২০২৫ সালের শুরু থেকেই বালুচি আক্রমণ এবং অপারেশন সিন্দুরের ফলে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে ১০০+ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
পাকিস্তান: গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এর প্রভাব বেশি দেখা গেছে বালুচিস্তান এবং LoC (লাইন অফ কন্ট্রোল) এর আশেপাশের এলাকায়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিরাট ক্ষতি সহ্য করতে হচ্ছে।
বালুচিস্তান পাকিস্তানের জন্য মাথাব্যথা
প্রতিবেদনের মতে, কেবলমাত্র বালুচিস্তানে গত ৫ মাসে ৩৫০ টিরও বেশি বড় আকারের সন্ত্রাসী হামলা এবং প্রায় ২০ টি ছোট আকারের মারাত্মক হামলা হয়েছে। এই হামলাগুলি বিদ্রোহী বালুচ গোষ্ঠীগুলির দ্বারা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরক্ষা বাহিনী এই হামলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যার ফলে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অস্থির হয়ে পড়েছে।
ভারত দেখিয়েছে সার্জিকাল নির্ভুলতা
পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর মাধ্যমে একটি সঠিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। এই অভিযানের সময় ভারত ৬-৭ মে রাতে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ৯ টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ঘাঁটিগুলির মধ্যে জৈশ-এ-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বা যেমন সংগঠনের ঘাঁটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এতে ১০০ টিরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
ভারত ১,৪২০ কিমি এলাকাজুড়ে একসাথে প্রতিরোধী হামলা চালিয়েছে
৯-১০ মে ভারত আরও একটি সার্জিকাল অ্যাকশনের অধীনে ১১ টি উচ্চ-মূল্যের লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালিয়েছে। এই লক্ষ্যবস্তুগুলি সবগুলি পাকিস্তান বিমানবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্কিত ছিল। এই হামলা ১,৪২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হয়েছে, যা করাচির মালির থেকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই সময় LoC তে ২৩ টি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন, ১৩ জন সৈন্য নিহত
ভারতীয় হামলায় ১৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় এবং ৩৫-৪০ জন সৈন্য গুরুতরভাবে আহত হয়। LoC এবং সন্ত্রাসবাদী শিবিরে এই অভিযান পাকিস্তানের সামরিক শক্তিকে গভীর ধাক্কা দিয়েছে। এছাড়াও, পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর দুর্বলতাও প্রকাশিত হয়েছে।
অপারেশন সিন্দুরের আগেই পাকিস্তানের অবস্থা খারাপ ছিল
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে অপারেশন সিন্দুরের আগেই পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কেবলমাত্র প্রথম ৫ মাসে ১৯১ জন সাধারণ নাগরিক এবং ৩৯৮ জন সুরক্ষা কর্মী সন্ত্রাসবাদী ঘটনা এবং অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। এই সংখ্যা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
বালুচ বিদ্রোহ এবং সন্ত্রাসবাদী ঘটনায় পাকিস্তান ভেঙ্গে পড়ছে
বালুচিস্তানে চলমান সহিংসতা, আফগান সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশ এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ক্রমবর্ধমান কর্মকাণ্ড পাকিস্তানকে ভেতর থেকে কাঁপিয়ে তুলেছে। সেনাবাহিনী এবং প্রশাসন উভয়েই এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বালুচ বিদ্রোহ এখন কেবল সীমিত এলাকা নয়, বরং একটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে।
ভারতের নতুন নীতি
ভারত এখন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সে কোনও রূপে সন্ত্রাসবাদ সহ্য করবে না। অপারেশন সিন্দুর তার সাম্প্রতিক উদাহরণ, যেখানে ভারত কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়া দেয়নি, বরং সন্ত্রাসের অবস্থানগুলি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ভারতের এই কৌশল এখন কূটনীতির বাইরে গিয়ে কৌশলগত শক্তির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
