আমেরিকা থেকে ভারতে অর্থ প্রেরণ এখন আরও ব্যয়বহুল হতে পারে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আসলে, ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যার অধীনে ২০২৬ সাল থেকে আমেরিকা থেকে ভারতসহ অন্যান্য দেশে অর্থ প্রেরণে ৩.৫% কর দিতে হবে। পূর্বে এই কর ৫% প্রস্তাবিত ছিল, যা পরে কমিয়ে ৩.৫% করা হয়েছে।
এই বিল সম্প্রতি আমেরিকার সংসদের নিম্নকক্ষ, হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস, থেকে পাশ হয়েছে। এখন এটি সিনেটে উত্থাপিত হবে, যেখানে জুন বা জুলাই মাসে ভোটগ্রহণ হতে পারে। যদি বিলটি আইনে পরিণত হয়, তাহলে আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হবে।
নতুন কর কার উপর প্রভাব ফেলবে?
এই নতুন কর সরাসরি আমেরিকার নাগরিকদের উপর প্রযোজ্য হবে না, তবে অ-নাগরিক যেমন H1B ভিসাধারী, গ্রীন কার্ডধারী এবং ছাত্র ভিসায় থাকা ব্যক্তিদের ৩.৫% কর দিতে হবে। আমেরিকায় প্রায় ২৯ লক্ষ ভারতীয় বাস করে, তাই এই নিয়ম বিশেষ করে তাদের জন্য প্রভাবশালী হবে।
এছাড়াও, ভারতে প্রেরিত রেমিট্যান্সের উপরও প্রভাব পড়বে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, আমেরিকা থেকে ভারতে আগত মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ২৮% অংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার। যদি এই কর কার্যকর হয়, তাহলে প্রতি ১০০ ডলার ট্রান্সফারের জন্য ৩.৫ ডলার অতিরিক্ত কর দিতে হবে, যার ফলে ভারতে পরিবারে পাঠানো অর্থ আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।
NRE অ্যাকাউন্ট, বিনিয়োগ এবং কোম্পানির উপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর শুধুমাত্র অর্থ প্রেরণ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ভারতে NRE অ্যাকাউন্ট এবং রিয়েল এস্টেটের মতো বিনিয়োগের উপরও এর প্রভাব পড়বে। যদি কোন ব্যক্তি আমেরিকায় তার সম্পত্তি, স্টক বা ESOP বিক্রি করে ভারতে অর্থ প্রেরণ করে, তাহলে তার উপরও ৩.৫% কর প্রযোজ্য হবে। যেহেতু এই কর ‘এক্সাইজ ট্যাক্স’ এর আওতায় পড়ে, তাই ভারত-আমেরিকা কর চুক্তির অধীনে এর কোনো রিফান্ড সুবিধা পাওয়া যাবে না।
এছাড়াও, এই প্রস্তাবিত করের প্রভাব ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যের উপরও পড়বে। আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের বেতনের অংশ যখন ভারতে প্রেরণ করা হবে, তখন কোম্পানিগুলিকে তাদের রিলোকেশন প্যাকেজে এই কর অন্তর্ভুক্ত করতে হতে পারে, যার ফলে তাদের খরচ বৃদ্ধি পাবে।