বসপা প্রধান মায়াবতী তাঁর ভাতিজা আকাশ আনন্দ-এর শ্বশুর অশোক সিদ্ধার্থ এবং পূর্ব সাংসদ নিতিন সিংহকে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগে বহিষ্কার করেছেন। মায়াবতী টুইট করে এই তথ্য জানিয়েছেন।
UP News: বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) প্রধান মায়াবতী তাঁর ভাতিজা এবং দলের জাতীয় সমন্বয়ক আকাশ আনন্দ-এর শ্বশুর অশোক সিদ্ধার্থকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। একইসাথে মেরঠের পূর্ব সাংসদ নিতিন সিংহকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। মায়াবতী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ টুইট করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগে বহিষ্কার
বসপার দাবি, দুই নেতাকেই আগে সতর্ক করা হয়েছিল, তারপরেও তারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও দলবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। এই কারণে দল নেতৃত্ব তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মায়াবতী টুইট করে বলেন, "বসপার পক্ষ থেকে বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলির প্রভারী থাকা ডঃ অশোক সিদ্ধার্থ এবং পূর্ব সাংসদ নিতিন সিংহকে সতর্কবার্তার পরেও দলবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার জন্য তৎক্ষণাৎ বহিষ্কার করা হচ্ছে।"
অশোক সিদ্ধার্থ: মায়াবতীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন
অশোক সিদ্ধার্থ বসপার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং মায়াবতীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হতো। তিনি কায়মগঞ্জ (ফারুখাবাদ)-এর বাসিন্দা এবং মায়াবতীর অনুরোধে সরকারি চাকরি ছেড়ে বসপায় যোগ দিয়েছিলেন। সরকারি চাকরির সময় তিনি বামসেফের সাথেও যুক্ত ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ
ডঃ অশোক সিদ্ধার্থ ঝাঁসির মেডিকেল কলেজ থেকে অর্থোমেট্রি ডিপ্লোমা করেছিলেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল ৫ জানুয়ারী ১৯৬৫। সরকারি চাকরির সময় তিনি বামসেফের বিভিন্ন পদে ছিলেন, যার মধ্যে বিধানসভা, জেলা এবং মণ্ডল সভাপতি পদ অন্তর্ভুক্ত। ২০০৭ সালে কান্নৌজ জেলার গুরসাহায়গঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত অবস্থায় তিনি পদত্যাগ করে বসপার দলীয় পতাকা তুলে নেন।
তিনি ২০০৯ এবং ২০১৬ সালে দুবার এমএলসি হিসেবে কাজ করেছেন। বসপায় কানপুর-আগ্রা জোনাল কোঅর্ডিনেটর, জাতীয় সম্পাদক এবং দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্যের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর স্ত্রী সুনীতা সিদ্ধার্থ ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ রাজ্য মহিলা আয়োগের উপাধ্যক্ষ ছিলেন।
দলে উঠেছে প্রশ্ন
অশোক সিদ্ধার্থের বহিষ্কারের পর বসপার অভ্যন্তরে বহু প্রশ্ন উঠেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মায়াবতীর বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে গণ্য হতেন এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। অন্যদিকে, নিতিন সিংহের বহিষ্কার বসপার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
বসপায় কি আবার বড় পরিবর্তন আসবে?
মায়াবতীর এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত করে যে দলে অনুশাসনহীনতা ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সহ্য করা হবে না। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বসপা নেতৃত্ব কোনও ধরণের ঢিলা ছাড়া ব্যবহার করতে চায় না। এই অবস্থায় আগামী দিনগুলিতে বসপায় আরও বড় বড় পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।