বলিউড অভিনেত্রী এবং বিগ বসের প্রাক্তন প্রতিযোগী মন্দানা করিমি আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এইবার তিনি ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে এমন এক বিবৃতি দিয়েছেন যার পর থেকে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
মধুরা নাইকের মন্দানা করিমির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া: বিগ বস থেকে খ্যাতি অর্জনকারী অভিনেত্রী মন্দানা করিমি এই দিনগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি পোস্ট নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। মন্দানা অপারেশন সিন্দুর নিয়ে মন্তব্য করে এমন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি লিখেছেন যে ভারত পাকিস্তানি কাশ্মীরে বোমা বর্ষণ করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই নাগরিক ও শিশুদের হত্যা করেছে।
তার এই বিবৃতির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল প্রতিবাদ শুরু হয়। অনেকে তাকে ভারত বিরোধী বলে অভিহিত করতে শুরু করেন এবং এমনকি তাকে দেশ ছেড়ে ইরান ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিতে শুরু করেন।
মন্দানা করিমির বিতর্কিত পোস্টে হইচই
মন্দানা করিমি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করেছেন যে ভারত পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরে বোমা বর্ষণ করেছে, যাতে নাগরিক ও শিশুদের প্রাণহানি ঘটেছে। এই পোস্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। কিছু ব্যবহারকারী তাকে “ভারত ছাড়ো” পর্যন্ত বলে দিয়েছেন এবং ইরান ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
মধুরা নাইকের তীব্র প্রত্যুত্তর
মন্দানার এই পোস্টের জবাবে অভিনেত্রী মধুরা নাইক ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে তাকে তীব্র ভৎসর্না করেছেন। মধুরা তার পোস্টে বলেছেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং অগ্রহণযোগ্য যে একজন বিদেশী নাগরিক, যিনি ভারতে সম্মানের সাথে বাস করছেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে এ ধরণের বিবৃতি দিচ্ছেন। মন্দানা করিমি এখান থেকেই সব কিছু পেয়েছেন—কাজ, পরিচয়, স্বাধীনতা এবং মঞ্চ। তারপরেও তিনি মিথ্যা অভিযোগ করে ভারতের ছবি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
মধুরা স্পষ্ট করে বলেছেন যে ভারতকে হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদ বলে লেবেল করা শুধুমাত্র তথ্যের বাইরে নয়, বরং এটি ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা।
‘ভারত ঘৃণাপ্রবণদের সহ্য করবে না’
তার পোস্টে মধুরা নাইক ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদার কথা বলে বলেছেন যে দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখা শুধুমাত্র ভারতবাসীর কর্তব্য নয়, বরং যারা এই দেশে অতিথি হিসেবে বাস করছেন তাদেরও কর্তব্য। ভারত ঘৃণাপূর্ণ বক্তৃতা সহ্য করবে না, না দেশদ্রোহী আদর্শকে। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে দাবি করছি যে তারা মন্দানা করিমির এই বিবৃতির গভীর তদন্ত করুক।
যদি তিনি ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মধুরা এটাও যোগ করেছেন যে এই ঘটনায় উদাহরণ স্থাপন করা উচিত যাতে অন্য কোনও বিদেশী নাগরিক ভারতের অতিথিপরায়ণতার অপব্যবহার না করে।
মন্দানার স্পষ্টীকরণ, কিন্তু বিতর্ক থামছে না
মন্দানা করিমি তার পোস্ট নিয়ে স্পষ্টীকরণও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তার উদ্দেশ্য কারও অনুভূতিতে আঘাত করা ছিল না, বরং তিনি শান্তি ও মানবাধিকারের কথা বলছিলেন। তবে তার স্পষ্টীকরণে মানুষের রাগ কমতে দেখা যাচ্ছে না। টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে #MandanaGoBack এবং #RespectIndia হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে। অনেকের মতে, যে ব্যক্তি এই দেশ থেকে উপার্জন করে এবং খ্যাতি অর্জন করে, সেই দেশের নিন্দা করে, তার ভারতে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই।
এই পুরো ঘটনায় এখন রাজনৈতিক মহলেও চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। কিছু সংগঠন দাবি করেছে যে সরকার এই বিষয়ে স্বীকৃতি দিক এবং প্রয়োজন হলে মন্দানা করিমির ভিসা বাতিল করা হোক অথবা তাকে বহিষ্কার করা হোক। অন্যদিকে কিছু আইনজীবী বলেছেন যে যদি তার বিবৃতি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বা অখণ্ডতার বিরুদ্ধে পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইটি আইন এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার ধারায় মামলা হতে পারে।