প্রধানমন্ত্রী মোদীর ওয়াত ফো মন্দির ভ্রমণ

🎧 Listen in Audio
0:00

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অবস্থিত ওয়াত ফো মন্দির কেবলমাত্র স্থাপত্যকলার অসাধারণ নিদর্শন নয়, বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানও। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঐতিহাসিক মন্দিরটি পরিদর্শন করেছেন।

বৌদ্ধ ওয়াত ফো মন্দির: ওয়াত ফো মন্দির, যাকে ওয়াত ফ্রা চেতুপনও বলা হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অবস্থিত একটি অত্যন্ত বিখ্যাত ও পবিত্র বৌদ্ধ মন্দির। এই মন্দির বিশেষ করে এর বিশাল শায়িত বুদ্ধ (Reclining Buddha) প্রতিমার জন্য পরিচিত, যা প্রায় ৪৬ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার উঁচু। এই প্রতিমা নির্বাণের মুদ্রায় ভগবান বুদ্ধকে চিত্রিত করে এবং এটি সোনার আস্তরণ দিয়ে সজ্জিত।

ওয়াত ফো মন্দির কেবলমাত্র ধর্মীয় আস্থার কেন্দ্র নয়, থাইল্যান্ডে ঐতিহ্যবাহী থাই চিকিৎসা ও ম্যাসাজেরও এটি প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। এখানে থাই ম্যাসাজের শিক্ষা প্রদানকারী সবচেয়ে পুরনো প্রতিষ্ঠানটিও অবস্থিত।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা

থাইল্যান্ড সফরকালে প্রধানমন্ত্রী মোদী ওয়াত ফো মন্দিরে গিয়ে ভগবান বুদ্ধের শায়িত রূপের দর্শন করেছেন এবং পূজা-অর্চনা করেছেন। এ সময় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রত্যুৎপন্ন শিনাওয়াত্রাও তার সাথে উপস্থিত ছিলেন। মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী মোদী বর্ষীয়ান বৌদ্ধ ভিক্ষুদের 'সংঘদান' অর্পণ করেছেন, যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যে উচ্চ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

ওয়াত ফো মন্দিরের বিশেষত্ব কি?

ওয়াত ফো, যাকে স্থানীয় ভাষায় "ওয়াত ফ্রা চেতুফোন বিমোনমঙ্গকলারাম রাচওরমাবিহান" বলা হয়, থাইল্যান্ডের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ মন্দিরগুলির মধ্যে একটি। এই মন্দির এর বিশাল শায়িত বুদ্ধ (Reclining Buddha) প্রতিমার জন্য বিশ্ববিখ্যাত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৬ মিটার এবং উচ্চতা ১৫ মিটার।

এই মূর্তি ভগবান বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের অবস্থাকে চিত্রিত করে এবং ১৮৪৮ সালে এটি স্থাপন করা হয়েছিল। মন্দিরে প্রবেশ করলেই এর ভব্যতা ও আধ্যাত্মিক শক্তির অনুভূতি পাওয়া যায়।

মন্দিরের ইতিহাস

ওয়াত ফোর ইতিহাস ১৬শ শতাব্দীতে শুরু হয়, যখন এটি একটি সাধারণ মঠ হিসেবে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু এর বর্তমান রূপ রাজা রাম প্রথম এবং বিশেষ করে রাজা রাম তৃতীয়ের শাসনকালে সৃষ্টি হয়। ১৮৩২ সালে মন্দিরের সম্প্রসারণ করা হয়, যাতে প্রধানত দক্ষিণ ও পশ্চিম বিহার নির্মিত হয়। এখানেই সেই বিখ্যাত মূর্তিটিও স্থাপিত, যা দেখতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক ও ভক্ত এখানে আসেন।

স্থাপত্য ও ধর্মীয় গুরুত্ব

মন্দির প্রাঙ্গণে ১,০০০-এরও বেশি বুদ্ধ প্রতিমা এবং ৯০-এরও বেশি স্তূপ রয়েছে।
এই মন্দির কেবলমাত্র ধর্মীয় স্থান নয়, এটি থাই ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ও ম্যাসাজেরও কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত।
এটি থাইল্যান্ডের প্রথম জনসাধারণ শিক্ষাকেন্দ্রও ছিল, যাকে ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

যদি আপনি ব্যাংকক ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাহলে ওয়াত ফো মন্দির আপনার তালিকায় অবশ্যই থাকা উচিত। এর ভব্যতা, আধ্যাত্মিক পরিবেশ এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব এটিকে একটি অনন্য অভিজ্ঞতা করে তোলে।

Leave a comment