সুপ্রিম কোর্ট কমেডিয়ান সময় রায়না এবং অন্যান্য ইউটিউবারদের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ডিজিটাল কন্টেন্টের বর্ধিত স্বাধীনতার মধ্যেও কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, জনসম্মুখে করা আপত্তিকর মন্তব্যকে ‘অভিব্যক্তির স্বাধীনতা’র আড়ালে লুকিয়ে রাখা যাবে না।
সম্পূর্ণ ঘটনা কী?
কমেডিয়ান সময় রায়না এবং তার ‘ইন্ডিয়াজ গট ল্যাটেন্ট’ শো-এর সময় ইউটিউবার রণবীর আল্লাহাবাদিয়া পিতামাতার সম্পর্ক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন, যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই বিতর্ক সংসদেও আলোচনার জন্ম দেয়, এর পরে অনেক অভিযোগ দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট এই ঘটনাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং সোমবারের শুনানিতে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের কঠোর বার্তা
শুনানির সময় বিচারপতি সূর্যকান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আজকের তরুণরা নিজেদের অত্যন্ত বুদ্ধিমান মনে করে, কিন্তু তাদের বুঝতে হবে যে, এই আদালতের ক্ষমতাকে হালকাভাবে নেওয়া তাদের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।" সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে জানান যে, সময় রায়না বিদেশে এই ঘটনাকে নিয়ে ঠাট্টা করেছিলেন। এর জবাবে বিচারপতি সূর্যকান্ত তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, "আমরা জানি এই ধরণের লোকদের সাথে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়। ভদ্রতা বজায় রাখুন, নয়তো পরিণতি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন।"
রায়না এবং অন্যান্য ইউটিউবারদের উপর নজরদারি
সময় রায়নার সাথে সাথে আশিস চঞ্চলানি, জসপ্রীত সিং এবং অপূর্বা মখিজার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিতর্কিত এপিসোড ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং রায়না তার চ্যানেল থেকে সমস্ত সংশ্লিষ্ট ভিডিও ডিলিট করার ঘোষণা দিয়েছেন। রণবীর আল্লাহাবাদিয়াও সর্বজনীনভাবে ক্ষমা চেয়েছেন, যদিও সুপ্রিম কোর্ট কিছু সময়ের জন্য তার শো শুটিং-এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
তবে, সোমবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রণবীর আল্লাহাবাদিয়াকে তার পডকাস্ট ‘দ্য রণবীর শো’ পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। কোর্ট ডিজিটাল কন্টেন্টের জন্য স্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে।
সুপ্রিম কোর্ট এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত ‘অভিব্যক্তির স্বাধীনতা’ অসীম নয়। কোর্ট বলেছে যে, ডিজিটাল মাধ্যমে বর্ধমান অনিয়ন্ত্রিত মন্তব্য সমাজের নৈতিক বুনিয়াদকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তাই অভিব্যক্তির স্বাধীনতা এবং নৈতিকতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন।