ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫-এ ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কে নতুন কিছু বিধান যুক্ত করা হয়েছে। দেশে ওয়াকফ বোর্ডের কাছে ৩৯ লক্ষ একর জমি রয়েছে, যা নিয়ে রাজনীতি তীব্র হয়ে উঠেছে এবং বিরোধী দল আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
Waqf Amendment Bill 2025: সম্প্রতি সংসদের উভয় কক্ষ থেকে পাশ হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫ দেশে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দল একে মুসলমানদের জমি দখলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছে, অন্যদিকে সরকার দাবি করছে এটি স্বচ্ছতা ও আইনি স্পষ্টতার জন্য। বিরোধী দল কংগ্রেস ও ডিএমকে এই বিলকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
দেশে ওয়াকফের জমি: চমকপ্রদ তথ্য
গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ওয়াকফ বোর্ডগুলির কাছে ৩৯ লক্ষ একর জমি রয়েছে। এটি দেশের মোট ভৌগোলিক এলাকার প্রায় ৪.৮%। তুলনা করলে দেখা যায়, এটি প্রতিরক্ষা বাহিনী (১৭.৯৯ লক্ষ একর) ও রেলওয়ে (১২.১১ লক্ষ একর)-এর মোট জমি (৩০ লক্ষ একর) থেকেও বেশি।
১৩টি বৃহৎ শহর মিলিয়েও ওয়াকফ ভূমির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে না
ভারতের ১৩টি প্রধান শহর – যেমন দিল্লি (৩.৬ লক্ষ একর), মুম্বাই (১.৫ লক্ষ একর), বেঙ্গালুরু, কলকাতা, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদ – এর মোট আয়তন প্রায় ১৩.৭৮ লক্ষ একর। অথচ কেবলমাত্র ওয়াকফ বোর্ডগুলির কাছে রয়েছে ৩৯ লক্ষ একর জমি। এটি দেশের নগর উন্নয়নের দিক থেকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
কীভাবে ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা করা হয়?
ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ‘মুতওয়াল্লি’ নামক ব্যক্তি করেন, যিনি এই সম্পত্তির আর্থিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন। ভারতে ৩২টি রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে, যাদের উপর কেন্দ্রীয় ওয়াকফ পরিষদ কাজ করে এবং নীতি নির্ধারণে পরামর্শ দেয়। কিন্তু বহু বছর ধরে এই ব্যবস্থা নিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে প্রশ্ন উঠেছে।
ধারা ৪০ নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতর্ক
ওয়াকফ আইন ১৯৯৫-এর ধারা ৪০ অনুযায়ী ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অধিকার ছিল, অর্থাৎ তা যেকোনো জমিকে ওয়াকফ ঘোষণা করতে পারত। সরকার ২০২৫-এর সংশোধনী বিলে এই ধারাটি বাদ দিয়েছে। মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এই বিধানকে "অত্যন্ত কঠোর ও मनमानी" বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এর ফলে ব্যক্তিগত সম্পত্তিও ওয়াকফ ঘোষণা করা হত।
বিরোধী দলের অভিযোগ
শিবসেনা (ইউবিটি)-এর নেতা সংজয় রাউত সংসদে বলেছেন, এই বিল মুসলমানদের কল্যাণের জন্য নয়, বরং ওয়াকফের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে। তিনি সরকারের উপর সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার যখনই কোনো জমি দেখে, তখনই তা দখল করার পরিকল্পনা করে।