১৫৬টি ‘প্রচণ্ড’ লাইট কম্ব্যাট হেলিকপ্টার সরবরাহের চুক্তি

১৫৬টি ‘প্রচণ্ড’ লাইট কম্ব্যাট হেলিকপ্টার সরবরাহের চুক্তি
সর্বশেষ আপডেট: 30-03-2025

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) এর সাথে ১৫৬টি প্রচণ্ড লাইট কম্ব্যাট হেলিকপ্টার (LCH) সরবরাহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি বড় ধাপ।

নয়াদিল্লি: ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) এর সাথে ১৫৬টি ‘প্রচণ্ড’ লাইট কম্ব্যাট হেলিকপ্টার (LCH) সরবরাহের জন্য একটি বৃহৎ চুক্তি করেছে। এই অত্যাধুনিক স্বদেশী হেলিকপ্টারগুলির সরবরাহ তিন বছর পর শুরু হবে এবং পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। মোট ৬২,৭০০ কোটি টাকার এই চুক্তিতে ৯০টি হেলিকপ্টার ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং ৬৬টি ভারতীয় বিমানবাহিনী পাবে।

দেশে নির্মিত, বিশ্বে অনন্য

‘প্রচণ্ড’ ভারতের প্রথম স্বদেশী আক্রমণকারী হেলিকপ্টার, যা HAL ডিজাইন এবং উন্নয়ন করেছে। এর ওজন ৫.৮ টন, যা এটিকে হালকা এবং দ্রুতগতি সম্পন্ন করে তোলে। এই হেলিকপ্টার সিয়াচিনের মতো উঁচু এলাকায়ও পুরোপুরি যুদ্ধক্ষমতার সাথে কাজ করতে সক্ষম। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এটি ২১,০০০ ফুট উচ্চতায়ও অস্ত্র ও জ্বালানীর সাথে উড়তে পারে।

প্রচণ্ড হেলিকপ্টারে পাইলট হেলমেট মাউন্টেড সাইট, ইনফ্রারেড সাইটিং সিস্টেম এবং রাডার-লেজার মিসাইল ওয়ার্নিং সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর দেহ ও রটরগুলিতে গুলীর খুব একটা প্রভাব পড়বে না। এছাড়াও, শত্রুর রাডারের আওতা থেকে বাইরে থাকার ডিজাইন এটিকে আরও মারাত্মক করে তোলে। হেলিকপ্টারটি দিন-রাত, যে কোনও আবহাওয়ায় কাজ করার ক্ষমতা রাখে।

সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর জন্য আলাদা সংস্করণ

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘প্রচণ্ড’ হেলিকপ্টারে ২০ মিমি গান, ৭০ মিমি রকেট এবং ‘হেলিনা’ বিরোধী ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ফ্রান্সের ‘মিষ্ট্রাল-২’ মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছে। উভয় সংস্করণই উচ্চ উচ্চতায় কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কর্গিল যুদ্ধের সময় লাইট কম্ব্যাট হেলিকপ্টারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল। ‘প্রচণ্ড’ বিশ্বের একমাত্র এমন আক্রমণকারী হেলিকপ্টার যা ৫,০০০ মিটার উচ্চতায় অস্ত্র ও জ্বালানীর সাথে উড়তে পারে। এর সর্বোচ্চ গতি ৩৩০ কিমি/ঘণ্টা এবং যুদ্ধক্ষেত্র ব্যাসার্ধ ৫০০ কিমি।

‘প্রচণ্ড’ বিরোধী পদাতিক, বিরোধী ট্যাঙ্ক, বিরোধী UAV এবং প্রতি-বিদ্রোহী অভিযানে ব্যবহার করা যায়। এই হেলিকপ্টার কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানেও সহায়ক হবে। ‘প্রচণ্ড’ এর স্থাপন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর আঘাত হানার ক্ষমতায় ব্যাপক বৃদ্ধি করবে। শত্রুর চমৎকার এই হেলিকপ্টার ভারতের কৌশলগত স্বার্থকে শক্তিশালী করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি ভারতের সামরিক শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

Leave a comment