ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিকে লক্ষ্য করে আঘাত হানে। জবাবে ইরান তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। জাতিসংঘের কাছে জরুরি বৈঠকের দাবি জানানো হয়েছে। উত্তেজনা পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে চলেছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক মোড়ে পৌঁছেছে। ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনায় হামলা পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনার নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। ইরান এটিকে “তাদের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছে এবং ইসরায়েলকে এর “প্রতিশোধমূলক জবাব” দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ইরানের কঠোর অবস্থান: জাতিসংঘের কাছে জরুরি বৈঠকের দাবি
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের সীমান্ত ও সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। তিনি জাতিসংঘে চিঠি লিখে নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) জরুরি বৈঠক আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন। আরাঘচি বলেছেন, “ইসরায়েল সব লাল রেখা অতিক্রম করেছে। এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ করা উচিত।”
জাতিসংঘের কাছ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রত্যাশা
ইরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা জাতিসংঘের কাছ থেকে এই ঘটনার নিন্দা এবং ইসরায়েলকে হামলার জন্য দায়ী করা হবে বলে আশা করে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, ইসরায়েলের এই আগ্রাসী মনোভাব সমগ্র অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতে পারে।
নেতানিয়াহুর জবাব: হামলা অব্যাহত থাকবে
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার কৌশলে অটল থেকে বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা রোধ করার জন্য তার দেশ সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে থাকবে। তিনি বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইরানের প্রধান সামরিক ঘাঁটি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার এবং উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে।
“এখনও কিছু বাকি আছে”—নেতানিয়াহু নেতানিয়াহু কঠোর বক্তব্যে বলেছেন, “এটি শুধুমাত্র শুরু। তাদের (ইরানকে) এখনও জানা নেই পরবর্তীতে কী হবে। ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা থেমে থাকব না।” এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ইসরায়েল এই সংঘাতকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইরানের পাল্টা আঘাত: তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর, ইরান শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে, পাশাপাশি কিছু ভবনও গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান এই পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে।
খামেনীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনী এর আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে ইসরায়েলকে প্রতিটি হামলার দাম দিতে হবে। তার বক্তব্য, এখন সময় এসেছে যখন ইরানের কৌশল শুধুমাত্র প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং আক্রমণাত্মক অবস্থান গ্রহণ করা।