জিও এবং স্পেসএক্সের অংশীদারিত্ব: ভারতে স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেটের আগমন

🎧 Listen in Audio
0:00

এয়ারটেলের পর এবার জিওও এলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্সের সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। এই সহযোগিতার আওতায় জিও, স্টারলিঙ্কের সাহায্যে ভারতে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করার পরিকল্পনা করছে। তবে, এই অংশীদারিত্ব তখনই কার্যকর হবে যখন স্টারলিঙ্ক দেশে তার সেবা চালু করার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাবে। এর আগে, এয়ারটেলও স্টারলিঙ্কের সাথে তাদের সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছিল।

জিও এবং স্পেসএক্সের মধ্যে বৃহৎ চুক্তি

ভারতীয় টেলিযোগাযোগ খাতে শীঘ্রই বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এয়ারটেলের পর এবার জিওও এলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্সের সাথে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে। এই চুক্তির আওতায় জিও, স্টারলিঙ্কের সাহায্যে ভারতে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করবে। তবে, এই অংশীদারিত্ব তখনই কার্যকর হবে যখন স্টারলিঙ্ককে ভারতে তার সেবা চালু করার অনুমতি দেওয়া হবে। এর আগে, ভারতী এয়ারটেলও স্টারলিঙ্কের সাথে চুক্তি করেছিল, যা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে ভারতে স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শীঘ্রই আগমন করতে চলেছে।

জিওর স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে স্টারলিঙ্ক সেবা

জিও তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে যে স্টারলিঙ্কের সেবা এবং ডিভাইস জিওর খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। কোম্পানি স্টারলিঙ্ক ডিভাইসের বিক্রয়ের জন্যও পরিকল্পনা করছে, যাতে গ্রাহকরা সহজেই এই সেবার সুবিধা নিতে পারে। পাশাপাশি, জিও এবং স্পেসএক্স মিলে স্টারলিঙ্কের ইনস্টলেশন এবং অ্যাক্টিভেশন প্রক্রিয়াকে সহজতর করার উপরও কাজ করছে, যাতে ব্যবহারকারীরা কোনও সমস্যা ছাড়াই উচ্চ-গতির ইন্টারনেট পেতে পারে।

জিওর সিইও ম্যাথু ওমেন এই অংশীদারিত্বকে ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন,
"ভারতের প্রতিটি নাগরিককে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং দ্রুত ইন্টারনেট দেওয়া আমাদের প্রধান লক্ষ্য। স্পেসএক্সের সাথে এই অংশীদারিত্ব আমাদের ডিজিটাল মিশনকে আরও শক্তিশালী করবে।"

স্টারলিঙ্ক কিভাবে ভারতের ডিজিটাল অবকাঠামোকে পরিবর্তন করবে?

Reliance Jio ইতোমধ্যেই ভারতের অন্যতম বৃহত্তম মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর। অন্যদিকে, স্টারলিঙ্ক তার লো আর্থ অর্বিট (LEO) স্যাটেলাইট কনস্টেলেশন প্রযুক্তির সাহায্যে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি ঐতিহ্যগত নেটওয়ার্কের তুলনায় দূরবর্তী এলাকায়ও সহজেই পৌঁছাতে পারে।

জিও এবং স্টারলিঙ্কের এই অংশীদারিত্ব দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে। এর সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভারতের গ্রামীণ এবং দুর্গম এলাকাগুলি পাবে, যেখানে এখনও পর্যন্ত উচ্চ-গতির ইন্টারনেটের ব্যবহার অত্যন্ত সীমিত।

স্টারলিঙ্কের সাথে যুক্ত হয়ে জিও ব্যবহারকারীরা কী পাবে?

জিও তাদের বিবৃতিতে এটাও বলেছে যে স্পেসএক্সের সহযোগিতায় ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়, স্টার্টআপ, স্কুল এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হবে। জিওর গ্রাহকরা এখন স্টারলিঙ্কের সেবার সুবিধা জিও এবং রিলায়েন্সের স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিতে পারবেন। এছাড়াও, জিও এবং স্পেসএক্স একসাথে এটা পরীক্ষা করার চেষ্টা করবে যে কিভাবে স্টারলিঙ্ক জিওর বর্তমান সেবাগুলিকে আরও উন্নত করতে পারে। এর অর্থ হল জিও AirFiber এবং JioFiber এর মতো সেবা স্টারলিঙ্কের সাথে মিলে আরও কার্যকর হতে পারে।

জিও-স্টারলিঙ্ক অংশীদারিত্বের ভারতের উপর কী প্রভাব পড়বে?

জিও এবং স্টারলিঙ্কের এই অংশীদারিত্ব ভারতের সেসব এলাকায় উচ্চ-গতির এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ব্রডব্যান্ড সেবা নিয়ে আসার উপর কেন্দ্রীভূত, যেখানে ঐতিহ্যগত নেটওয়ার্ক পৌঁছাতে পারেনি। এর ফলে ভারতে ডিজিটাল সেবার মান এবং ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা উপলব্ধ করা যাবে। জিও এবং স্পেসএক্সের এই অংশীদারিত্ব থেকে আশা করা হচ্ছে যে ভারতে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় নতুন এক বিপ্লব আসবে এবং ডিজিটাল সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে। এখন দেখার বিষয় হল ভারত সরকার কখন স্টারলিঙ্ককে অনুমতি দেবে এবং এই সেবা কখন ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য উপলব্ধ হবে।

Leave a comment