জম্মু-কাশ্মীরের পাহালগামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার পর রাজস্থানের চুরু, সিকর এবং ঝুঁঝুনু জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এসব এলাকায় অবৈধ বিদেশী নাগরিকদের শনাক্তকরণের জন্য বিশেষ তদন্ত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং মकान মালিকদের জন্য ভাড়াটেদের পুলিশ যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ঝুঁঝুনু: জম্মু-কাশ্মীরের পাহালগামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সমগ্র রাজস্থান, বিশেষ করে শেখাওয়াতি অঞ্চলের তিনটি জেলা - চুরু, সিকর এবং ঝুঁঝুনু - তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এই জেলাগুলিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানী নাগরিকদের শনাক্তকরণ এবং গ্রেপ্তারের জন্য একটি বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে চুরু জেলা প্রশাসন একটি কঠোর আদেশ জারি করেছে, যার অধীনে সমস্ত মকান মালিক, হোস্টেল পরিচালক এবং কারখানা/ভাটার মালিকদের তাদের ভাড়াটে এবং কর্মচারীদের পুলিশ চরিত্র যাচাই সাত দিনের মধ্যে করানো বাধ্যতামূলক হবে, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাড়াটেদের যাচাই এখন বাধ্যতামূলক, নয়তো হবে কঠোর ব্যবস্থা
চুরু জেলায় মকান মালিকদের এখন তাদের ভাড়াটে, শ্রমিক এবং চাকরদের পুলিশ যাচাই করানো বাধ্যতামূলক হবে। এই আদেশটি চুরুর এসপি জয় যাদবের প্রস্তাবের ভিত্তিতে জারি করা হয়েছে। এর অধীনে, মকান মালিকদের সাত দিনের মধ্যে যাচাই করতে হবে, অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এই আদেশটি পরবর্তী দুই মাস ধরে কার্যকর থাকবে। মকান মালিকদের নিশ্চিত করতে হবে যে তারা তাদের ভাড়াটে এবং কর্মচারীদের যাচাই করিয়েছে, যাতে জেলায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যায়।
চুরু জেলায় অভিযান: ২০০০ এর বেশি শ্রমিকের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ
পাহালগামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার পর শেখাওয়াতি অঞ্চলে পুলিশ অবৈধ বিদেশী নাগরিকদের শনাক্তকরণের জন্য তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। চুরু জেলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ২০ টির বেশি ইটভাটা, কারখানা এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে এবং ২০০০ এর বেশি শ্রমিকের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে, চুরু জেলায় এখনও কোন অবৈধ বাংলাদেশী নাগরিক ধরা হয়নি, তবে সিকর এবং ঝুঁঝুনুতে ২০০ এর বেশি অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মকান মালিকদের জন্য নতুন নির্দেশনা: যাচাই না করলে হবে আইনি ব্যবস্থা
চুরু জেলা প্রশাসনের নতুন আদেশ অনুসারে, যদি কোন মকান মালিক, হোস্টেল পরিচালক বা কারখানা পরিচালক যাচাই না করে কাউকে তার কাছে থাকতে দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। প্রশাসনের স্পষ্ট বার্তা হল নিরাপত্তার সাথে কোন আপোষ করা হবে না। এছাড়াও, শেখাওয়াতি অঞ্চলে অনেক ইটভাটা মালিকদের দ্বারা বাংলাদেশী শ্রমিকদের রাখার ঘটনা সামনে এসেছে।
এই শ্রমিকরা দালালদের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আনা হয়, যারা প্রতি বছর নতুন স্থানে এই শ্রমিকদের পাঠায় যাতে তাদের পরিচয় গোপন থাকে। यही কারণে গত কয়েক বছরে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
খান্ডেলা এবং পাটনে অভিযান: ২০০ এর বেশি সন্দেহভাজন নাগরিককে আটক করা হয়েছে
সিকর জেলার খান্ডেলা এবং পাটনে পুলিশ ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-এর তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে। খান্ডেলায় পুলিশ ৫৫ জন বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে, যারা অবৈধভাবে কাজ করছিল। পাটনে একই দিনে পুলিশ ১০৯ জন সন্দেহভাজন শ্রমিককে আটক করেছে। এছাড়াও, ঝুঁঝুনু জেলায় ৩৫ জন অবৈধ বাংলাদেশী নাগরিককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদের কারো কাছেই কোন বৈধ নথিপত্র ছিল না, যা তাদের অবৈধ কার্যকলাপ প্রমাণ করে। এই অভিযানের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে এ ধরনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এলাকাকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
আপনি কি জানেন আপনার নিরাপত্তা সংক্রান্ত অধিকার কী কী?
নিরাপত্তার অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সকল নাগরিকের জন্য প্রয়োজনীয়। যদি আপনি কোন এমন ভাড়াটে বা কর্মচারীকে জানেন যিনি অবৈধভাবে বসবাস করছেন বা কাজ করছেন, তাহলে আপনাকে অবিলম্বে পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এই পদক্ষেপ আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমাজকেও সুরক্ষিত করতে সাহায্য করবে। এই দায়িত্ব কেবল প্রশাসনের নয়, প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তার অধিকার এবং কর্তব্য বুঝতে হবে।