আইপিএল ২০২৫-এর ১৮তম সিজনের ৫৪টি ম্যাচ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে এবং টুর্নামেন্ট এসেছে রোমাঞ্চকর এক পর্যায়ে। এখন পর্যন্ত রাজস্থান রয়্যালস এবং চেন্নাই সুপার কিংস
খেলাধুলার খবর: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ২০২৫-এর ১৮তম সিজনের সমাপ্তি যত কাছে আসছে, প্লেঅফের লড়াই ততই রোমাঞ্চকর এবং জটিল হয়ে উঠছে। লিগ স্টেজের ৫৪টি ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে এবং এখন আর মাত্র কয়েকটি ম্যাচ বাকি, কিন্তু এখনও প্লেঅফের চারটি স্থান নিশ্চিত হয়নি।
এই সিজনের বিশেষ ব্যাপার হল, মাত্র দুটি দল— রাজস্থান রয়্যালস (আরআর) এবং চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে)— প্লেঅফের লড়াই থেকে বাদ পড়েছে, অন্য ৮টি দল এখনও শেষ চারে স্থান পেতে লড়াই করছে। আসুন দেখে নেই কোন দল কোথায় রয়েছে, কার কত জয়ের প্রয়োজন এবং তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কী।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১৬
- বাকি ম্যাচ: কেকেআর (অ্যাওয়ে), এসআরএইচ (হোম), কেকেআর (হোম)
রজত পাতিদারের অধিনায়কত্বে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এই সিজনের সবচেয়ে শক্তিশালী দাবিদার হিসেবে উঠে এসেছে। এখন দলের অ্যাকাউন্টে ১৬ পয়েন্ট রয়েছে এবং যদি তারা তাদের তিনটি বাকি ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে ২২ পয়েন্ট নিয়ে সহজেই শীর্ষে থাকবে। আরসিবিকে প্লেঅফে পৌঁছানোর জন্য মাত্র ১ বা ২ জয়ের প্রয়োজন। যদি দল তাদের সব ম্যাচ হারে, তবুও অন্য দলের ফলাফল এবং নেট রান রেটের উপর নির্ভর করে তারা কোয়ালিফাই করতে পারে।
পঞ্জাব কিংস (পিবিকেএস)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১৫
- বাকি ম্যাচ: ডিসি (হোম), এমআই (হোম), আরআর (অ্যাওয়ে)
ধর্মশালায় এলএসজিকে হারিয়ে পঞ্জাব তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। দলের কাছে এখন তিনটি ম্যাচ বাকি এবং যদি তাদের মধ্যে দুটিতে জয় পায়, তাহলে প্লেঅফের টিকিট প্রায় নিশ্চিত ধরা হচ্ছে। পিবিকেএসের নেট রান রেট ভালো, যা তাদের অন্য দলের তুলনায় এগিয়ে রাখে। তবে, তিনটি ম্যাচই হারলে তাদের যাত্রা এখানেই শেষ হতে পারে।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (এমআই)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১৪
- বাকি ম্যাচ: জিটি (হোম), পিবিকেএস (অ্যাওয়ে), ডিসি (হোম)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ধারাবাহিক ৬টি ম্যাচ জিতে অসাধারণভাবে ফিরে এসেছে। এই মুহূর্তে দলের নেট রান রেট ১.২৭৪, যা সব দলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। যদি এমআই দুটি ম্যাচও জিতে যায়, তাহলে তাদের প্লেঅফে পৌঁছানো নিশ্চিত। তবে, যদি তিনটি ম্যাচই হারে, তাহলে রান রেটই একমাত্র আশ্রয় হবে। যে কোনও অবস্থাতেই তাদের বড় ব্যবধানে হার থেকে বাঁচতে হবে।
গুজরাট টাইটান্স (জিটি)
এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১৪
বাকি ম্যাচ: এমআই (অ্যাওয়ে), ডিসি (অ্যাওয়ে), এলএসজি (হোম), সিএসকে (হোম)
জিটি এখন এমন এক অবস্থানে রয়েছে যেখানে তারা তাদের চারটি বাকি ম্যাচের মধ্যে দুটি জিতলেও প্লেঅফে পৌঁছাতে পারে। দলের নেট রান রেটও বেশ ভালো, যা তাদের টাই হলে সুবিধা দেবে। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ঘরোয়া সমর্থনও তাদের পক্ষে থাকবে।
দিল্লি ক্যাপিটালস (ডিসি)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১২
- বাকি ম্যাচ: এসআরএইচ (অ্যাওয়ে), পিবিকেএস (অ্যাওয়ে), জিটি (হোম), এমআই (অ্যাওয়ে)
অক্ষর প্যাটেলের নেতৃত্বে দিল্লি ক্যাপিটালস এখনও প্লেঅফের লড়াইয়ে রয়েছে। যদি ডিসি তাদের চারটি বাকি ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে সরাসরি কোয়ালিফাই করতে পারে। তিনটি জয় নিয়েও তাদের শক্তিশালী সুযোগ থাকবে, কিন্তু একটি হার তাদের আশা কমিয়ে দেবে। আগামী ম্যাচগুলিতে শীর্ষ দলের সাথে লড়াই তাদের জন্য দ্বিধাযুক্ত হতে পারে।
কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১১
- বাকি ম্যাচ: সিএসকে (হোম), এসআরএইচ (অ্যাওয়ে), আরসিবি (অ্যাওয়ে)
কেকেআরকে যদি প্লেঅফের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হয়, তাহলে তাদের তিনটি ম্যাচই জিততে হবে এবং অন্য দলের ফলাফলের দিকেও নজর রাখতে হবে। ১৭ পয়েন্টের অবস্থায় তারা তখনই পৌঁছাবে যখন তিনটি ম্যাচই জিতবে, কিন্তু তখনও অন্য দলের পয়েন্ট এবং নেট রান রেটের উপর নির্ভরতা থাকবে।
লখনউ সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ১০
- বাকি ম্যাচ: আরসিবি (হোম), জিটি (অ্যাওয়ে), এসআরএইচ (হোম)
ধারাবাহিক হারের ফলে এলএসজির অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। যদি তারা তাদের তিনটি ম্যাচই বড় ব্যবধানে জিতে যায়, তাহলে তাদের ১৬ পয়েন্টের সুযোগ থাকবে, কিন্তু খারাপ নেট রান রেট তাদের প্লেঅফ থেকে বাদ দিতে পারে। যে কোনও ম্যাচে হার সরাসরি বাদ পড়ার পথ দেখাবে।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ (এসআরএইচ)
- এখন পর্যন্ত পয়েন্ট: ৬
- বাকি ম্যাচ: ডিসি (হোম), কেকেআর (হোম), আরসিবি (অ্যাওয়ে), এলএসজি (অ্যাওয়ে)
এসআরএইচ এখন শুধুমাত্র হিসেবের মাধ্যমে জীবিত। চারটি বাকি ম্যাচ জিতলেও তারা ১৪ পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে। তাদের নেট রান রেটও অত্যন্ত খারাপ (-১.১৯২), যা তাদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। আর একটি হার তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে প্লেঅফের লড়াই থেকে বাদ দিয়ে দেবে।
