তেজ প্রতাপ যাদবের ফেসবুক পোস্ট থেকে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনুষ্কা যাদবের সাথে ১২ বছরের সম্পর্কের দাবির পর লালু যাদব তেজ প্রতাপকে ৬ বছরের জন্য দল এবং পরিবার থেকে বহিষ্কার করেছেন।
বিহার নিউজ: লালু যাদবের পরিবার ভারতীয় রাজনীতির এমন একটি নাম যা যতটা নিজের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত, ততটাই নিজের বিতর্কের জন্যও শিরোনামে থাকে। কখনও চারা ঘোটালার কথা, কখনও বেনামী সম্পত্তির কথা, আবার কখনও তেজ প্রতাপ যাদবের ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা— বিতর্কের ধারা থামার নামই নেয় না। শেষ সময়ের ঘটনায় আবারও লালু যাদব পরিবার আলোচনায়, কারণ তেজ প্রতাপ যাদবের নতুন একটি বিতর্ক।
২৫ মে ২০২৫ তে তেজ প্রতাপ যাদব তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি অনুষ্কা যাদবের সাথে ১২ বছর ধরে সম্পর্কে থাকার দাবি করেছিলেন। এই পোস্টের পর না শুধুমাত্র রাজনীতিতে ভূমিকম্প আসে, বরং তার পরিবারেও ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়। লালু যাদব নিজেই কঠোর অবস্থান নিয়ে তেজ প্রতাপকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেন এবং পরিবার থেকেও আলাদা করে দেন।
এই সমস্ত বিতর্কের পর তেজ প্রতাপ স্পষ্টীকরণ দিয়েছেন যে তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গিয়েছিল এবং এই পোস্ট তাকে এবং তার পরিবারকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু লালু যাদব এটিকে অপরিপক্ক এবং নৈতিকতার বিরুদ্ধে আচরণ বলে মনে করে তেজ প্রতাপের বিরুদ্ধে এই কঠোর পদক্ষেপ নেন।
১. চারা ঘোটালার: লালু যাদবের সবচেয়ে বড় বিতর্ক
চারা ঘোটালার ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম আলোচিত ঘোটালার মধ্যে একটি। ১৯৯০-এর দশকে এই ঘোটালার কথা প্রকাশ্যে আসে, যেখানে অভিযোগ ছিল যে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন লালু যাদব ৯৫০ কোটি টাকার সরকারি অর্থের অপচয় করেছেন। এই টাকা গরুর খাবারের নামে তুলে নেওয়া হয়েছিল। তদন্তের পর লালু যাদবকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে কারাভোগ করতে হয়। এই ঘোটালার জন্য তাকে ১৯৯৭ সালে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকেও পদত্যাগ করতে হয়।
২. বিহারে 'জঙ্গল রাজ'-এর অভিযোগ
লালু যাদবের মুখ্যমন্ত্রী আমল (১৯৯০-১৯৯৭) কে প্রায়শই 'জঙ্গল রাজ' বলা হয়। এই সময়ে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল। অপহরণ এবং অপরাধের ঘটনা চরমে পৌঁছেছিল। সমালোচকদের দাবি ছিল যে লালু যাদব নিজের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য অপরাধীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। এর ফলে জনগণের সরকারের উপর বিশ্বাস কমতে থাকে।
৩. মীসা ভারতীর ফার্মহাউস বিতর্ক
লালু যাদবের কন্যা মীসা ভারতীর নামও বিতর্কের সাথে জড়িত। ২০১৭ সালে তাঁর দিল্লির ফার্মহাউসে ইডি অভিযান চালায়। অভিযোগ ছিল যে এই সম্পত্তি বেনামী এবং তা শেল কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছিল। এই ঘটনা মীসা ভারতীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকেও প্রভাবিত করে।
৪. বেনামী সম্পত্তি মামলায় লালু পরিবার
২০১৭ সালে লালু যাদবের পরিবারের উপর বেনামী সম্পত্তির অভিযোগ আসে। আয়কর বিভাগ এবং ইডি তদন্তে দেখে যে লালু যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং সন্তানরা অবৈধভাবে জমি এবং ভবন কিনেছেন। এই ঘটনা পরিবারের ইমেজে ব্যাপক ক্ষতি করে এবং দুর্নীতির অভিযোগকে আরও জোরদার করে।
৫. তেজ প্রতাপ যাদবের বিতর্ক: ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা
তেজ প্রতাপ যাদবের ব্যক্তিগত জীবনও সবসময় বিতর্কের মধ্যে ছিল। তার দাম্পত্য জীবন এবং স্ত্রী ऐश्वर्या রায়ের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি বেশ আলোচনায় ছিল। তেজ প্রতাপের আচরণ, জনসমক্ষে ঝগড়া এবং আবেগপ্রবণ বক্তব্য প্রায়শই মিডিয়ার শিরোনামে থাকে। এবার অনুষ্কা যাদবের সাথে ১২ বছরের সম্পর্কের দাবি আরেকটি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।