাড়ুর শিক্ষানীতি

কনিমোঝি তামিলনাড়ুর শিক্ষাব্যবস্থার প্রশংসা করে বলেছেন যে, রাজ্যের জিডিপি উন্নত এবং এখানকার মানুষ বিদেশে উচ্চপদে কর্মরত আছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন যে, যখন রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা এতটাই কার্যকর, তাহলে পাঠ্যক্রমে হিন্দিকে জোর করে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন কী?

DMK-এর স্পষ্ট অবস্থান

DMK স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা হিন্দি বা অন্য কোনও ভাষার বিরোধী নয়, তবে তারা রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। কনিমোঝি বলেছেন, ভাষা একটি রাজ্যের বিষয় এবং কেন্দ্রীয় সরকার এতে হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি সংসদে এই বিষয়ে ব্যাপক আলোচনার দাবি জানিয়েছেন।

Leave a comment