নতুন দিল্লি: দেশে সংবিধান, সংসদ এবং সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সম্প্রতি বলেছেন যে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে থাকে এবং সংসদের উপরে আর কেউ নেই। এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন – "না সংসদ সর্বোচ্চ, না নির্বাহী। সংবিধানই সর্বোচ্চ।"
কপিল সিব্বলের পাল্টা – 'সংবিধানই প্রকৃত অধিপতি'
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কপিল সিব্বল তার বক্তব্যে বলেছেন যে আইনের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্ট করে এবং দেশ সর্বদাই সংবিধানকেই সর্বোপরি মনে করেছে। তিনি সরাসরি উপরাষ্ট্রপতির নাম করেননি, কিন্তু তার বার্তা স্পষ্ট ছিল – কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংবিধানের উপরে থাকতে পারে না।
সিব্বল আর কী বলেছেন?
সিব্বল আরও বলেছেন, "সুপ্রিম কোর্টের কাজ শুধু সংবিধানের ব্যাখ্যা করা নয়, বরং সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার করাও – যা সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট।" তিনি এও বলেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়, যার সমালোচনা বিজেপি নেতারা এবং উপরাষ্ট্রপতি করেছেন, সংবিধানের মূল্যবোধ এবং জাতীয় স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
ধনখড়ের বক্তব্য কেন বিতর্কের বিষয় হয়েছে?
প্রকৃতপক্ষে, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছে যে কোনও রাজ্যপাল যদি কোনও বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান, তাহলে রাষ্ট্রপতির তিন মাসের মধ্যে তার উপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর প্রতিক্রিয়ায় উপরাষ্ট্রপতি ধনখড় বলেছেন যে "আমরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারি না যেখানে রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়া হবে।" তিনি আরও যোগ করেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্র সংবিধানের ১৪৫(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে সীমাবদ্ধ – অর্থাৎ শুধুমাত্র ব্যাখ্যা করা।
মূল বিষয়টি কী?
এই বিতর্ক শুধুমাত্র শব্দের নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ব্যাখ্যার। সংসদ কি সর্বোচ্চ, নাকি সংবিধান? সুপ্রিম কোর্টকে কি সীমাবদ্ধ রাখা উচিত, নাকি তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে?