২০২৭ সালে ভারতের পরবর্তী জনগণনা: গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা

🎧 Listen in Audio
0:00

দেশে দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে থাকা জনগণনার ব্যাপারে একটি বড় ঘোষণা করা হয়েছে। গৃহ মন্ত্রণালয় সোমবার জনগণনা আইন, ১৯৪৮ অনুযায়ী একটি আধিকারিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, যেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে যে ভারতের পরবর্তী জনগণনা ২০২৭ সালে অনুষ্ঠিত হবে।

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভারতের পরবর্তী জনগণনার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। গৃহ মন্ত্রণালয় জনগণনা আইন, ১৯৪৮ অনুযায়ী আধিকারিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে জনগণনা ২০২৭ সালে অনুষ্ঠিত হবে। এই বিজ্ঞপ্তি কেবলমাত্র একটি প্রযুক্তিগত ঘোষণা নয়, বরং দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং জাতিগত কাঠামো বুঝতে নতুন একটি সূচনা।

২০১১-এর পর ২০২১ সালে প্রস্তাবিত জনগণনা করোনা মহামারীর কারণে স্থগিত করা হয়েছিল। প্রায় ১৬ বছর পর ভারত আবার নিজের জনসংখ্যার আধিকারিক অনুমান করবে, যা নীতি নির্ধারণ, সংস্থান বণ্টন এবং সরকারি পরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

১ মার্চ ২০২৭ তারিখ হবে ভিত্তি

গৃহ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশের অধিকাংশ অংশে জনগণনার জন্য ১ মার্চ ২০২৭ তারিখ মধ্যরাতকে রেফারেন্স ডেট (Reference Date) হিসেবে গণ্য করা হবে। এই তারিখ পর্যন্ত যতগুলি মানুষ ভারতে উপস্থিত থাকবে এবং যতগুলি পরিস্থিতি থাকবে, তাই জনগণনায় নথিভুক্ত হবে। তবে, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং লাদাখের কিছু অংশের মতো ঠান্ডা এবং দুর্গম এলাকায় এই তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৬ নির্ধারিত হয়েছে। এই এলাকাগুলিতে প্রাকৃতিক পরিস্থিতি এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দুটি পর্যায়ে সম্পূর্ণ হবে জনগণনা

জনগণনার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া দুটি প্রধান পর্যায়ে সম্পন্ন হবে:

  • হাউসলিস্টিং অপারেশন (House Listing Operation): এই পর্যায়ে প্রতিটি বাড়ি এবং তার মধ্যে উপলব্ধ সুবিধা এবং সম্পত্তির রেকর্ড তৈরি করা হবে।
    এই পর্যায়টি এই তথ্য দেবে যে বাড়িটি পাকা নাকি কাঁচা, জল-বিদ্যুতের অবস্থা কী, শৌচালয়ের উপলব্ধতা আছে কিনা ইত্যাদি।
  • জনসংখ্যা গণনা (Population Enumeration): এই পর্যায়ে প্রতিটি ব্যক্তির সামাজিক, অর্থনৈতিক, জাতিগত, শিক্ষাগত, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক তথ্য নেওয়া হবে। নাম, বয়স, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, জাতি, শিক্ষাগত মান, কর্মসংস্থানের অবস্থা, প্রতিবন্ধীতার অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি তথ্য এই পর্যায়ে সংগ্রহ করা হবে।

২১ মাসে সম্পূর্ণ হবে প্রক্রিয়া

  • গৃহ মন্ত্রণালয়ের মতে, জনগণনার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া প্রায় ২১ মাসে সম্পন্ন করা হবে।
  • প্রাথমিক তথ্য মার্চ ২০২৭ সালে প্রকাশিত হবে।
  • যদিও বিস্তারিত তথ্য (যার মধ্যে জাতিগত, সামাজিক-অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিবরণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে) ২০২৭ সালের শেষের মধ্যে প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।

জাতিগত জনগণনা নিয়েও নজর

এইবার জনগণনার সাথে জাতিগত তথ্য সংগ্রহের উপরও বিশেষ জোর দেওয়া হবে। সামাজিক ন্যায়ের দিক থেকে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে কারণ এটি বিভিন্ন জাতি এবং বর্গের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার পরিচয় দেবে। জাতিগত জনগণনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবী উঠেছিল, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি এবং সামাজিক সংগঠন এর পক্ষে ছিল। মনে করা হচ্ছে এটি সংরক্ষণ, নীতি নির্ধারণ এবং সংস্থানের ন্যায়সঙ্গত বণ্টনে সাহায্য করবে।

Leave a comment