শুক্রবার লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ম্যাচে তিলক বর্মা আউট হননি, তবে ‘রিটায়ার্ড আউট’ নিয়ম অনুযায়ী তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল।
খেলাধুলার খবর: আইপিএল ২০২৫-এর একটি ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটসম্যান তিলক বর্মা তখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন যখন তাকে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ম্যাচে ‘রিটায়ার্ড আউট’ করা হয়। এই সিদ্ধান্তটি ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং সকলের মনে একই প্রশ্ন জেগে ওঠে – আসলে এই ‘রিটায়ার্ড আউট’ কি?
তিলক বর্মা এই নিয়ম অনুযায়ী আইপিএল ইতিহাসে রিটায়ার্ড আউট হওয়া চতুর্থ খেলোয়াড় হয়েছেন। তিনি ২৩ বলে ২৫ রান করেছিলেন, কিন্তু শেষ ওভারগুলিতে তেমন দ্রুত রান করতে পারছিলেন না, ফলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে মাঠ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল। যদিও তিনি আউট হননি, তবুও তাকে ‘রিটায়ার্ড আউট’ করা হয়েছিল।
‘রিটায়ার্ড আউট’ নিয়ম কি?
ক্রিকেটে আপনি প্রায়ই দেখেছেন যে কোনও ব্যাটসম্যান আঘাতের কারণে ম্যাচের মাঝখানে মাঠ ছেড়ে চলে যায়। এমন ক্ষেত্রে তাকে "রিটায়ার্ড হার্ট" বলা হয় এবং তিনি চাইলে পরে ব্যাটিং করতে ফিরে আসতে পারেন। কিন্তু ‘রিটায়ার্ড আউট’ এর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। এতে ব্যাটসম্যানকে কৌশলগত কারণে আউট না হয়েই ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং সে আর ব্যাটিং করতে পারে না।
এই সিদ্ধান্তটি দলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক নেওয়া হয় এবং এর জন্য আম্পায়ারের অনুমতি প্রয়োজন হয় না। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি প্রতিপক্ষ অধিনায়ক এবং আম্পায়ারের অনুমতি থাকে, তাহলে ব্যাটসম্যান আবার ফিরে আসতে পারে, কিন্তু তার পরবর্তী উইকেট পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আইপিএলে কারা কারা ‘রিটায়ার্ড আউট’ হয়েছেন?
১. আর. অশ্বিন (২০২২) – রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলার সময় অশ্বিন আইপিএল ইতিহাসে এই নিয়ম অনুযায়ী বেরিয়ে যাওয়া প্রথম খেলোয়াড় হন। এই সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণরূপে কৌশলের অংশ ছিল।
২. অর্থব তায়েদে (২০২৩) – পাঞ্জাব কিংসের এই তরুণ ব্যাটসম্যানকে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে রিটায়ার্ড আউট করা হয়েছিল। তিনি দ্রুত রান করতে পারছিলেন না, তাই দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
৩. সাই সুদর্শন (২০২৩) – গুজরাট টাইটানসের হয়ে খেলার সময় সুদর্শনকে হার্দিক পাণ্ড্যের অধিনায়কত্বে রিটায়ার্ড আউট করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তটিও দ্রুত রান গতির জন্য নেওয়া হয়েছিল।
৪. তিলক বর্মা (২০২৫) – এখন তিলক বর্মা এই তালিকায় যোগ দিয়েছেন। ২৩ বলে মাত্র ২৫ রান করার পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স শেষ ওভারগুলিতে দ্রুত রান করার জন্য তাকে ফিরিয়ে নিয়েছিল।
কেন রিটায়ার্ড আউট-এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
শেষ ওভারগুলিতে বড় শট মারার প্রয়োজন
ধীর স্ট্রাইক রেট সম্পন্ন ব্যাটসম্যানকে সরিয়ে ফিনিশারকে সুযোগ দেওয়া
কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করা
ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া
‘রিটায়ার্ড আউট’ যদিও বিতর্কিত মনে হতে পারে, তবে এটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরিবর্তিত কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। যেমন যেমন খেলায় প্রতিযোগিতা বেড়ে চলেছে, তেমন তেমন দলগুলি জয়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য প্রতিটি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়।