খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস ২০২৫: ই-স্পোর্টসকে দেওয়া হলো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারতে ক্রীড়ার জগৎ এখন এক নতুন মোড়ে পৌঁছেছে, যেখানে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়ার পাশাপাশি ই-স্পোর্টসও স্বীকৃতি পাচ্ছে। প্রথমবারের মতো খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস (KIYG) ২০২৫-এ ই-স্পোর্টসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ডিজিটাল খেলার ক্ষেত্রে ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

স্পোর্টস নিউজ: ই-স্পোর্টস নিয়ে ভারতে একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে এটিকে প্রথমবারের জন্য খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস (KIYG) ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই উদ্যোগের অধীনে খেলোয়াড়রা 'বিজিএমআই' (BGMI), 'স্ট্রিট ফাইটার 6', 'ই-ফুটবল' এবং দাবা যেমন গেমসে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পাচ্ছে। ই-স্পোর্টস শিল্পের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপটি এটিকে মূলধারার খেলার শ্রেণীতে আনার দিকে একটি বড় পরিবর্তন।

ই-স্পোর্টস কেবলমাত্র যুবসমাজের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে না, বরং এখন এটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃতি মিলছে। ২০২৬ এশিয়ান গেমসে এটি একটি আনুষ্ঠানিক পদক ইভেন্ট হবে এবং ২০২৭ সালে প্রথম অলিম্পিক ই-স্পোর্টস গেম অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

কোন কোন ই-স্পোর্টস অন্তর্ভুক্ত হবে?

৬ এবং ৭ মে পটনায় পাটলিপুত্র ক্রীড়া কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই আয়োজনে চারটি প্রধান ডিজিটাল খেলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে:

  • ব্যাটলগ্রাউন্ড মোবাইল ইন্ডিয়া (BGMI)
  • স্ট্রিট ফাইটার 6
  • দাবা (ডিজিটাল ফর্ম)
  • ই-ফুটবল

এই প্রতিযোগিতাগুলি মোবাইল এবং কনসোল উভয় মাধ্যমেই অনুষ্ঠিত হবে। ভারতে অত্যন্ত জনপ্রিয় BGMI-কে অন্তর্ভুক্ত করা যুবসমাজের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা, অন্যদিকে দাবাকে ডিজিটাল ফর্মে অন্তর্ভুক্ত করা ঐতিহ্যবাহী চিন্তাধারা এবং প্রযুক্তির একটি আকর্ষণীয় মেলবন্ধন।

কেন বিশেষ এই সিদ্ধান্ত?

এটি প্রথমবারের মতো যখন ভারত সরকার প্রায়োজিত কোনও বৃহৎ ক্রীড়া মহাকুম্ভে ই-স্পোর্টসকে স্থান দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই পদক্ষেপটিকে ই-স্পোর্টসের জন্য "মেইনস্ট্রিম এন্ট্রি" হিসেবে দেখছেন। বিগত কয়েক বছরে ভারতে অনলাইন গেমিং এবং ই-স্পোর্টসের প্রবণতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯-এর পরে যুবসমাজের এর মধ্যে অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

নোডউইন গেমিং-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা অক্ষত রাঠির মতে, খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস ২০২৫-এ ই-স্পোর্টসের অংশগ্রহণ এটা দেখায় যে এখন ডিজিটাল গেমিংকেও ঐতিহ্যবাহী খেলার সমান মঞ্চ দেওয়া হচ্ছে। এই পরিবর্তন ভারতে স্থানীয় পর্যায়ে ই-স্পোর্টসকে একটি নতুন দিক দিবে।

বিহার ই-স্পোর্টসের নতুন রাজধানী

বিহার, যা ঐতিহ্যগতভাবে ক্রিকেট এবং কুস্তি যেমন খেলার জন্য পরিচিত, এখন ডিজিটাল খেলাগুলিও উন্নীত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। KIYG ২০২৫-এ ই-স্পোর্টস আনার আগে, রাজ্যটি বিহার ওপেন ই-স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ইন্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্টের মতো আয়োজন করে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে। এর ফলে অনেক প্রতিভাবান যুব খেলোয়াড় সামনে এসেছে, যারা এখন জাতীয় পর্যায়ে নিজেদের পরিচয় তৈরি করতে পারে।

ই-স্পোর্টসকে এখন কেবলমাত্র একটি শখ নয়, বরং কর্মজীবন হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভারতকে ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসে শক্তিশালী দাবীদার করে তুলতে পারে, যেখানে ই-স্পোর্টসকে আনুষ্ঠানিক পদক ইভেন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

Leave a comment