বিহারের বৌদ্ধ ও ঐতিহাসিক স্থানের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ

বিহারের বৌদ্ধ ও ঐতিহাসিক স্থানের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ
সর্বশেষ আপডেট: 30-05-2025

বিহার সরকার রাজ্যের প্রধান ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পর্যটন স্থানগুলি নতুন রূপে উন্নত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর অধীনে বোধগয়া-গয়া এবং রাজগীর-নালন্দাকে উড়িষ্যার কটক-ভুবনেশ্বরের আদর্শে টুইন সিটি (যুগল শহর) হিসেবে উন্নত করা হবে।

পাটনা: বিহারের আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে সুদৃঢ় স্থান দান করার জন্য রাজ্য সরকার একটি নতুন উদ্যোগে কাজ করছে। এই দিকে বোধগয়া-গয়া এবং রাজগীর-নালন্দাকে টুইন সিটি (যুগল শহর) হিসেবে উন্নত করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই মডেলটি উড়িষ্যার কটক-ভুবনেশ্বরের আদর্শে তৈরি করা হয়েছে, যাতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা একই ভ্রমণে দুটি শহরেরই সহজে দর্শন করতে পারেন।

পর্যটন বিভাগ এই প্রকল্পের জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নির্বাচন করেছে। প্রথমে বোধগয়া ও গয়ার উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এর অধীনে মৌলিক অবকাঠামো, পর্যটন সুবিধা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় স্থানগুলি পরস্পরের সাথে যুক্ত করা হবে, যাতে সামগ্রিক পর্যটন অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হয়।

বোধগয়া-গয়া: ধ্যান, আধ্যাত্ম ও সংস্কৃতির সমারোহ

গয়ার বিষ্ণুপদ মন্দির এবং বোধগয়ার মহাবোধি মন্দিরের মতো প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় স্থানগুলি একটি করিডোরের মাধ্যমে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই করিডোরটি কাশী বিশ্বনাথ মন্দির করিডোরের আদর্শে তৈরি করা হবে, যাতে তীর্থযাত্রীরা আরও ভালো সুবিধা এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। এছাড়াও বোধগয়ায় ‘কলাগ্রাম’ স্থাপন করা হবে। এই সাংস্কৃতিক গ্রামটি কেবল স্থানীয় শিল্পী ও কারিগরদের মঞ্চই দেবে না, বরং পর্যটকদের বিহারের জীবন্ত কলা-সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করবে।

বৌদ্ধ ধর্মকে কেন্দ্র করে বোধগয়ায় একটি ধ্যান ও অভিজ্ঞতা কেন্দ্রও স্থাপন করা হবে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বদেশ দর্শন 2.0 পরিকল্পনার অধীনে প্রায় 165 কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে।

গয়া ঘরানা ও মগধের খাবারের মঞ্চ

গয়ার সংগীত ঐতিহ্যকে জীবন্ত রাখার জন্য ‘গয়া ঘরানা’র উপস্থাপনাকে উৎসাহিত করা হবে। এছাড়াও মগধ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য ফুড কোর্টও তৈরি করা হবে, যেখানে পর্যটকরা বিহারের আসল খাবারের ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন। পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বোধগয়ার কাছে সিলোঞ্জায় বিশ্বের সাত আশ্চর্যের প্রতিরূপ স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্পে প্রায় 14.85 কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই স্থানটি বিশেষ করে তরুণ ও শিশুদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে।

রাজগীর ও নালন্দার উন্নয়নও টুইন সিটি ধারণার অধীনে হবে। একদিকে নালন্দার প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান ও গবেষণার প্রতীক, অন্যদিকে রাজগীর তার প্রাকৃতিক উষ্ণ জলের ঝর্ণা ও বুদ্ধের সাথে জড়িত কাহিনীর জন্য বিখ্যাত। এই দুটি স্থানকে সড়ক, পরিবহন ও যৌথ পর্যটন সুবিধার মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত করা হবে।

Leave a comment