ভারতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ১১ বছরের দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ যাত্রা সমাপ্ত হয়েছে। এই সাফল্য জন-জনের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং উন্নয়নমূলক কাজের ছবি তুলে ধরার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একটি বিশেষ দেশব্যাপী জন-অভিযানের পরিকল্পনা করেছে, যার নাম – ‘সংকল্প থেকে সিদ্ধি পর্যন্ত’।
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্ণ হয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ২৬ মে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেছিলেন। এই উপলক্ষে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ‘সংকল্প থেকে সিদ্ধি পর্যন্ত’ নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে, যার উদ্দেশ্য সরকারের সাফল্য জনতার সামনে উপস্থাপন করা এবং পরবর্তী পর্যায়ের জন্য সংকল্পবদ্ধ হওয়া।
বিজেপির মিশন-২০২৪-এর আগে জনবিশ্বাসের মহাঅভিযান
মোদী সরকারের ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিজেপি দেশজুড়ে বুথ থেকে জেলা পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে। এই অভিযান কেবলমাত্র সরকারের কর্মসূচীগুলিকে তুলে ধরবে না, বরং জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের জন্য জনসমর্থনের ভিত্তিও সুদৃঢ় করবে।
১. প্রতিটি বিধানসভায় জনসংযোগ অভিযান – স্থানীয় পর্যন্ত পৌঁছানো
বিজেপি ২৯ মে পর্যন্ত দেশের প্রতিটি বিধানসভা ক্ষেত্রে বিশেষ জনসংযোগ অভিযান পরিচালনা করবে। এতে কর্মীরা ১+৪ এবং ১+২ সূত্র অনুযায়ী ঘরে ঘরে গিয়ে মোদী সরকারের কর্মসূচী এবং তার সুফল সম্পর্কে তথ্য দেবে। এই অভিযান সামাজিক স্তরে গভীর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
২. সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার
বিজেপি ২ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত প্রতিটি জেলায় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করবে। এছাড়াও, দলের জাতীয় সভাপতি ৭ বা ৮ জুন দিল্লিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করবেন, যেখানে সমগ্র অভিযানের প্রধান সাফল্য এবং জনসাংগঠনিক মূল্যায়ন ভাগ করে নেওয়া হবে।
৩. পেশাদারদের সভা – নীতি সংলাপ
প্রতিটি জেলায় চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিক্ষক ইত্যাদি পেশাদারদের সভা হবে। এখানে মোদী সরকারের তিনটি প্রধান নীতিগত সাফল্যের উপর বিশেষ আলোচনা করা হবে। কেবলমাত্র পেশাদারদের আমন্ত্রণ করে এই সংলাপকে গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলক করা হবে।
৪. উন্নত ভারত সংকল্প সভা – জাতি গঠনের প্রতিজ্ঞা
দেশের প্রতিটি মণ্ডল স্তরে ‘উন্নত ভারত সংকল্প সভা’ আয়োজন করা হবে, যেখানে সাধারণ নাগরিকদের কাছে উন্নত ভারতের জন্য প্রতিজ্ঞা নেওয়া হবে। এটি ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের অগ্রণী শক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিজ্ঞাকে শক্তিশালী করবে।
৫. পঞ্চায়েত এবং মহল্লা চৌপাল – কর্মসূচী এখন গ্রামে গ্রামে
শহরগুলিতে মহল্লা চৌপাল এবং গ্রামগুলিতে পঞ্চায়েত চৌপাল আয়োজন করা হবে। এই চৌপালের মাধ্যমে সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচীর তথ্য সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছাবে।
৬. আয়ুষ্মান ভারত পরিকল্পনার উপর ফোকাস – প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
প্রতিটি বিধানসভায় কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচীর উপর ভিত্তি করে শিবির স্থাপন করা হবে, যেখানে লোকদের নিবন্ধন করা হবে। প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ১০০ উপকৃত ব্যক্তিকে যুক্ত করা হবে, যাতে মানুষের কাছে সরাসরি সুফল চোখে পড়ে।
৭. ডিজিটাল প্রতিযোগিতা – তরুণরা যুক্ত হবে সৃজনশীল উপায়ে
বিজেপি ডিজিটাল জগতের পুরোপুরি ব্যবহার করবে। ছোট এবং দীর্ঘ ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক্স, রিল ইত্যাদির প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে। রাজ্য স্তরে বিজয়ীদের সম্মানিত করে তাদের উৎসাহিত করা হবে।
৮. সরকারি কর্মসূচীর প্রদর্শনী – সাফল্যের ঝলক
প্রতিটি জেলা এবং প্রধান কেন্দ্রে সরকারের প্রধান কর্মসূচীর প্রদর্শনী করা হবে, যেখানে মানুষ প্রমাণ এবং পরিসংখ্যান সহ সরকারের ১১ বছরের কাজ দেখতে পাবে।
৯. আন্তর্জাতিক যোগ দিবস – অ-রাজনৈতিক অংশগ্রহণ
১৫ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত যোগ প্রশিক্ষণ শিবির এবং ২১ জুন সর্বজনীন স্থানে যোগ দিবস আয়োজন করা হবে। এই অনুষ্ঠানকে অ-রাজনৈতিক ভাবে উপস্থাপন করা হবে যাতে সমাজের সকল শ্রেণীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়।
১০. রাজনৈতিক আক্রমণের জবাব – কংগ্রেসের মিথ্যাচারের খণ্ডন
বিজেপি একটি বিশেষ কৌশলের মাধ্যমে কংগ্রেস দ্বারা ছড়ানো ভ্রান্ত ধারণাগুলি প্রমাণ সহ খণ্ডন করবে। এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদ সম্মেলন, জনসভা এবং মাঠ পর্যায়ের রিপোর্টিংয়ের সাহায্য নেওয়া হবে।