প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ ভুজ ভ্রমণে রয়েছেন। অপারেশন সিন্দুরের সফলতার পর এটি তাঁর প্রথম ভুজ আগমন, যার ফলে সমগ্র দেশের দৃষ্টি তাঁর এই ভ্রমণের দিকে আকর্ষিত হয়েছে।
রাজনাথ সিংহের গুজরাট সফর: প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গুজরাটের ভুজে একটি বিশেষ ভ্রমণ করেছেন, যা ভারতীয় বিমানবাহিনীর শক্তি এবং দেশের নিরাপত্তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অপারেশন সিন্দুরের পর এটি তাঁর ভুজ বিমানঘাঁটির প্রথম সফর ছিল, যা সমগ্র দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ২৩ মিনিটে সম্পন্ন অপারেশনের কথা তিনি নিজের বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে ভারতীয় বিমানবাহিনীর পৌঁছানোর ক্ষমতা পাকিস্তানের প্রতিটি কোণে বিদ্যমান। এই সময় তিনি সেনা কর্মীদের উৎসাহিত করেছেন এবং স্মৃতিবনও দেখেছেন, যা ২০০১ সালের ভূমিকম্পে শহীদদের স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিসৌধ।
অপারেশন সিন্দুরের পর ভুজে প্রথমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ভুজে জওয়ানদের উদ্দেশ্যে রাজনাথ সিংহ বলেছেন, এই স্থান ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সাক্ষী, যেখানে ভারতীয় সেনা পাকিস্তানকে পরাজিত করেছিল। আজও ভুজ ভারতীয় সামরিক শক্তির প্রতীক। তিনি অপারেশন সিন্দুরের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অপারেশন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক নামকরণ করা হয়েছিল, যেখানে ভারতীয় বিমানবাহিনী মাত্র ২৩ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদীদের ধ্বংস করেছে।
২৩ মিনিটে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীদের ধ্বংস
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন যে ২৩ মিনিটের মধ্যে ভারতীয় বিমানবাহিনী যে কাজ করে দেখিয়েছে তা সমগ্র দেশ গর্বের সাথে দেখছে। আমরা যতক্ষণ নাশতা বা পানি পান করি, ঠিক ততক্ষণের মধ্যে আমাদের বীর সেনারা শত্রুদের লক্ষ্যবস্তু করে। এটি আমাদের সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও শক্তির প্রমাণ। তাঁর এই বক্তব্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্ভুলতা ও ক্ষমতার পরিচায়ক।
ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তি স্বীকার করেছে পাকিস্তান
এই সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভারতের স্বদেশী সামরিক প্রযুক্তি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রেরও প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের অস্ত্র-শস্ত্র এখন ভারতেই তৈরি হচ্ছে, যা আমাদের সামরিক শক্তিকে আরও বাড়াচ্ছে। পাকিস্তানও ব্রহ্মোসের শক্তি স্বীকার করেছে। ব্রহ্মোস রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানকে দিনের আলো দেখিয়ে দিয়েছে। এই বক্তব্য ভারতের সামরিক আত্মনির্ভরতা ও শক্তির প্রমাণ।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তথ্য শেয়ার করেছেন
রাজনাথ সিংহ নিজের টুইটার (এক্স) অ্যাকাউন্টে ভুজ সফরের তথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, নয়াদিল্লি থেকে ভুজের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। আমার বিমানবাহিনীর বীর যোদ্ধাদের সাথে দেখা করার জন্য অত্যন্ত উৎসুক। এরপর আমি স্মৃতিবনও পরিদর্শন করব।" সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্টটি প্রশংসিত হয়েছে এবং দেশবাসী ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই আত্মবিশ্বাসকে সালাম জানিয়েছেন।
স্মৃতিবন: ভূমিকম্পে প্রাণহানির স্মৃতি
রাজনাথ সিংহ স্মৃতিবনও পরিদর্শন করেছেন, যা ২০০১ সালের ভূমিকম্পে প্রাণহানির স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই স্থান কেবলমাত্র একটি স্মৃতিসৌধ নয়, বরং একটি অনুপ্রেরণাও, যা দুর্ঘটনার পরে উঠে দাঁড়ানোর শক্তির পরিচায়ক। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই সফরকে এই অঞ্চলের প্রতি তাঁর সংবেদনশীলতা ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সফরের সময় রাজনাথ সিংহ আবারও এই বার্তা দিয়েছেন যে ভারতের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং সীমান্তে যে কোনও ধরণের চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে সর্বদা সতর্ক থাকে।