আরজেডি নেতা এবং বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব আবারও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি এনডিএ-র উপর ব্যঙ্গ করে বলেছেন যে, বিহারে এখন এনডিএ-র অর্থ ‘রাষ্ট্রীয় দামাদ আয়োগ’ হয়ে গেছে।
বিহার রাজনীতি: রাজনৈতিক আক্রমণ এবং শব্দ-তীরের মাধ্যমে সর্বদা আলোচনায় থাকা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব আবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং এনডিএ সরকারের উপর তীব্র আক্রমণ করেছেন। এবার তিনি এনডিএ-র পুরো নাম বদলে “ন্যাশনাল দামাদ আয়োগ” বলে অভিহিত করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, মোদী সরকারে শুধুমাত্র ‘দামাদ’ এবং আত্মীয়স্বজনদেরই সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যখন সাধারণ জনগণ মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং অপরাধের শিকার হচ্ছে।
এনডিএ: ন্যাশনাল দামাদ আয়োগ – তেজস্বীর ব্যঙ্গ
তেজস্বী যাদব তার বক্তব্যে বলেছেন, বিহারে এখন এনডিএ-র অর্থ ‘ন্যাশনাল দামাদ আয়োগ’ হয়ে গেছে। মোদীজী তার সহযোগীদের সকল দামাদ এবং আত্মীয়স্বজনদের ক্ষমতা এবং পদে বসিয়ে দিয়েছেন। জনগণের সমস্যার কথা আসলে তাদের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। তেজস্বী অভিযোগ করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী জনগণকে কর্মসংস্থান, মূল্যবৃদ্ধি থেকে মুক্তি অথবা সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে শুধুমাত্র ধর্মীয় দ্বিমুখীকরণ এবং হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি করছেন।
তেজস্বী যাদব আবারও পরিবারবাদ নিয়ে বিজেপির দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, বিজেপি বারবার বিরোধীদের উপর পরিবারবাদী অভিযোগ করে, কিন্তু নিজেদের দল এবং জোটে পরিবারবাদ খোলাখুলিভাবে বিকশিত হচ্ছে। বিহার সরকারে আজ ৫০% এর বেশি মন্ত্রী পরিবারবাদী সম্পর্কিত। নিজে বিজেপির অনেক নেতা আছেন যারা কোনও বড় নেতার ছেলে, ভাই, ভাগ্নে। এই দ্বিমুখী চরিত্র এখন জনগণ চিনে ফেলেছে।
বিহারে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন
তেজস্বী যাদব বিহারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন যে, রাজ্যে অপরাধ বেড়ে গেছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের নেতারা নির্বাচনী সমাবেশ এবং রোডশোতে ব্যস্ত। বিহারে প্রতিদিন গড়ে ২০০ রাউন্ড গুলি চলছে। মানুষ ভয়ের ছায়ায় বাস করছে। সম্প্রতি একজন যুবক শহীদ হয়েছেন, কিন্তু মোদীজী যখন রোডশো করতে এসেছিলেন, তখন তিনি সেই শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোকেও প্রয়োজনীয় মনে করেননি। এটি অসংবেদনশীলতা প্রকাশ করে যে সরকারের শুধুমাত্র নির্বাচন জেতার প্রতি আগ্রহ আছে, জনগণের প্রতি নয়।
বিহারবাসীদের ‘রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড’ বলে অভিহিত
তেজস্বী যাদব তার বক্তব্যে বিহারের জনগণকে দেশের সুরক্ষা এবং উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন: যখনই দেশের সীমান্ত রক্ষার কথা আসে, তখন বিহারের যুবকরা সবচেয়ে এগিয়ে থাকে। চাই সেটা সেনা হোক, পুলিশ হোক বা অন্য কোনও সেবা – বিহারের মানুষ দেশপ্রেমে সবচেয়ে এগিয়ে থাকে। কিন্তু যখন তাদের অধিকারের কথা আসে, তখন তাদের উপেক্ষা করা হয়।
তেজস্বী যাদবের এই তীব্র আক্রমণকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ২০২৫ সালের সম্ভাব্য নির্বাচনী সমীকরণের সাথে যুক্ত করে দেখছেন। একদিকে তিনি বিজেপির বংশবাদ বিরোধী প্রচারের পোড় খোলার চেষ্টা করছেন, অন্যদিকে তিনি যুবকদের এবং বিহারের ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ কাজে লাগানোর কৌশলও তৈরি করছেন।