ওড়িশা বিধানসভায় হাতাহাতি: বিজেপি বিধায়কের বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে উত্তেজনা

ওড়িশার বিজেপি বিধায়ক জয়নারায়ণ মিশ্রের বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে উত্তাল ওড়িশা বিধানসভা। প্রথমবারের মতো শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি হয়, যার ফলে বিধানসভায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

Odisha Vidhan Sabha: ওড়িশার বিজেপি বিধায়ক জয়নারায়ণ মিশ্রের এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় তুমুল হইচই হয়েছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, তাঁর বক্তব্য রাজ্যের আত্মসম্মানকে আঘাত করেছে। প্রথমবারের মতো ওড়িশা বিধানসভায় শাসক দল ও বিরোধী দলের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার বিধানসভায় এ ধরণের ঘটনা দেখা গেলেও ওড়িশায় এটি প্রথম।

কী ঘটেছে?

কিছুদিন আগে বিজেপি বিধায়ক জয়নারায়ণ মিশ্র একটি সরকারি অনুষ্ঠানে পশ্চিম ওড়িশার সাথে যুক্ত হওয়াকে ঐতিহাসিক ভুল বলে অভিহিত করেন। এমনকি রাজ্যগীত ‘বন্দে উৎকল জননী’ গাওয়ার সময় তিনি নিজের আসনে দাঁড়াননি। তার এই আচরণের সমগ্র রাজ্যে তীব্র সমালোচনা হয়। মঙ্গলবার বিধানসভায় এই বিষয় নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়।

বিধানসভায় হইচই ও হাতাহাতি

কংগ্রেস ও বিজেডি (BJD) বিধায়করা বিধানসভায় এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন। কংগ্রেস বিধায়ক তারা প্রসাদ বাহিনীপতি বিধানসভা অধ্যক্ষের পোডিয়ামে উঠে প্রতিবাদ জানান, অন্যদিকে বিজেডি বিধায়করা কালো পটি বেঁধে এবং প্লেকার্ড নিয়ে সরকারের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করেন।

এই সময় প্রশ্নোত্তর চলছিল, হঠাৎ শাসক দল ও বিরোধী দলের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় এবং পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বিধায়ক তারা প্রসাদ বাহিনীপতি অভিযোগ করেন যে, বিজেপি বিধায়করা তাঁর কলার ধরে টেনেছেন এবং গালিগালাজ করেছেন। তিনি বলেন, "আমি ২৫ বছর ধরে বিধায়ক, কিন্তু এরকম পরিস্থিতি আগে কখনো দেখিনি। বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা মারধর করতে পারেন, তাহলে বাইরে কী করবেন?"

বিরোধী দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

কংগ্রেস বিধায়কদের অভিযোগ, বিজেপি সরকার নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এই বিষয় থেকে দৃষ্টি সরাতে তারা বিধানসভায় হইচই করেছে। কংগ্রেস বিজেপি বিধায়কদের স্থগিতাদেশের দাবি জানিয়ে বলেছে যে, তারা গরিব, আদিবাসী ও নারীদের জন্য তাদের লড়াই অব্যাহত রাখবে।

বিজেপি বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বিজেপি বিধায়ক অশোক মহান্তি কংগ্রেস ও বিজেডিকে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "ওড়িশার জনতা বিজেপিকে শাসনের দায়িত্ব দিয়েছে, কিন্তু বিরোধী দলগুলি ক্রমাগত বিধানসভা চলতে দিচ্ছে না।" তিনি অভিযোগ করেন যে বিরোধী দলের বিধায়করা একজন মন্ত্রীর উপর হাত তোলার চেষ্টা করেছেন, যা অগ্রহণযোগ্য।

বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত

বিধানসভায় চলমান হইচই দেখে অধ্যক্ষ সূর্যমা পাড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে তিনি বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর বিজেপি ও কংগ্রেস বিধায়কদের পৃথক বৈঠক হয়, যেখানে ভবিষ্যতের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।