৪৭ বছর বয়সে প্রখ্যাত তামিল পরিচালক বিক্রম সুগুমরণের মৃত্যু

৪৭ বছর বয়সে প্রখ্যাত তামিল পরিচালক বিক্রম সুগুমরণের মৃত্যু
🎧 Listen in Audio
0:00

বিখ্যাত তামিল চলচ্চিত্র পরিচালক বিক্রম সুগুমরণের ৪৭ বছর বয়সে রবিবার হৃদরোগে মৃত্যু চলচ্চিত্র জগতের জন্য এক গভীর আঘাত। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই দুঃসংবাদ জানিয়েছেন।

বিনোদন: তামিল চলচ্চিত্রের জগৎ থেকে আরেকটি মর্মান্তিক সংবাদ এসেছে। সংবেদনশীল গল্পকে পর্দায় প্রাণবন্ত করে তোলার দক্ষ পরিচালক বিক্রম সুগুমরণ আর আমাদের মাঝে নেই। মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন। একটি বাসে ভ্রমণের সময় হার্ট অ্যাটাকের কারণে তার মৃত্যু হয়। চলচ্চিত্র জগৎ এই ক্ষতিতে মর্মাহত এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলেই এই শোক বহন করছে।

মধুরাই থেকে ফেরার পথে শেষ নিঃশ্বাস

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিক্রম সুগুমরণ মধুরাইতে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতাকে নতুন স্ক্রিপ্ট শোনানোর পর বাসে করে ফিরে আসছিলেন। ভ্রমণের সময় তিনি হঠাৎ বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। সহযাত্রীরা তাকে অবিলম্বে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একজন প্রতিভাবান এবং পরিশ্রমী পরিচালকের এভাবে হঠাৎ মৃত্যু কেবল চলচ্চিত্র জগতের জন্যই নয়, তার অনুরাগীদের জন্যও গভীর আঘাত।

‘মাধা ইয়ানাই কুট্টাম’ ছবি দিয়ে পরিচিতি

বিক্রম সুগুমরণের নাম শুনলেই তার পরিচালিত ‘মাধা ইয়ানাই কুট্টাম’ ছবির কথা মনে পড়ে। এই ছবিটি কেবল বাণিজ্যিকভাবে সফল ছিল না, সমালোচকদেরও প্রশংসা পেয়েছিল। এই ছবিতে তিনি গ্রামীণ তামিলনাড়ুর সামাজিক কাঠামো, সংগ্রাম এবং অনুভূতিগুলিকে এত গভীরভাবে তুলে ধরেছিলেন যে দর্শকদের দীর্ঘদিন ধরে তার ছাপ মনে রয়েছে।

অভিনয় দিয়ে শুরু হয়েছিল কর্মজীবন

বিক্রম তার কর্মজীবনের শুরু করেছিলেন অভিনয়ের মাধ্যমে। ‘পোলাধভান’ এবং ‘কোডীভিরান’ ছবিতে তিনি ছোট কিন্তু প্রভাবশালী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরে তিনি পরিচালনার দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং ২০০৩ সালে ‘মাধা ইয়ানাই কুট্টাম’ ছবি দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার পরিচালনার একটি বিশেষ দিক ছিল গল্পটিকে বাস্তবতার কাছাকাছি রাখা এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করা।

২০২৩ সালে পরিচালনায় ফিরে আসা

তবে, কিছু বছর তিনি পরিচালনা থেকে দূরে ছিলেন, কিন্তু ২০২৩ সালে ‘রাবণ কোট্টাম’ ছবি দিয়ে তিনি ফিরে আসেন। এই ছবিটি বক্স অফিসে বেশি সফল হয়নি, তবে এর বিষয়বস্তু এবং উপস্থাপনা প্রশংসিত হয়েছিল। তার শেষ পরিচালিত ছবি ছিল ‘থিরাম বোরাম’, যা পর্বতারোহণ এবং আত্ম-সংগ্রামের মতো বিষয়গুলির উপর কেন্দ্রীভূত ছিল।

চলচ্চিত্র নির্মাণে বিক্রম সুগুমরণকে দিকনির্দেশনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি দানের কৃতিত্ব যায় কিংবদন্তী পরিচালক বালু মহেন্দ্রের কাছে। তিনি তাঁর সান্নিধ্যে থেকে চলচ্চিত্রের সূক্ষ্মতা শিখেছিলেন। বিক্রমের চলচ্চিত্রগুলিতে সেই সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ স্পষ্ট দেখা যায় যা তিনি তার গুরু থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধাঞ্জলির ঢেউ

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তামিল চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেক নামী অভিনেতা, পরিচালক এবং অনুরাগীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন। পরিচালক ভেঙ্কট প্রভু, সম্পৎ রাজ, গায়ত্রী শঙ্করসহ অনেক শিল্পী তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলি স্মরণ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সকলেই তাকে একজন "সংবেদনশীল গল্পকার, পরিশ্রমী কারিগর এবং নম্র মানুষ" হিসেবে স্মরণ করেছেন।

Leave a comment