অযোধ্যায় রাম মন্দিরে দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা

অযোধ্যায় রাম মন্দিরে দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

গঙ্গা দশমীর দিন অযোধ্যার রাম মন্দির চত্বরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আঠটি দেবতার, রামদরবার সহ, মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই অনুষ্ঠান সকাল ১১:২৫ থেকে ১১:৪০ পর্যন্ত চলেছিল।

রাম মন্দির প্রাণ প্রতিষ্ঠা: গত ৫ জুন, ২০২৫, গঙ্গা দশমীর পবিত্র দিনে অযোধ্যার রাম মন্দির চত্বরে এক বিশাল প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রামদরবার সহ আটটি প্রধান দেববিগ্রহের বিধিপূর্ণ প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই অনুষ্ঠান সকাল ১১:২৫ থেকে ১১:৪০ পর্যন্ত বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাঝে সম্পন্ন হয়।

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাম মন্দিরে অতিরিক্ত দেবতাদের আধ্যাত্মিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে, যা মন্দিরের বৈশিষ্ট্য ও ধর্মীয় মর্যাদাকে আরও সুদৃঢ় করে।

সাত ফুট উঁচু রামদরবারের মূর্তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু

রামদরবারের স্থাপনা এই অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল। রামদরবারের মূর্তি সিংহাসনসহ প্রায় সাত ফুট উঁচু।

  • সিংহাসনের উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন ফুট।
  • সীতা-রাম বিগ্রহের উচ্চতা সাড়ে চার ফুট।
  • সিংহাসনে স্থাপনের পর মোট উচ্চতা প্রায় সাত ফুট হয়।

এছাড়াও, হনুমান ও ভরতের মূর্তি বসা অবস্থানে এবং তাদের উচ্চতা আড়াই ফুট। লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্নের মূর্তি দাঁড়ানো অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছে এবং তাদের উচ্চতা তিন তিন ফুট। এই সম্পূর্ণ রামদরবার ভক্তদের জন্য আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

রামেশ্বরমেরও প্রাণ প্রতিষ্ঠা

রাম মন্দির চত্বরে রামদরবারের সাথে সাথে রামেশ্বরমেরও প্রাণ প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়েছে। রামেশ্বরমের এই স্থাপনা সেই ঐতিহাসিক যোগসূত্রকেও উজ্জ্বল করে তুলেছে, যেখানে প্রভু শ্রীরামের দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ এবং তাঁর ভক্তি-পরম্পরাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিক ভারতের সংমিশ্রণ

এই অনুষ্ঠানটি কেবলমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং এটি সেই সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণেরও প্রতীক, যার অপেক্ষায় ভারত দীর্ঘদিন ধরে ছিল। শতাব্দীর অপেক্ষা ও সংগ্রামের পর অযোধ্যা আবার নিজের গৌরব পেয়ে উঠেছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সকল দেববিগ্রহের অভিষেক করে বিধিপূর্ণ পূজা সম্পন্ন করেছেন। তিনি রামদরবারের মূর্তির আবরণ সরিয়ে এবং তার ভব্য শৃঙ্গার করেছেন। এই উপলক্ষে বিগ্রহগুলিকে আভূষণ ও বস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল, যার ফলে সম্পূর্ণ মন্দির চত্বর অলৌকিক শক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

ধর্মীয় সাধু ও সংগঠনের উপস্থিতি

প্রাণ প্রতিষ্ঠার এই শুভ উপলক্ষে অযোধ্যার ১৯ জন প্রধান সাধু ও ধর্মগুরু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই অনুষ্ঠান ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক সহযোগিতার এক উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

গঙ্গা দশমীর বিশেষ যোগ

গঙ্গা দশমীর দিন এই অনুষ্ঠান আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে কারণ এই দিনটি জ্যোতিষীয় দিক থেকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিনে করা ধর্মীয় কাজের বিশেষ ফল পাওয়া যায়। তাই রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা কেবলমাত্র ধর্মীয় ঐতিহ্যের পালনই নয়, বরং এটি জাতির সাংস্কৃতিক আত্মবোধেরও স্বীকৃতি।

Leave a comment