ইরানে ইসরাইলি হামলার সময় তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দুই কাশ্মীরি ছাত্র আহত হয়েছে। তাদের অবস্থা স্থির। ভারত সরকার উদ্ধারের জন্য আজারবাইজান ও তুর্কমেনিস্তানের পথ খুঁজছে।
Israel Iran Conflict: ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলায় দুই ভারতীয় ছাত্র আহত হয়েছে। এই দুই ছাত্রই জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশোনার জন্য ইরানে ছিলেন।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজে লেগেছে। দুই ছাত্রকে প্রথমে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে উন্নত সুরক্ষার জন্য রামসার (Ramser) শহরে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে তাদের অবস্থা স্থির বলে জানা গেছে।
বিদেশি ছাত্রদের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়
এই হামলা এমন সময়ে ঘটেছে যখন ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমগ্র সংঘাতের প্রভাব এখন সাধারণ নাগরিকদের, বিশেষ করে বিদেশি ছাত্রদের উপর পড়তে শুরু করেছে। তেহরানে পড়াশোনা করা আন্তর্জাতিক ছাত্ররা, বিশেষ করে ভারতীয় ছাত্ররা, আতঙ্কিত।
এই ঘটনার পর ভারত সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।
ভারত সরকারের কৌশল: ‘পূর্ণপ্রমাণ উদ্ধার পরিকল্পনা’
ভারত সরকার এই পরিস্থিতিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে ইরানে অবস্থানরত ভারতীয়দের নিরাপদে উদ্ধার করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই অভিযানের অধীনে সরকার তিনটি বিকল্প পথে কাজ করছে যাতে ইরানে আটকে থাকা ভারতীয়দের কোনো ঝুঁকি ছাড়াই বাইরে আনা যায়।
সূত্রের মতে, উদ্ধারের জন্য আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও কিছু বিমানপথ চিহ্নিত করা হয়েছে যার মাধ্যমে উদ্ধার সম্পন্ন করা যাবে।
দূতাবাস পরামর্শ জারি করেছে
তেহরান ও অন্যান্য শহরে বসবাসকারী ছাত্র ও নাগরিকদের ভারতীয় দূতাবাস বলেছে, তারা যেন আতঙ্কিত না হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ধরণের ভ্রমণ এড়িয়ে চলুক। ছাত্রদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রাখে এবং নিরাপদ স্থানে থাকে।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় অফ মেডিকেল সায়েন্সেস, যেখানে এই হামলা হয়েছে, সেখানে এখন নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ছাত্রদের হোস্টেল ও ক্লাসরুম এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে যে তারা ছাত্রদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার বৃদ্ধি
এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটেছে যখন ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি ইসরাইলি এয়ার স্ট্রাইক ও ইরানি প্রতিশোধের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। তেহরান ও তার আশেপাশের এলাকায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কা রয়েছে, যার ফলে বিদেশি নাগরিকরা বিশেষ করে অস্বস্তি ও অনিরাপদ বোধ করছে।