আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটারদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কংগ্রেস বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘মেরা ভোট, মেরা অধিকার’ অভিযানটি ২২শে মার্চ থেকে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত চলবে, যার উদ্দেশ্য লোকজনকে তাদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য অনিয়ম উন্মোচন করা।
Dehradun: উত্তরাখণ্ড কংগ্রেস আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটারদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ‘মেরা ভোট, মেরা অধিকার’ অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এই অভিযানটি ২২শে মার্চ থেকে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত চলবে, যার উদ্দেশ্য লোকজনকে তাদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং নির্বাচনী অনিয়মের সম্ভাবনাগুলি উন্মোচন করা। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি সরকার ভোটার তালিকায় ছলচাতুরি করছে। এই অভিযানের অধীনে কংগ্রেস কর্মীরা গ্রামে গ্রামে এবং শহরে শহরে গিয়ে ভোটারদের তাদের সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য জনতাকে সতর্ক করবে।
সংবিধান রচয়িতাকে উৎসর্গীকৃত অভিযান
কংগ্রেস এই অভিযানটি সংবিধান রচয়িতা ডঃ ভীমরাও আম্বেদকরের জন্মদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময় কংগ্রেস কর্মীরা সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ করবে, তাদের ভোটদানের শক্তি বুঝিয়ে দেবে এবং নিশ্চিত করবে যে তারা তাদের ভোটাধিকার সঠিকভাবে ব্যবহার করছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে দুর্বল ও বঞ্চিত শ্রেণীর ভোটাধিকারে হস্তক্ষেপ করছে।
বৈঠকে তৈরি হলো কৌশল, সক্রিয় থাকবে কংগ্রেস কর্মীরা
এই অভিযানকে কার্যকর করার জন্য রবিবার কংগ্রেস সদর দফতরে যুব কংগ্রেস এবং NSUI-এর যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি করণ মাহরা, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (CWC) -এর সদস্য গুরদীপ সিং সাপ্পাল, যুব কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি উদয় ভানু চিব, NSUI-এর জাতীয় সভাপতি বরুণ চৌধুরীসহ অনেক শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, দলের কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে লোকজনকে ভোটদান প্রক্রিয়া এবং ভোটার তালিকায় নাম যোগ করার তথ্য দেবে।
বিজেপির উপর ভোটার তালিকায় ছলচাতুরির অভিযোগ
CWC সদস্য গুরদীপ সিং সাপ্পাল বিজেপি সরকারকে লক্ষ্য করে বলেছেন যে, সরকার দল নির্বাচনী লাভের জন্য ভোটার তালিকায় ছলচাতুরি করছে। তিনি বলেছেন, “আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি যে, দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে, আর বাইরের লোকদের যোগ করা হচ্ছে। কংগ্রেস এই ষড়যন্ত্রের পর্দাফাশ করবে।”
রাষ্ট্রব্যাপী কংগ্রেস কর্মীদের অংশগ্রহণ
কংগ্রেস এই অভিযানকে রাষ্ট্রব্যাপী করার জন্য বুথ স্তর পর্যন্ত তাদের কর্মীদের সক্রিয় করবে। দলের কর্মীরা প্রতিটি গ্রাম, শহর ও নগরে গিয়ে লোকজনকে ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করবে এবং ভোটার তালিকায় নাম যাচাই করা, সংশোধন করা এবং ভোটাধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য তাদের উৎসাহিত করবে।
গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার দিকে পদক্ষেপ
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করণ মাহরা বলেছেন যে, এই অভিযান কেবল কংগ্রেসের নয়, বরং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। তিনি বলেছেন, "প্রতিটি নাগরিকের ভোটাধিকার একটি শক্তি, এবং এই অধিকারকে দুর্বল করার যেকোনো চেষ্টার কঠোর বিরোধিতা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য এই অভিযানের সাথে সর্বাধিক লোকজনকে যুক্ত করা।"
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের প্রতিজ্ঞা
কংগ্রেস স্পষ্ট করেছে যে, এই অভিযান কেবল ভোটারদের সচেতন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং যে কোন ধরণের নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। কংগ্রেসের বক্তব্য, যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে প্রতিটি নাগরিককে তার অধিকার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। দল সকল ভোটারদের কাছে আবেদন করেছে যে, তারা তাদের অধিকার রক্ষার জন্য এই অভিযানের অংশ হোক এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অবদান রাখুক।