পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির ইরানে ভারতের বিরুদ্ধে সমর্থন চেয়েছিলেন। কিন্তু খামেনেই শান্তির কথা বলেছেন এবং যেকোনো পক্ষপাত থেকে স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন।
পাকিস্তান: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির বর্তমানে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থান করছেন। ভারতের সাথে সম্প্রতি সংঘর্ষ এবং কূটনৈতিক ঝাঁকুনির পর পাকিস্তান এখন ইরানের দ্বারে সাহায্যের আবেদন নিয়ে উপস্থিত। কিন্তু ইরান পাকিস্তানের আশায় ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই ভারত-পাক বিরোধে স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি উভয় দেশের মধ্যে শান্তির আশা করেন এবং যুদ্ধবিরতির সমর্থন করেন। অর্থাৎ, পাকিস্তানের ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকে খামেনেই সম্পূর্ণরূপে নাকচ করে দিয়েছেন।
ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টায় ব্যর্থ পাকিস্তান
পাকিস্তানের আশা ছিল ইরান তার পক্ষে দাঁড়াবে এবং ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু তা হয়নি। ইরান পাকিস্তানকে কোনো দৃঢ় সমর্থন দেয়নি, বরং শান্তি ও আলোচনার উপর জোর দিয়েছে। ইরানী মিডিয়া IRNA-এর প্রতিবেদনের মতে, রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ান ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ইরান চায় ভারত ও পাকিস্তান পারস্পারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করুক এবং এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুক।
ভারত ও ইরানের সম্পর্কের উপর পাকিস্তানের নজর
বাস্তবে, ভারত ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। চাবাহার বন্দর থেকে শুরু করে শক্তি প্রকল্প পর্যন্ত, উভয় দেশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে একত্রে কাজ করেছে। পাকিস্তান সবসময় ভারত-ইরানের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল।
এটাই কারণ পাকিস্তানের চেষ্টা থাকে ইরানকে নিজের দিকে টেনে ভারতকে ঘেরাও করা। কিন্তু ইরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রের অংশীদার হবে না।
পাকিস্তানের কূটনৈতিক পরাজয় ও ইরানের অবস্থান
ভারতের সাথে সংঘর্ষের পর পাকিস্তানের আশা ছিল মুসলিম দেশগুলি তার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ইরানসহ অধিকাংশ মুসলিম দেশ পাকিস্তানকে খোলাখুলি সমর্থন করেনি। খামেনেইও তার আলোচনায় ভারতের বিরুদ্ধে কোনো সরাসরি অভিযোগ আনেননি এবং পাকিস্তানের আশায় পানি ঢেলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন উভয় দেশকে তাদের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
ইরান-পাকিস্তানের সম্পর্ক: অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ নয়
উল্লেখ্য, পাকিস্তান ও ইরানের সম্পর্ক সবসময়ই শীতল ছিল। গত বছর ইরান পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, যার পর দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছিল। ইরান পাকিস্তানকে নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকে, বিশেষ করে পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে নিয়ে। অন্যদিকে ভারত ও ইরানের সম্পর্ক কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক উভয় স্তরেই শক্তিশালী।