গুজরাটে CSK-এর পতাকা নিয়ে বিতর্ক: আইপিএলের ‘ফ্যান-ফার্স্ট’ নীতি প্রশ্নে

গুজরাটে CSK-এর পতাকা নিয়ে বিতর্ক: আইপিএলের ‘ফ্যান-ফার্স্ট’ নীতি প্রশ্নে
সর্বশেষ আপডেট: 26-05-2025

গত রবিবার, অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত GT বনাম CSK ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস তাদের দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের মাধ্যমে গুজরাট টাইটান্সকে ৮৩ রানে পরাজিত করেছে। চেন্নাইয়ের পক্ষ থেকে ডেভাল্ড ব্রেভিস মাত্র ২৩ বলে ৫৭ রানের তুফানী ইনিংস খেলে দলকে শক্তিশালী স্কোরের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।

খেলাধুলার খবর: আইপিএল ২০২৫ এর উত্তেজনা চরমে, কিন্তু রবিবারের গুজরাট টাইটান্স (GT) বনাম চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) ম্যাচটি মাঠের চেয়ে বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত হয়েছে। ম্যাচটি CSK ৮৩ রানে জিতেছে, কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে CSK-এর পতাকা নিয়ে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা।

ম্যাচের সময় স্টেডিয়ামে উপস্থিত অনেক ফ্যান অভিযোগ করেছেন যে তাদেরকে CSK-এর পতাকা নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন একজন ফ্যান সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে CSK-এর পতাকা নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। এই টুইটটি কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং এর পরই বিতর্ক শুরু হয় যে কি একটি দলের ফ্যানদের তাদের প্রিয় দলকে সমর্থন করতে বাধা দেওয়া যায় কি না?

স্টেডিয়ামে হলুদ জার্সির ঢেউ, কিন্তু পতাকায় নিষেধাজ্ঞা?

ম্যাচের আগেই স্টেডিয়ামের দৃশ্য ‘চেপক’-এর স্মৃতি জাগ্রত করে। হাজার হাজার MS ধোনির ভক্ত হলুদ জার্সি পরে উপস্থিত ছিলেন। গুজরাটের এই হোম গ্রাউন্ড সেদিন CSK-এর দুর্গ বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু পতাকা নিয়ে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞার খবরে অনেক ফ্যান হতাশ হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আরেকজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, "সর্বত্র হলুদ রঙ, এমনকি অ্যাওয়ে গ্রাউন্ডও হোম গ্রাউন্ডের মতো দেখাচ্ছে।

আমাকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সিটিও নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি।" এই বক্তব্য কেবলমাত্র অসন্তোষই প্রকাশ করে না, বরং আইপিএল-এর মতো টুর্নামেন্টের ‘ফ্যান-ফার্স্ট’ মনোভাবের উপরও প্রশ্ন তোলে।

আয়োজকদের ভয় কি যুক্তিসঙ্গত?

যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, ঘরোয়া দলের মাঠে যদি প্রতিপক্ষ দলের পতাকার ভিড় হয়, তাহলে মাঠের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে অথবা ঘরোয়া দল মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু আইপিএল-এর মতো বাণিজ্যিক ও বহুজাতিক লীগে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা অনৈতিক নয়, বরং অপ্রয়োজনীয় বলেও মনে করা হচ্ছে।

ফ্যানদের বক্তব্য, টিকিট কিনে যখন আমরা ম্যাচ দেখতে আসি, তখন আমাদের দলের পক্ষে কথা বলার পুরো অধিকার আছে, সেটা পতাকা হোক বা পোস্টার। ম্যাচের চেয়ে বেশি নজর ছিল MS ধোনির উপর। অনুমান করা হচ্ছিল যে এটি হতে পারে তাঁর শেষ ম্যাচ। এই কারণেই পুরো স্টেডিয়ামে ধোনির পোস্টার, ব্যানার এবং হলুদ জার্সি দেখা গেছে। এমতাবস্থায় পতাকা নিষিদ্ধের খবরে ফ্যানদের আরও কষ্ট হয়েছে।

ম্যাচের পর অবসর গ্রহণের বিষয়ে ধোনী বলেছেন, আমি এখনও অবসর নিচ্ছি না এবং বলছি না যে অবশ্যই ফিরবো। আমি ৪-৫ মাসের বিরতি নিয়ে ভাববো। এই বক্তব্য ফ্যানদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে, কিন্তু এটা স্পষ্ট যে প্রতিটি ম্যাচই এখন তাদের কাছে একটা সম্ভাব্য বিদায়ের মতো, এবং এমতাবস্থায় সমর্থকদের আবেগ ও আন্তরিকতাও চরমে।

এই সম্পূর্ণ বিতর্ক আইপিএল আয়োজক ও বিসিসিআই-এর ফ্যান-ফ্রেন্ডলি নীতির উপর প্রশ্ন তুলেছে। কি নিরাপত্তার নামে ফ্যানদের উৎসাহ ও সমর্থনকে দমন করা ঠিক? কি একটি দলের ফ্যানদের তাদের সংখ্যা বেশি বলে বাধা দেওয়া উচিত?

Leave a comment