কশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার বৃদ্ধি নিয়ে আমেরিকা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা উভয় দেশকে শান্তি বজায় রাখার এবং যৌথভাবে সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে।
আমেরিকা: কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই হামলা পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল, যার পর ভারত সন্ত্রাসবাদী ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান এটিকে অস্বীকার করে ভারতকে হামলার হুমকি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকার সরকার উভয় দেশকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারত সরকার সেনাকে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাধীনতা দিয়েছে, যার ফলে সেনাবাহিনীকে হামলার পদ্ধতি, লক্ষ্য এবং সময় নির্ধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত একটি high-level meeting-এর পর নেওয়া হয়েছে, যেখানে রক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং তিনটি সেনাবাহিনীর প্রধান উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই পদক্ষেপ স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে ভারত কোনো পরিস্থিতিতেই তার নিরাপত্তা স্বার্থের সাথে আপোষ করবে না।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এই কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, ভারত এই হামলার দোষী ও তাদের সমর্থকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর বার্তা ছিল ভারত সন্ত্রাসবাদী ও তাদের সমর্থনকারী দেশের কাছে ক্ষমা চাইবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এই বক্তব্য স্পষ্টতই পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করে, কারণ এই ধরণের হামলা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী দ্বারা সংঘটিত হয়।
আমেরিকার উদ্বেগ ও শান্তির আহ্বান
এদিকে, আমেরিকা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় দেশকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে, আমেরিকা ভারত ও পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ রেখেছে এবং চায় উভয় দেশ উত্তেজনা বাড়ানোর পরিবর্তে কূটনৈতিক পন্থায় সমাধান খুঁজে বের করুক। আমেরিকা এই বিষয়ে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলার পরিকল্পনা করেছে যাতে পরিস্থিতি আরও জটিল না হয়।
আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন যে, আমেরিকা উভয় দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, "আমরা উভয় দেশের সাথে যোগাযোগ করছি এবং তাদের পরিস্থিতি আরও জটিল না করার জন্য বলছি।" এটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে আমেরিকা চায় ভারত ও পাকিস্তান এই বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করুক এবং এমন কোন পদক্ষেপ না নিক যার ফলে আঞ্চলিক শান্তি আরও বিপন্ন হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ট্রাম্পের আলোচনা
পাহলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী মোদী রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন ভারত এই হামলার অপরাধী ও তাদের সমর্থকদের কখনোই ক্ষমা করবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভারত যারা এই হামলা চালিয়েছে এবং যারা এটিকে সমর্থন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তার এই বক্তব্য পাকিস্তানকে সরাসরি লক্ষ্য করে, কারণ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভারতের কর্মপন্থার মূল উদ্দেশ্য হল এই গোষ্ঠীগুলিকে নির্মূল করা।
আমেরিকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের ইচ্ছা
আমেরিকা বলেছে যে, তারা এই বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে চায় যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনা কমানো যায়। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে, তারা ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করবে এবং তাদের শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেবে। এছাড়াও, আমেরিকা অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের কাছেও আহ্বান জানিয়েছে যাতে তারা ভারত ও পাকিস্তানকে এই সংঘাত এড়িয়ে চলার জন্য উৎসাহিত করে।