মূল্যস্ফীতির হারে ১৪ মাসের ন্যূনতম হ্রাস: জনসাধারণের জন্য স্বস্তির সংবাদ

মূল্যস্ফীতির হারে ১৪ মাসের ন্যূনতম হ্রাস: জনসাধারণের জন্য স্বস্তির সংবাদ
সর্বশেষ আপডেট: 16-06-2025

জনসাধারণের জন্য মূল্যস্ফীতির मोর্চেতে স্বস্তির খবর এল। দেশের পাইকারি মূল্যস্ফীতির হার কমে গিয়ে છેল ১৪ মাসের সর্বনিম্ন স্তরে।

দেশের অর্থনীতির জন্য স্বস্তির খবর এসেছে। ২০২৫ সালের মে মাসে ভারতের পাইকারি মূল্য সূচক ভিত্তিক মূল্যস্ফীতির হার (WPI) উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা ১৪ মাসের ন্যূনতম স্তরে পৌঁছেছে। এই হ্রাসের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল খাদ্যপণ্যের দাম কমে যাওয়া এবং নির্মাণ ক্ষেত্রে ব্যয় কমে যাওয়া। এর ফলে সাধারণ ভোক্তারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে স্বস্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মে মাসে পাইকারি মূল্যস্ফীতির হার কমেছে

ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে পাইকারি মূল্যস্ফীতির হার কমে ২.১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ২.৮৫ শতাংশ। এই হ্রাস গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর সরাসরি সুবিধা ভোক্তারা পেতে পারেন, কারণ পাইকারি মূল্যস্ফীতি খুচরা মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করে।

বিশেষ করে, খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যস্ফীতির হারেও হ্রাস পেয়েছে। মে মাসে এটি ১.৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ২.৫৫ শতাংশ। এর অর্থ হল কৃষক ও বিতরণকারী থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত পণ্যের ব্যয় কমছে।

উৎপাদনশীল পণ্যে নমনীয়তা

পাইকারি মূল্যস্ফীতির হার কমার একটি বড় কারণ হল উৎপাদনশীল পণ্যের ব্যয় কমে যাওয়া। মে মাসে উৎপাদন ভিত্তিক WPI কমে ২.০৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ২.৬২ শতাংশ। এটি ইঙ্গিত করে যে কারখানা এবং উৎপাদন ইউনিটগুলি তাদের ইনপুটে কম ব্যয় পাচ্ছে, যার ফলে তাদের উৎপাদন ব্যয় কমেছে।

এই পরিবর্তনটি শুধুমাত্র ভোক্তা পণ্যগুলিকে প্রভাবিত করবে না, বরং বিনিয়োগের পরিবেশকেও উন্নত করবে, কারণ কম খরচে বেশি উৎপাদন সম্ভব হবে।

সবজি এবং আলুর দামে তীব্র হ্রাস

তথ্য অনুযায়ী, আলুর পাইকারি মূল্যস্ফীতির হারে চমৎকার হ্রাস দেখা গেছে। এপ্রিল মাসে এটি ছিল -২৪.৩০ শতাংশ, যা মে মাসে আরও কমে -২৯.৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব খুচরা বাজারে আলুর দামে পড়বে এবং ভোক্তারা স্বস্তি পাবেন।

এইভাবে, পেঁয়াজের পাইকারি মূল্যস্ফীতির হারও ০.২০ শতাংশ থেকে কমে -১৪.৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সবজির মোট মূল্যস্ফীতির হার -১৮.২৬ শতাংশ থেকে কমে -২১.৬২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মাংস, মাছ এবং ডিমের মতো প্রোটিন ভিত্তিক খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হারও -০.২৯ শতাংশ থেকে কমে -১.০১ শতাংশে পৌঁছেছে।

ইন্ধন এবং শক্তির দামে স্থায়িত্ব

মে মাসে ইন্ধন ও বিদ্যুৎ খাতের পাইকারি মূল্যস্ফীতির হারেও হ্রাস পেয়েছে। এপ্রিল মাসে এটি ছিল -২.১৮ শতাংশ, যা মে মাসে সামান্য হ্রাসের সাথে -২.২৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে কাঁচা তেলের দাম স্থিতিশীল থাকা এবং দেশীয় ইন্ধন নীতিতে ভারসাম্য থাকার কারণে এই ক্ষেত্রে বিশেষ স্বস্তি দেখা যাচ্ছে।

খুচরা মূল্যস্ফীতির হারেও নমনীয়তা

পাইকারি মূল্যস্ফীতির হারের সাথে সাথে দেশে খুচরা মূল্যস্ফীতির হারেও উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। ১২ জুন প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার কমে ২.৮২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিল মাসে ছিল ৩.১৬ শতাংশ এবং মার্চ মাসে ছিল ৩.৩৪ শতাংশ। এটি গত ৬৭ মাস অর্থাৎ প্রায় ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২৯ সালে শেষবার খুচরা মূল্যস্ফীতি ২.৮৬ শতাংশ ছিল।

খুচরা মূল্যস্ফীতির হার কমার প্রধান কারণ হল খাদ্যপণ্যের দাম কমে যাওয়া। ফল, সবজি, শস্য এবং দুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের বাজেটের উপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে।

জিডিপি বৃদ্ধির হার শক্তিশালী রয়েছে

মূল্যস্ফীতি কমার মধ্যেই দেশের অর্থনীতিতেও স্থায়িত্ব দেখা যাচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭.৪ শতাংশ ছিল, যা অনুমানকৃত ৬.৫ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি। যদিও গত দুই বছরের গড় ৮.৪ শতাংশের তুলনায় এটি কিছুটা কম, তবুও বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার পরিবেশে এই পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়।

২০২৬ অর্থবর্ষের জন্য ৬.২ শতাংশ হারে জিডিপি বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে, যা ইঙ্গিত করে যে ভারতের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী রয়েছে এবং এটি উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

ভোক্তারা স্বস্তি পাবেন

পাইকারি ও খুচরা উভয় স্তরে মূল্যস্ফীতি কমার ফলে ভোক্তারা সরাসরি লাভবান হবেন। গৃহস্থালীর বাজেট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এই পরিস্থিতি স্বস্তির, যারা দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দামে প্রভাবিত হয়।

তদুপরি, সুদের হারের উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। যদি মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার কমাতে পারে, যার ফলে ঋণ সস্তা হতে পারে এবং বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা যায়।

```

Leave a comment