কলকাতার মেচুয়াপাট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৫ জনের মৃত্যু

🎧 Listen in Audio
0:00

মঙ্গলবার রাতে কলকাতার মেচুয়াপাট্টি এলাকায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পশ্চিমবঙ্গ: মঙ্গলবার রাতে কলকাতার জনবহুল মেচুয়াপাট্টি এলাকার ‘ঋতুরাজ হোটেল’ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সমগ্র শহর কেঁপে উঠেছে। রাত প্রায় ৮:১৫ মিনিটে শুরু হওয়া এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েক ডজন মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা চিৎকার করে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াতে দেখা গেছে।

অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর ১০টি গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করে অগ্নি নিয়ন্ত্রণে আনে। উদ্ধার কার্যক্রম এখনও চলছে। পুলিশ ও NDRF-এর দল হোটেলে আটকে পড়া অনেককে উদ্ধার করেছে, কিন্তু অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে জানালা দিয়ে ঝাঁপ দিতে গিয়ে আহত হয়েছে।

শর্ট সার্কিটেই অগ্নিকাণ্ডের কারণ?

কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার বর্মা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে অগ্নিকাণ্ডের কারণ শর্ট সার্কিট বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি জানান, হোটেলে যথেষ্ট অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। হোটেলের গঠন পুরানো এবং সংকীর্ণ ছিল, যার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের বেরিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

পুলিশের মতে, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও দুই শিশু রয়েছে। অনেক আহত এখনও হাসপাতালে ভর্তি, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। দুর্ঘটনার সময় হোটেলে প্রায় ৮০-৯০ জন অতিথি ছিলেন। কিছু মানুষকে চতুর্থ তলা থেকে লাফাতে দেখা গেছে, যার ফলে তারা গুরুতর আহত হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা

ঘটনার পর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং পুলিশ কমিশনার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করে বলেছেন, এটি একটি দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর্যালোচনা করতে হবে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি শুভঙ্কর সরকার কলকাতা পৌরনিগমের উপর অবহেলার অভিযোগ আনেন এবং বলেন, এই হোটেলে কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। নিগমের তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

ঘটনা বুরাবাজার এলাকায় ঘটেছে, যা পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। এখানকার সংকীর্ণ রাস্তাঘাটি এবং জনবহুলতায় অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর গাড়িগুলিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এর ফলে আগুন নেভাতে দেরি হয়, যা ক্ষতির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশ হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে।

Leave a comment