দিল্লি-মেরঠ ও পূর্বের পরিধি এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা লঙ্ঘনের জন্য NHAI-এর ব্যাপক অভিযান, ৩৩,৪৪৭টি গাড়িতে ৭.৫ কোটি টাকা জরিমানা, ভুল দিকে গাড়ি চালানোর জন্যও চালান।
দিল্লি-মেরঠ হাইওয়ে: গাড়ি চালকদের অসাবধানতা এবং অতিবেগের ফলে দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য NHAI এবং ট্রাফিক পুলিশ ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দিল্লি-মেরঠ এক্সপ্রেসওয়ে (DME), পূর্বের পরিধি এক্সপ্রেসওয়ে (EPE) এবং যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা লঙ্ঘনকারী হাজার হাজার গাড়ি চালকের উপর ব্যাপক জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
৩৩৪৪৭ গাড়ি চালকের উপর ৭.৫ কোটি টাকা জরিমানা
গাজিয়াবাদে অবস্থিত NHAI-এর কন্ট্রোল রুম থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ৩৩,৪৪৭টি গাড়ি অতিবেগে ছুটে চলা CCTV-তে ধরা পড়েছে। এই গাড়িগুলিতে ৭.৫ কোটি টাকার বেশি জরিমানা আরোপ করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই আদায় করা হয়েছে।
অন্যান্য ট্রাফিক লঙ্ঘনের উপরও ব্যবস্থা
গতিসীমা লঙ্ঘনের পাশাপাশি অন্যান্য ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের উপরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে:
- বিপরীত দিকে গাড়ি চালানোর জন্য ৩,৩৯১ গাড়ি চালকের চালান।
- অবৈধ পার্কিং করার জন্য ৪৫৪টি চালান।
- মোট ৪১,২৯০টি গাড়িতে ৮.২০ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
- DME এবং EPE-তে অতিবেগের ফলে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে
- গতিসীমা না মানার কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে বেশ কিছু বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
তিনটি প্রধান দুর্ঘটনা
১১ জুলাই ২০২৩ – দিল্লি-মেরঠ এক্সপ্রেসওয়েতে বিপরীত দিকে যাওয়া একটি স্কুল বাস একটি গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে ৬ জনের মৃত্যু হয়।
১৫ জুন ২০২৪ – পূর্বের পরিধি এক্সপ্রেসওয়েতে একটি ক্যান্টার ও একটি ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয় এবং ১৫ জনের বেশি আহত হয়।
৩১ মার্চ ২০২৪ – ABES কলেজের সামনে একটি ডাম্পার এবং স্কুলছাত্রদের ভর্তি একটি আর্টিগা গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষে ২ শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয় এবং ৯ জন শিশু আহত হয়।
- এক বছরে DME-EPE-তে ট্রাফিক নিয়মের অবস্থা
- প্রতিদিন দুই লক্ষের বেশি গাড়ি এই এক্সপ্রেসওয়েগুলিতে চলে।
- CCTV ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিটি গাড়ির কঠোর নজরদারি করা হয়।
- গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।
গতিসীমা
DME: হালকা যানবাহন – ১০০ কিমি/ঘন্টা, ভারী যানবাহন – ৭৫ কিমি/ঘন্টা।
EPE: হালকা যানবাহন – ১২০ কিমি/ঘন্টা, ভারী যানবাহন – ৮০ কিমি/ঘন্টা।
যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতেও অতিবেগের উপর কঠোরতা
যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতেও ট্রাফিক পুলিশ গতিসীমা লঙ্ঘনকারী গাড়ি চালকদের উপর ব্যাপক জরিমানা আরোপ করেছে।
এক মাসে ৪০০০ চালান
১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত কুয়াশার কারণে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা ১০০ থেকে কমিয়ে ৭৫ কিমি প্রতি ঘন্টা করা হয়েছিল। তবুও হাজার হাজার গাড়ি চালক এই নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
- ৪০০০-এর বেশি চালান কাটা হয়েছে।
- ৮৬.৬৪ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
- ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে আবার পুরোনো গতিসীমা কার্যকর হবে।
যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, এখন আবহাওয়া পরিষ্কার হয়েছে, যার ফলে দৃশ্যমানতা উন্নত হয়েছে। এই কারণে ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে হালকা যানবাহনের জন্য ১০০ কিমি/ঘন্টা এবং ভারী যানবাহনের জন্য ৮০ কিমি/ঘন্টা পুরোনো গতিসীমা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে।
NHAI-এর বিবৃতি: নিরাপদ যাত্রার জন্য সতর্কতা অপরিহার্য
NHAI-এর প্রকল্প পরিচালক অরবিন্দ কুমার বলেন, নিরাপদ যাত্রার জন্য গাড়ি চালকদের নিজেদেরও সতর্ক থাকতে হবে। গতিসীমা না মানার ফলে শুধু তাদের নয়, অন্যদের জীবনও বিপদে পড়ে।