ভারত জইশ-এ-মোহাম্মদের শীর্ষ কমান্ডার আব্দুল রউফ আজহারকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নিহত করেছে। আমেরিকা এটিকে ন্যায়বিচার বলে অভিহিত করেছে এবং ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে, এই অভিযানের বিশ্বব্যাপী প্রভাব দেখা দিতে শুরু করেছে।
আব্দুল রউফ আজহার: ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করে জইশ-এ-মোহাম্মদের কুখ্যাত সন্ত্রাসী এবং শীর্ষ কমান্ডার আব্দুল রউফ আজহারকে নিহত করেছে। এই সামরিক অভিযানের পর, আব্দুল রউফ আজহারের মৃত্যু নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে আমেরিকা ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং এটিকে 'জাস্টিস ডেলিভার্ড' বলে অভিহিত করেছে। এই পদক্ষেপ কেবল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় নীতির প্রমাণ নয়, বরং এটি বিশ্বজুড়ে ভারতের প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করেছে।
জইশ-এ-মোহাম্মদের কুখ্যাত কমান্ডার আব্দুল রউফ আজহার
আব্দুল রউফ আজহার, যিনি জইশ-এ-মোহাম্মদের প্রধান কমান্ডারদের একজন ছিলেন, ২০০২ সালে আমেরিকান সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের হত্যাকাণ্ডের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে পরিচিত। পার্লের হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রোষের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল। আব্দুল রউফ আজহারের বিরুদ্ধে অনেক দেশে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হচ্ছিল।
ভারত জইশ-এ-মোহাম্মদের সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে এবং এবারও ভারত তার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আজহারকে নিহত করেছে। ভারত সরকার এটিকে দেশের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় বলে অভিহিত করেছে।
আমেরিকার সমর্থন: 'জাস্টিস ডেলিভার্ড'
আব্দুল রউফ আজহারের মৃত্যুতে আমেরিকা স্বাগত জানিয়েছে। আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি জালমে খালিলিজাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেছেন, "ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে নিষ্ঠুর সন্ত্রাসী আব্দুল রউফ আজহারকে নিহত করেছে। এটি সেই ব্যক্তিই যিনি ২০০২ সালে ড্যানিয়েল পার্লকে হত্যা করেছিলেন। আজ ন্যায়বিচার হয়েছে। ধন্যবাদ ভারত।"
আমেরিকা এটিকে 'জাস্টিস ডেলিভার্ড' হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং ভারতের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। ড্যানিয়েল পার্লের পরিবার এবং আমেরিকার নাগরিকরাও এই পদক্ষেপের স্বাগত জানিয়েছে, কারণ এটিকে ন্যায়বিচারের প্রাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ড্যানিয়েল পার্ল হত্যাকাণ্ড এবং আব্দুল রউফ আজহারের সংযোগ
২০০২ সালে পাকিস্তানের করাচী শহরে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে অপহরণ করা হয়েছিল, এবং পরে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর, বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিন্দা ও রোষ ছড়িয়ে পড়েছিল। আব্দুল রউফ আজহার এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন, এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকান সংস্থাগুলির তদন্তের তালিকায় ছিলেন।
এখন, এই সন্ত্রাসীর নিহত হওয়ার পর, আমেরিকান নাগরিকদের এবং বিশেষ করে ড্যানিয়েল পার্লের পরিবারের এই মর্মান্তিক ঘটনার সাথে যুক্ত ন্যায়বিচারের আশা পূরণ হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন
ভারত কর্তৃক গৃহীত সামরিক অভিযানের প্রশংসা করেছে আমেরিকার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং কূটনীতিকরা। আমেরিকার একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক এলি কোহেনিম টুইট করে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ট্যাগ করে বলেছেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে ড্যানিয়েল পার্লের জন্য ন্যায়বিচারের অপেক্ষা করছিলাম। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভারত সরকারের কৃতজ্ঞ।"