রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়, বাসে সোনম উজালার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নম্বর টাইপ করে ডিলিট করে দিল। নেপাল পালানোর আশঙ্কা। স্টেশনে দুই সন্দেহভাজন যুবকও ছিল সাথে।
Sonam Raghuvanshi: রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডে প্রতিদিনই নতুন মোড় সামনে আসছে। এবার আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে, যেখানে গাজীপুরের ছাত্রী উজ্জ্বলা যাদব দাবি করেছেন যে, তিনি আসামী সোনম রঘুবংশীর সাথে ৮ই জুন রাতে বারাণসী থেকে গাজীপুর পর্যন্ত রোডওয়েজ বাসে যাত্রা করেছিলেন। এই সময় সোনম উজ্জ্বলার কাছ থেকে মোবাইল চেয়েছিল, একটি নম্বর টাইপ করেছিল কিন্তু ডায়াল না করেই তা অবিলম্বে মুছে ফেলেছিল। এই ঘটনা এখন তদন্তের অংশ হতে পারে।
সোনমকে গাজীপুর নয়, গোরখপুর যেতে হবে
উজ্জ্বলা যাদব জানিয়েছেন যে, তিনি সোনমকে প্রথমবার বারাণসী ক্যান্ট স্টেশনে দুই যুবকের সাথে দেখেছিলেন। সেখানে সে ট্রেনের তথ্য নিয়েছিল। উজ্জ্বলা জানিয়েছেন যে, তিনি সোনমকে বলেছিলেন যে গোরখপুরের ট্রেন ভোর তিনটায় আসবে, কিন্তু যদি সে চায় তাহলে রোডওয়েজ বাস স্টেশন থেকে বাস ধরতে পারে। সোনম বাসের বিকল্প বেছে নিয়েছিল কারণ তাকে অপেক্ষা করা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়নি।
মুখ ঢেকে ছিল সোনম, বাসে ছিল অস্থিরতা
বারাণসী থেকে বাসে উঠার সময় সোনম তার মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। উজ্জ্বলা জানিয়েছেন যে, বাস ছাড়ার পর সোনম পানি চেয়েছিল এবং মুখ ধুয়েছিল, তখন গিয়ে তার মুখ ঠিক করে দেখা গিয়েছিল। প্রথমে সে একজন অচেনা যুবকের পাশে বসেছিল, যার কাছ থেকে সে মোবাইল চেয়েছিল, কিন্তু যুবকটি অস্বীকার করে সিট বদলে নিয়েছিল। এর পর উজ্জ্বলা সেই সিটে এসে সোনমের পাশে বসেছিল।
সোনমের আচরণ ছিল অস্বাভাবিক
বাসে যাত্রাকালীন সোনম বারবার গোরখপুরের দূরত্ব এবং সেখানে পৌঁছানোর সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল। তার অস্থিরতা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। উজ্জ্বলা এও জানিয়েছেন যে, যখন সে মোবাইলে রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত খবর এবং ভিডিও দেখছিল, তখন সোনম ঘাবড়ে গিয়ে বলেছিল যে এসব দেখো না। এরপরই সোনম উজ্জ্বলার কাছ থেকে মোবাইল ফোন চেয়েছিল, তাতে একটি নম্বর টাইপ করেছিল কিন্তু ডায়াল করেনি এবং অবিলম্বে তা ডিলিট করে দিয়েছিল। এরপর সে মোবাইল ফিরিয়ে দিয়েছিল।
পরদিন উজ্জ্বলা সোনমকে চিনতে পারে
পরদিন সকালে উজ্জ্বলা যখন তার গ্রাম নাসিরপুরে পৌঁছে, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সোনমের ছবি দেখে চমকে গিয়েছিল। সে অবিলম্বে গাজীপুরের নন্দনজঞ্জ থানাকে এই বিষয়ে অবগত করে এবং তারপর রাজা রঘুবংশীর ভাই সচিন রঘুবংশীর সাথে যোগাযোগ করে। সচিন তাকে চার আসামীর ছবি পাঠিয়েছিল, কিন্তু উজ্জ্বলা জানিয়েছেন যে, যাদেরকে সে স্টেশনে সোনমের সাথে দেখেছিল, তারা সেই ছবিতে ছিল না।
নেপাল পালানোর চেষ্টার আশঙ্কা
মনে করা হচ্ছে যে, সোনম গোরখপুরের পথ দিয়ে নেপাল পালানোর পরিকল্পনা করেছিল। প্রথমে সে ট্রেনে যাওয়ার কথা ভেবেছিল, কিন্তু সময় বেশি লাগার কারণে সে বাসের বিকল্প বেছে নিয়েছিল। গোরখপুর নেপাল সীমান্তের অত্যন্ত কাছে এবং সেখান থেকে সীমান্ত পারাপার করা তুলনামূলকভাবে সহজ। এই কারণে নেপাল পালানোর আশঙ্কা উপেক্ষা করা যায় না।
সে রহস্যময় নম্বরটি কার ছিল?
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, সোনম উজ্জ্বলার ফোনে যে নম্বরটি টাইপ করেছিল, তা কার ছিল? সে নম্বরটি কি কোন সহায়ক বা ষড়যন্ত্রকারীর ছিল? কি তা নেপালের কোন যোগাযোগের সাথে সম্পর্কিত ছিল? তদন্তকারী সংস্থা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
স্টেশনে উপস্থিত দুই যুবক কারা ছিল?
উজ্জ্বলার দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী, সোনম স্টেশনে দুই যুবকের সাথে ছিল। তাদের পরিচয় এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, কি সেই যুবকরাও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল নাকি সোনমকে পালানোতে সাহায্য করছিল?
পুলিশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত উজ্জ্বলা
উজ্জ্বলা যাদব স্পষ্ট করে বলেছেন যে, সে এই বিষয়ে পুলিশকে পুরোপুরি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সে যা কিছু দেখেছে এবং অনুভব করেছে, তা সব শেয়ার করার জন্য সে প্রস্তুত। উজ্জ্বলা চায় যে, রাজা রঘুবংশীকে ন্যায়বিচার পাওয়া যাক এবং যারা দোষী তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।