হরমুজ जलডमरুমধ্যের সংকট: তেলের দাম বৃদ্ধি ও ভারতের প্রস্তুতি

🎧 Listen in Audio
0:00

হরমুজ जलডमरুমধ্য: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার হামলার পর আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী কী বলেছেন জেনে নিন।

হরমুজ जलডमरুমধ্য: পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে হরমুজ जलডमरুমধ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা বিশ্বব্যাপী শক্তি বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারত, যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ, এই সংকটের সরাসরি প্রভাব অনুভব করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের প্রস্তুতি এবং কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর প্রতিক্রিয়া সবার নজরে রয়েছে।

কী হল হরমুজ जलডमरুমধ্য এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

হরমুজ जलডमरুমধ্য একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপথ, যা পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগর এবং আরব সাগরের সাথে সংযুক্ত করে। এই সমুদ্রপথ বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহন পথ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বের প্রায় ২০% তেল এই পথ দিয়ে যায়, যার মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইরাকের মতো উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে রপ্তানি হওয়া কাঁচা তেল।

ভারত তার মোট তেলের চাহিদার প্রায় ৯০% আমদানি করে এবং তার মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫% তেল হরমুজ जलডमरুমধ্য দিয়ে আসে। ফলে এই পথের ব্যাঘাত ঘটলে ভারতের শক্তি সরবরাহ, দাম এবং অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।

আমেরিকার হামলার পর উত্তেজনার বৃদ্ধি

সম্প্রতি আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যার জবাবে ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা হরমুজ जलডमरুমধ্য বন্ধ করতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে এবং সমুদ্রপথ অবরুদ্ধ হয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী কাঁচা তেলের সরবরাহে প্রভাব পড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম ইতিমধ্যেই ৯১ ডলার প্রতি ব্যারেল ছাড়িয়ে গেছে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটি ১০৫ ডলারের উপরেও যেতে পারে।

ভারতের কৌশল এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর বক্তব্য

বর্ধমান সংকটের মধ্যে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী ভারতের প্রস্তুতি নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেছেন যে ভারত সরকার গত দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিম এশিয়ায় ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি জানিয়েছেন যে ভারত গত কয়েক বছরে তেল সরবরাহের উৎসে বৈচিত্র্য এনেছে এবং এখন কেবল উপসাগরীয় দেশগুলিতে নির্ভরশীল নয়।

তার মতে, ভারত এখন ব্রাজিল, রাশিয়া, আমেরিকা এবং পশ্চিম আফ্রিকার মতো দেশগুলি থেকেও ব্যাপক পরিমাণে তেল আমদানি করছে। এছাড়াও, ভারতীয় তেল বিপণন সংস্থাগুলির কাছে প্রায় ২৫ দিনের যথেষ্ট মজুত রয়েছে, যার ফলে তাৎক্ষণিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।

পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কি বাড়বে?

প্রশ্ন উঠেছে, ভারতে সাধারণ মানুষকে কি পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির মুখোমুখি হতে হবে? এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত হল, যদি কাঁচা তেলের দাম ১০৫ ডলার প্রতি ব্যারেল ছাড়িয়ে যায় এবং সংকট এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টিকে থাকে, তাহলে সরকারকে বিকল্পগুলি পর্যালোচনা করতে হবে।

সূত্র অনুসারে, কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ জনগণের উপর বোঝা না বাড়াতে উৎপাদন শুল্ক (excise duty) কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত কাঁচা তেলের দাম এবং বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব

যদি হরমুজ जलডमरুমধ্য দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকে, তাহলে এর প্রভাব কেবল ভারতেই নয়, বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়বে। সমুদ্রপথ ব্যাঘাতের ফলে কেবল তেল নয়, এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) -এর সরবরাহও প্রভাবিত হবে। এর ফলে শিপিং খরচ, বীমা দর এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে এবং দেশগুলির আর্থিক নীতিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে কারণ এটি একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতি এবং আমদানির উপর এর নির্ভরতা বেশি।

নिवेशক ও প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিক্রিয়া কী?

তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব শেয়ার বাজারেও দেখা যাচ্ছে। শক্তি খাতের কোম্পানির শেয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু অটোমোবাইল, বিমান পরিবহন এবং পরিবহন খাতে অবনতি দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে সোনা এবং ডলারের মতো নিরাপদ বিকল্পগুলির দিকে ঝুঁকছে।

এছাড়াও, ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মতো পরিশোধনা সংস্থাগুলি সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে সতর্ক হয়ে উঠেছে। তারা বিকল্প পথ দিয়ে সরবরাহ নিশ্চিত করার কৌশল তৈরি করছে।

সরকারের প্রস্তুতি এবং বিকল্প ব্যবস্থা

ভারত সরকার এই সংকটের পরিস্থিতিতে অনেকগুলি বিকল্প নিয়ে কাজ করছে।

  • বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা আমেরিকা, রাশিয়া এবং অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা।
  • যুক্তিসঙ্গত মজুত  ভারতের কাছে যুক্তিসঙ্গত তেল মজুতের ক্ষমতা রয়েছে, যা প্রয়োজন হলে ব্যবহার করা যাবে।
  • বিকল্প পথ  জ্বালানি আমদানির জন্য বিকল্প সমুদ্রপথ চিহ্নিত করা এবং ব্যবহার করা।
  • কর নীতিতে নমনীয়তা  উৎপাদন শুল্ক এবং অন্যান্য করগুলি সময়মতো পরিবর্তন করে দাম স্থিতিশীল রাখা।

```

Leave a comment