আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় এমবিবিএস ছাত্রের মৃত্যু: গ্রামে শোকের ছায়া

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় এমবিবিএস ছাত্রের মৃত্যু: গ্রামে শোকের ছায়া
সর্বশেষ আপডেট: 14-06-2025

গুজরাতের আহমেদাবাদে ঘটা ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় রাজস্থানের বারমের জেলার বাসিন্দা এবং এমবিবিএস ছাত্র জয়প্রকাশ (২০) এর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছে। জয়প্রকাশের অকাল মৃত্যুতে তার পরিবার এবং গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বারমের: গুজরাতের আহমেদাবাদে ঘটা ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় রাজস্থানের বারমের জেলার বাসিন্দা এবং এমবিবিএস ছাত্র জয়প্রকাশ (২০) এর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছে। জয়প্রকাশের অকাল মৃত্যুতে তার পরিবার এবং গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন তার দেহ তার পৈতৃক গ্রাম বোর চারণানে পৌঁছায়, তখন সেখানকার পরিবেশ ম্লান হয়ে যায়। হাজার হাজার গ্রামবাসী জয়প্রকাশকে শেষ বিদায় জানাতে ভীড় জমায় এবং করুণ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে।

গ্রামে শোকের ছায়া, সবার মন ভারাক্রান্ত

জয়প্রকাশের পার্থিব দেহ যখন শুক্রবার সন্ধ্যায় তার পৈতৃক গ্রাম বোর চারণানে পৌঁছায়, তখন সেখানকার পরিবেশ শোকের আবরণে ঢেকে যায়। চিৎকার, কান্নাকাটি, অজ্ঞান মা—এই দৃশ্য কাউকেই নাড়া দেয়। গ্রামবাসী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং সহপাঠীসহ হাজার হাজার মানুষ শেষবারের জন্য দেখার জন্য জড়ো হয়।

টিনা ডাবির চোখে ছলছল করে দুঃখ

এই করুণ মুহূর্তের সবচেয়ে মর্মস্পর্শী দৃশ্য তখন দেখা যায় যখন বারমেরের জেলাশাসক টিনা ডাবি নিজেই জয়প্রকাশকে শেষ বিদায় জানাতে আসেন। সাধারণত কঠোর এবং পেশাদার চেহারার জন্য পরিচিত টিনা ডাবি এবারও অনুভূতির ঢেউকে রোখতে পারেননি। তিনি জয়প্রকাশের দেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন এবং কান্নাজড়িত চোখে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। বারবার তার চোখে জল ছলছল করে, যা তিনি বারবার রুমাল দিয়ে মুছে ফেলেন।

বারমেরের পুলিশ অধীক্ষক নরেন্দ্র সিং মীনা শুধুমাত্র সেখানে উপস্থিত ছিলেন না, বরং তিনি শেষযাত্রায় কাঁধও দিয়েছিলেন। প্রশাসনের এই আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল আচরণ মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে। তিনি বলেছেন, জয়প্রকাশ খুবই পরিশ্রমী এবং মেধাবী ছাত্র ছিল। তার মৃত্যু শুধুমাত্র একটি পরিবারের নয়, সমগ্র সমাজের ক্ষতি।

মুখ্যমন্ত্রী পিতার সাথে কথা বলেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন

জয়প্রকাশের পরিবারের দুঃখ কিছুটা কমাতে মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা নিজেই ফোনে তার পিতার সাথে কথা বলেছেন। এই কল এসপি নরেন্দ্র মীনার ফোন থেকে করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং সরকারি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ রাজ্য সরকার পরিবারের পাশে আছে।

জয়প্রকাশ রাজস্থানের একটি সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পরিবার বড় কষ্ট করে পড়াশোনার জন্য ব্যবস্থা করেছিল। সে শুধুমাত্র পড়াশোনায়ই অগ্রণী ছিল না, সামাজিক কাজেও অংশগ্রহণ করত। তার শিক্ষকরা তাকে অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ, নম্র এবং পরিশ্রমী ছাত্র বলে বর্ণনা করেছেন।

শেষকৃত্যের আগে গোটা গ্রামে শ্রদ্ধাঞ্জলি সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে কান্না করে। বিজেপি জেলাধ্যক্ষ অনন্তরাম বিষ্ণোয়ী বলেছেন, জয়প্রকাশের অকাল মৃত্যুতে আমাদের এলাকার উজ্জ্বল তারা নিভে গেছে।

Leave a comment