প্রথম মেয়াদে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে যেতে হলেও, এখন ট্রাম্প নিজের ইচ্ছামতো ফেডারেল সরকারকে রূপান্তর করার উপর মনোযোগ দিচ্ছেন। তবে, আমেরিকার সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও কিছু নাম অনুমোদনে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন তিনি।
মার্কিন নির্বাচন: ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমেরিকার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, তার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে নিয়োগের ঘোষণা করছেন। এই নিয়োগগুলিতে তার প্রথম মেয়াদ থেকে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশেষ করে তার কৌশলগত দিকে, যা এখন শীর্ষ পদে আরও বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগের উপর কেন্দ্রীভূত। তিনি সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে ২৭ বছর বয়সী ক্যারোলিন লেভিটের নিয়োগের ঘোষণা করেছেন, যিনি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে জাতীয় প্রেস সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছেন।
ট্রাম্পের মেয়াদ
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের প্রারম্ভিক পর্যায়ে তাকে প্রশাসনিক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, কিন্তু এখন তার ফোকাস নিজের চিত্র ও আদর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফেডারেল সরকারকে পরিবর্তন করার উপর। ট্রাম্প সম্প্রতি সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও কিছু নাম অনুমোদন করতে সংগ্রাম করার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন, যা তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
ক্যাবিনেটের জন্য মনোনীত ব্যক্তি
বিদেশমন্ত্রী: মার্কো রুবিও
ট্রাম্প ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওকে বিদেশমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। রুবিও চীন, কিউবা এবং ইরানের মতো দেশগুলির সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে গভীর বোঝাপড়া রাখেন এবং গত বছর রিপাবলিকান পার্টির হয়ে উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী ছিলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল: ম্যাট গেটজ
ট্রাম্প ফ্লোরিডার প্রতিনিধি সভার সদস্য ম্যাট গেটজকে তার অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত করেছেন। গেটজ ট্রাম্পের বিশ্বস্ত সমর্থক ছিলেন এবং এখন তিনি দেশের শীর্ষ অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক: তুলসী গাবারড
ট্রাম্প হাওয়াইয়ের প্রাক্তন সাংসদ তুলসী গাবারডকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের পদে নিযুক্ত করেছেন। ডেমোক্র্যাট পার্টি ছেড়ে ট্রাম্পের সমর্থন করেছিলেন গাবারড এবং তাঁর সাথে নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ছিলেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী: পিট হেগসেথ
ট্রাম্প ফক্স নিউজের উপস্থাপক পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। হেগসেথ ও ট্রাম্পের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে এবং তিনি ট্রাম্পের অনেক অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন।
গৃহমন্ত্রী: ক্রিস্টি নোয়েম
দক্ষিণ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমকে গৃহমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় অন্যান্য রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও তিনি তার রাজ্যকে উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সিআইএ পরিচালক: জন র্যাটক্লিফ
জন র্যাটক্লিফকে সিআইএ পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন এবং এখন সিআইএ-র নেতৃত্ব দেবেন।
স্বাস্থ্য ও মানব সেবা মন্ত্রী: রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র
ট্রাম্প রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রকে স্বাস্থ্য ও মানব সেবা মন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। কেনেডি ডেমোক্র্যাট পার্টি ছেড়ে ট্রাম্পের সমর্থন করেছিলেন।
অভ্যন্তরীণ সচিব: ডগ বার্গাম
উত্তর ডাকোটার গভর্নর ডগ বার্গামকে অভ্যন্তরীণ সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। বার্গাম আগে রিপাবলিকান পার্টি থেকে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু পরে তিনি ট্রাম্পের সমর্থন করেছিলেন।
প্রধান কর্মকর্তা: সুস উইলস
সুস উইলসকে ট্রাম্পের ২০২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রচারাভিযানের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও ব্যবস্থাপক নিযুক্ত করা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা: মাইক ওয়াল্টজ
মাইক ওয়াল্টজকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ওয়াল্টজ প্রাক্তন আর্মি গ্রিন বেরেট এবং চীনের প্রতি তাঁর কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত।
সীমান্ত কর্মকর্তা (বর্ডার জার): টম হোম্যান
টম হোম্যানকে সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের প্রশাসনে আগেও তিনি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বিশেষ দূত: স্টিভেন উইটকফ
স্টিভেন উইটকফকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের বিশেষ দূত নিযুক্ত করা হয়েছে। উইটকফ ও ট্রাম্পের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে এবং তিনি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারেও জড়িত ছিলেন।