ভারতের স্বদেশী হালকা যুদ্ধবিমান তেজস মার্ক ১-এ-এর ক্ষমতায় শীঘ্রই আরও বৃদ্ধি ঘটতে চলেছে। আমেরিকার জনারেল ইলেকট্রিক (জিই) কোম্পানি এই মাসেই হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল)-কে প্রথম জিই-৪০৪ ইঞ্জিন হস্তান্তর করতে চলেছে।
নয়াদিল্লি: ভারতের স্বদেশী হালকা যুদ্ধবিমান তেজস মার্ক ১-এ-এর ক্ষমতায় শীঘ্রই আরও বৃদ্ধি ঘটতে চলেছে। আমেরিকার জনারেল ইলেকট্রিক (জিই) কোম্পানি এই মাসেই হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল)-কে প্রথম জিই-৪০৪ ইঞ্জিন হস্তান্তর করতে চলেছে। এই ইঞ্জিন তেজসের ক্ষমতাকে আরও বেশি কার্যকর করে তুলবে।
এই চুক্তিতে ২০২১ সালে স্বাক্ষর করা হয়েছিল, যার মোট ব্যয় ৭১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে, এই ইঞ্জিনের ডেলিভারি দুই বছর দেরিতে হচ্ছে, যার জন্য ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এখন, প্রথম ইঞ্জিন পাওয়ার পর আইএএফ স্বস্তি পাবে।
তেজসের জন্য বড় অর্জন
সূত্রের মতে, প্রথম ইঞ্জিনটি বর্তমানে টেস্ট-বেডে রয়েছে এবং মার্চের শেষের মধ্যে এইচএএল-কে হস্তান্তর করা হবে। এরপর, জিই ২০২৫ সালে আরও ১২টি ইঞ্জিন ভারতে পাঠাবে। পরবর্তী কয়েক বছরে প্রতি বছর ২০টি ইঞ্জিনের ডেলিভারি হবে। এইচএএল এবং জিই যৌথভাবে ভারতেই জিই-৪১৪ ইঞ্জিন তৈরির কাজ করছে, যা ভারতের স্বদেশী উন্নত মিডিয়াম কম্ব্যাট এয়ারক্রাফ্ট (এএমসিএ) প্রকল্পের অংশ হবে। এই পদক্ষেপটি ভারত-আমেরিকা আইসিইটি উদ্যোগের অধীনে নেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য রক্ষা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
রক্ষামন্ত্রণালয় নতুন কমিটি গঠন করেছে
এইচএএল-এর ধীর ডেলিভারি এবং আইএএফ-এর অসন্তোষের প্রেক্ষিতে রক্ষামন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। রক্ষা সচিব আর. কে. সিং-এর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটির প্রধান উদ্দেশ্য হল এমন একটি ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা যাতে বেসরকারি কোম্পানিগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তেজস মার্ক ১-এ-এর পাশাপাশি ভারত তার পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রকল্প এএমসিএ-র জন্যও ইঞ্জিন নির্মাণের দিকে কাজ করছে। ফ্রান্সের রাফেল যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত এম-৮৮ ইঞ্জিন ভারতে তৈরির পরিকল্পনার উপরও আলোচনা হচ্ছে।
প্রথম ইঞ্জিন পাওয়ায় আইএএফ স্বস্তি পাবে
আমেরিকার পাশাপাশি, ফ্রান্সও ভারতকে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এবং ইঞ্জিন নির্মাণে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। সম্প্রতি, আমেরিকা ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ভারত এখনও ফ্রান্সের বিকল্পগুলির উপর বিবেচনা করছে। আইএএফ দীর্ঘদিন ধরে জিই-৪০৪ ইঞ্জিনের ডেলিভারির অপেক্ষা করছিল।
এখন, প্রথম ইঞ্জিন পাওয়ার সাথে সাথে তেজস মার্ক ১-এ বিমানের উৎপাদনে গতি আসবে, যার ফলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এই চুক্তিটি কেবল ভারত-আমেরিকা রক্ষা অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করবে না, বরং আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
