দিল্লির ব্যবসা আরও সহজ এবং দ্রুত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দিল্লি সরকার লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে সাতটি প্রধান ব্যবসার লাইসেন্স প্রদানের দায়িত্ব পুলিশের কাছ থেকে সরিয়ে নগর কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে দিয়েছে।
নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় সুসংবাদ এসেছে। রাজধানীতে হোটেল, গেস্ট হাউস, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, ভিডিও গেম পার্লার, অডিটোরিয়াম এবং এরকম অন্যান্য সেবাগুলির জন্য ব্যবসায়ীদের আর পুলিশের কাছ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। দিল্লি সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই দায়িত্ব এখন নগর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে লাইসেন্স প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং সুবিধাজনক হবে।
এখন পুলিশ নয়, এই কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স জারি করবে
নতুন ব্যবস্থার অধীনে দিল্লি নগর নিগম (MCD), নয়াদিল্লি নগর পালিকা পরিষদ (NDMC) এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের মতো কর্তৃপক্ষ এখন এই সাতটি সেবার লাইসেন্স জারি করবে। দিল্লি সরকার এটিকে ‘Ease of Doing Business’ এর অধীনে একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ বলেছে, যা শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবে না, বরং পুলিশকে অপ্রধান কাজ থেকে মুক্ত করে তাদের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করবে।
আগে কী সমস্যা ছিল?
এখন পর্যন্ত দিল্লিতে এই সেবাগুলির লাইসেন্সের দায়িত্ব দিল্লি পুলিশের কাছে ছিল। এর ফলে লাইসেন্স প্রক্রিয়া দীর্ঘ, জটিল এবং অনেক সময় অস্বচ্ছ হয়ে পড়ত। ব্যবসায়ীদের बार-बार পুলিশ স্টেশনে ঘুরতে হত, যার ফলে দুর্নীতির আশঙ্কাও তৈরি হত। অনেক সময় মাসের পর মাস লাইসেন্স পাওয়া দেরি হত, যার ফলে ব্যবসায় बाধা সৃষ্টি হত।
নতুন পরিবর্তন: ব্যবসায়ীদের জন্য বরদান
মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এই পরিবর্তনকে ডবল ইঞ্জিন সরকারের উপহার বলেছেন। তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বাধিক শাসন’ এবং ‘ব্যবসার সুগমতা’র প্রতিশ্রুতির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। এই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উপ-রাজ্যপাল ভি. কে. সাক্সেনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে, এখন থেকে সব লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া ডিজিটাল হবে, যার ফলে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাবে। এছাড়াও, ব্যবসায়ীদের অপ্রয়োজনীয় দেরি বা দুর্নীতির কোনও चिंता করার প্রয়োজন হবে না।
পুলিশকে मिलेगा राहत, जनতাকে मिलेगा फायदा
গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের ধারণা যে, পুলিশকে শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণের মতো প্রধান কাজগুলিতে মনোযোগ দিতে হবে, লাইসেন্স জারির মতো প্রশাসনিক কাজে নয়। নতুন ব্যবস্থায় পুলিশের বোঝা কমবে এবং তারা নিরাপত্তা, বিশেষ করে নারী নিরাপত্তা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে আরও কার্যকর ভাবে অবদান রাখতে পারবে।
দিল্লি সরকারের মুখপাত্রের মতে, লাইসেন্সের জন্য আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল করা হচ্ছে। এখন আবেদনকারীরা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে নথি আপলোড করতে পারবেন এবং বাড়ি বসেই লাইসেন্সের অবস্থা জানতে পারবেন। সরকার দাবি করেছে যে, এর ফলে লাইসেন্স পাওয়ার সময় ৫০% পর্যন্ত কমে যাবে।
দিল্লির ব্যবসায়িক সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তের স্বাগত জানিয়েছে। চাঁদনি চক ব্যবসা মণ্ডলের প্রধান অজয় মেহরা বলেছেন, “গত কয়েক বছর ধরে আমরা পুলিশের পিছনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এখন যদি নগর নিগম এই কাজ করে এবং সেটাও ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে, তাহলে এটি পুরো ব্যবসা সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিশাল পরিবর্তন।”