হাওয়ার্ড লুটনিকের বক্তব্য: বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন যে, ভারতের রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনার মতো সিদ্ধান্ত আমেরিকাকে অস্বস্তিতে ফেলে। তবে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। ভারত আমেরিকা কর্তৃক আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক থেকে মুক্তি চায়, অন্যদিকে আমেরিকা প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আরও সহযোগিতার আশা করছে।
ভারতের সিদ্ধান্তের উপর আমেরিকার প্রতিক্রিয়া
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আমেরিকা-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরামের একটি শীর্ষ সম্মেলনে আমেরিকার বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক ভারতের কিছু সিদ্ধান্তের উপর তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন যে, ভারতের রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা আমেরিকার জন্য উদ্বেগের বিষয়। তাঁর মতে, "যদি আপনি রাশিয়া থেকে আপনার অস্ত্র কিনতে যাচ্ছেন, তাহলে এটি আমেরিকাকে বিরক্ত করার একটা উপায়।"
লুটনিক আরও বলেছেন যে, ভারত এখন আমেরিকা থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, আমেরিকা চায় ভারত তাদের প্রতিরক্ষা সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা বজায় রাখুক এবং আমেরিকার সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলুক।
রাশিয়া থেকে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ
আমেরিকা চায় না যে, তার সহযোগী দেশগুলি রাশিয়া থেকে অস্ত্র কিনুক, কিন্তু ভারত রাশিয়া থেকে S-400 কিনেছে। যা আমেরিকার দৃষ্টিতে একটু কঠিন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ভারতের বৈদেশিক নীতি "কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন" এর উপর ভিত্তি করে গঠিত, যেখানে তারা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়।
হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন যে, ভারতের ব্রিকসের মতো মঞ্চে সক্রিয় থাকা এবং রাশিয়ার সাথে সামরিক চুক্তি করা আমেরিকা-ভারত সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। তবে তিনি এটাও মনে করেন যে, উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলির সমাধান করা সম্ভব।
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অব্যাহত আলোচনা
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক শুরুকৃত নতুন শুল্ক নীতির পর দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন অনেক দেশের উপর একতরফা শুল্ক আরোপ করেছিল, যার ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
ভারতের দাবি যে, তাদের আমেরিকা কর্তৃক আরোপিত অতিরিক্ত ২৬ শতাংশ শুল্ক থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দেওয়া হোক। ভারতের যুক্তি যে, এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে।
ট্রাম্প এক সময় দাবি করেছিলেন যে, ভারত আমেরিকাকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল, যা পরে ভারত প্রত্যাখ্যান করে। তবে এখন উভয় পক্ষ একমত যে, স্বচ্ছ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বের করা সম্ভব।