প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী G7 সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য কানাডায় উপস্থিত হয়েছেন। এখানে তাঁর সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
G7 সম্মেলন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনটি দেশের সফরে রয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে সাইপ্রাস, কানাডা এবং ক্রোয়েশিয়া। এই সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কানাডায় অনুষ্ঠিত G7 শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে বিশ্বনেতাদের সাথে তাঁর সাক্ষাতের কথা ঠিক হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে মুখোমুখি হবেন। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি এবং ভারতের কঠোর অবস্থানের পর, এই সাক্ষাতকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে নজর রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিদেশ সফর
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনটি দেশ সফরে রয়েছেন, যার মধ্যে সাইপ্রাস, কানাডা এবং ক্রোয়েশিয়া অন্তর্ভুক্ত। এই সফরকে বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে কারণ এটি অপারেশন সিন্দুরের পর তাঁর প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর। এই সময় তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের অবস্থানও স্পষ্ট করবেন।
G7 শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
প্রধানমন্ত্রী মোদী ১৬ এবং ১৭ জুন কানাডার কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিত G7 শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এই সম্মেলন বিশ্বের বৃহৎ গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক শক্তিদের একটি মঞ্চ, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ এবং বাণিজ্যিক অসমতা ইত্যাদি বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। এবার ভারতকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী একই মঞ্চে
G7 সম্মেলনের সবচেয়ে আলোচিত সম্ভাবনা হল প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো কোনও সর্বজনীন মঞ্চে মুখোমুখি হবেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির ঠিক পর। যদিও এখনও স্পষ্ট নয় যে দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে কি না, কিন্তু যদি হয়, তাহলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ঘটনা হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।
ট্রাম্পের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে মধ্যস্থতার দাবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছিলেন যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি ঘটানোয় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি বলেছিলেন যে তিনি দুটি দেশের উপর কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক চাপ সৃষ্টি করে সংঘর্ষবিরতির পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। পাশাপাশি ট্রাম্প নিজেকে এই উদ্যোগের মূল ব্যক্তি বলে দাবি করেছেন এবং এমনকি বলেছেন যে ভবিষ্যতে তিনি ইরান ও ইসরাইলের মধ্যেও শান্তি স্থাপনে ভূমিকা পালন করতে পারেন।
ভারতের প্রতিক্রিয়া: সরল ও কঠোর
ভারত ট্রাম্পের দাবিকে সম্পূর্ণরূপে নাকচ করে দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের ফলে নয় বরং ভারতীয় সেনা এবং সরকারের কৌশলগত চিন্তাভাবনা এবং সামরিক প্রস্তুতির ফল। বিদেশ মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উভয়ই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভারত কোনও তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতা মেনে নেয় না এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে দ্বিপাক্ষিক বিষয়।
সংঘর্ষবিরতির পটভূমি
অপারেশন সিন্দুরের পর ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে দেশের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনও আপোষ করা হবে না। পাকিস্তানের দিক থেকে অব্যাহত অনুপ্রবেশ এবং সন্ত্রাসবাদী ঘটনার জবাবে ভারত কঠোর সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। এরপর সংঘর্ষবিরতি নিয়ে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা ছিল সামরিক কৌশল এবং কূটনৈতিক চাপের মিশ্র ফলাফল, কোনও মধ্যস্থতার নয়।
কানাডায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর অগ্রাধিকার
G7 সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সাথেও সাক্ষাত করতে পারেন, যার মধ্যে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অন্তর্ভুক্ত। ধারণা করা হচ্ছে এই সাক্ষাতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন এবং ভারতের Zero Tolerance Policy on Terrorism এর মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।