মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৯ উইকেটে চেন্নাই সুপার কিংসকে ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে ব্যাপক পরাজয়ের মুখে ফেলেছে। এই ম্যাচে মুম্বই দল চমৎকার পারফর্ম্যান্স করে ১৭৭ রানের লক্ষ্য খুব সহজেই অর্জন করেছে।
খেলাধুলার খবর: আইপিএল ২০২৫-এর মৌসুম যতই শেষের দিকে এগোচ্ছে, ততই প্রতিটি দলের প্লে-অফে যাওয়ার আশা এবং সমীকরণ জটিল হয়ে উঠছে। এইবার ফ্যানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)-এর পারফর্ম্যান্স থেকে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দল CSK এই মৌসুমে সংগ্রাম করছে। ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ৯ উইকেটে ব্যাপক পরাজয়ের পর CSK-এর প্লে-অফের পথ কঠিন হয়েছে, তবে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি।
এখন পর্যন্ত CSK-এর পারফর্ম্যান্স কেমন?
CSK এখন পর্যন্ত মোট ৮টি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে মাত্র ২টিতে জয় পেয়েছে এবং ৬টিতে পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। দলটি বর্তমানে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে এবং তাদের নেট রানরেট -১.৩৯২, যা যেকোনো দলের জন্য উদ্বেগের বৃহত্তম কারণ। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে রোহিত শর্মা (৭৬*) এবং সূর্যকুমার যাদব (৬৮*) -এর বিস্ফোরক ইনিংস CSK-এর বোলিং আক্রমণকে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দিয়েছে। ১৭৭ রানের লক্ষ্য মুম্বই মাত্র ১৫.৪ ওভারে অর্জন করেছে, যার ফলে CSK-এর নেট রানরেট আরও নেমে গেছে।
এখনও কি প্লে-অফের আশা রয়েছে?
হ্যাঁ, কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। CSK-এর এখনও প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকার সুযোগ রয়েছে। এর জন্য তাদের বাকি ৬টি ম্যাচ জিততে হবে, যার ফলে তারা ১৬ পয়েন্টে পৌঁছাতে পারবে। তবে, এটিও নিশ্চিত করে না যে CSK প্লে-অফে যাবে, কারণ অন্যান্য দলের পারফর্ম্যান্সের উপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে।
CSK-এর প্লে-অফ সমীকরণ
১. বাকি ৬টি ম্যাচ জেতা অপরিহার্য
যদি CSK তাদের বাকি ৬টি ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে তাদের ১৬ পয়েন্ট হবে। সাধারণত আইপিএলে ১৬ পয়েন্ট প্লে-অফের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করা হয়, তবে এইবার প্রতিযোগিতা খুবই তীব্র, তাই নেট রানরেটও একটি বড় ফ্যাক্টর হবে।
২. ১৪ পয়েন্ট নিয়েও সুযোগ থাকতে পারে
যদি CSK তাদের ছয়টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি জিতে এবং একটিতে হারে, তাহলে তাদের ১৪ পয়েন্ট হবে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের অন্যান্য দলের পরাজয়ের অপেক্ষা করতে হবে এবং খুব শক্তিশালী নেট রানরেটও বজায় রাখতে হবে।
৩. নেট রানরেট উন্নত করতে হবে
বর্তমান -১.৩৯২ নেট রানরেট উন্নত করা CSK-এর জন্য সবচেয়ে বড় কাজ হবে। আগামী ম্যাচগুলিতে তাদের বড় ব্যবধানে জয় অর্জন করতে হবে, যাতে তাদের রানরেট ইতিবাচক হতে পারে এবং অন্যান্য দলের তুলনায় আরও ভাল অবস্থানে আসতে পারে।
অন্যান্য দলের অবস্থাও প্রভাব ফেলবে
এখন পর্যন্ত টপ-৫-এ থাকা সকল দল ১০-১০ পয়েন্ট নিয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। গুজরাট টাইটান্স, দিল্লি ক্যাপিটালস, RCB, পাঞ্জাব কিংস এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস বর্তমানে প্লে-অফের লড়াইয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তাই এদের মধ্যে এক বা দুই দলকে ক্রমাগত পরাজয় স্বীকার করতে হবে, যাতে প্লে-অফের এক বা দুই আসন খালি থাকে।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৮ পয়েন্ট নিয়ে ফিরে আসার ফলে CSK-এর পথ আরও কঠিন হয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্স ৬ পয়েন্ট নিয়ে CSK-এর চেয়ে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে, যখন রাজস্থান এবং হায়দ্রাবাদও ৪-৪ পয়েন্ট নিয়ে পিছনে রয়েছে কিন্তু তাদের নেট রানরেট চেন্নাইয়ের চেয়ে ভালো।
কৌশল কী হতে পারে?
- ওপেনিং জুটিকে শক্তিশালী করা: CSK-এর ব্যাটিংয়ের শুরু ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে। তাদের একটি স্থায়ী ওপেনিং জুটির প্রয়োজন, যারা দ্রুত রান করতে পারে এবং দলকে দৃঢ় শুরু দিতে পারে।
- বোলিংয়ে বৈচিত্র্য: ডেথ ওভারের বোলিং এবং স্পিন বিভাগে দুর্বলতা এই মৌসুমে CSK-এর পরাজয়ের একটি বড় কারণ হয়েছে। তাদের যুব এবং অভিজ্ঞ বোলারদের সমন্বয়ে আস্থা রাখতে হবে।
- অধিনায়কত্বে সাহসী সিদ্ধান্ত: অধিনায়ককে এখন ঝুঁকি নেওয়া থেকে ভয় পেতে নেই। চাই তা ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন হোক বা বোলিংয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
- প্রতিটি ম্যাচকে করো-মরো মনে করে খেলা: এখন CSK-এর আর কোনো ভুলের সুযোগ নেই। দলকে প্রতিটি ম্যাচ জিততেই হবে এবং বড় ব্যবধানে জয় অর্জনও অপরিহার্য।
যদিও মহেন্দ্র সিং ধোনি এই মৌসুমে খেলোয়াড় হিসাবে খেলছেন না, তবে দলের মেন্টর বা অন্য কোনও ভূমিকায় তাঁর উপস্থিতি দলকে কৌশলগত শক্তি দিতে পারে। প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য অভিজ্ঞতা এবং আত্মবিশ্বাস উভয়ই প্রয়োজন, যা মাঈ-এর ছায়া থেকে পাওয়া যেতে পারে।
