স্বামী প্রসাদ মৌর্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ: আজাদ সমাজ পার্টিতে যোগদানের সম্ভাবনা

স্বামী প্রসাদ মৌর্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ: আজাদ সমাজ পার্টিতে যোগদানের সম্ভাবনা
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি আবার একবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর এবার কেন্দ্রে আছেন স্বামী প্রসাদ মৌর্য। বহুজন সমাজ পার্টি, ভারতীয় জনতা পার্টি এবং সমাজবাদী পার্টি—এই তিনটি প্রধান দলে রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করে আসা মৌর্য আবারও দল বদলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।

লখনউ: উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে আবারও চাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ বহু দলের সদস্য ছিলেন এমন প্রাক্তন কেবিনেট মন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য আবারও রাজনৈতিক পক্ষ বদল করতে পারেন। বর্তমানে তিনি তার নিজস্ব "জনতা পার্টি"-র সভাপতি, কিন্তু সম্প্রতি রাজধানী লখনউতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের পর নতুন সমীকরণের অনুমান বেড়ে গেছে।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বামী প্রসাদ মৌর্য এবং ভীম আর্মি-র প্রধান ও আজাদ সমাজ পার্টি-র নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ লখনউয়ের একটি ব্যক্তিগত স্থানে দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। এই সাক্ষাতের সময় উভয় নেতা সামাজিক ন্যায়, দলিত এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণীগুলিকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা—এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

লখনউতে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের ফলে চাঞ্চল্য বৃদ্ধি

সম্প্রতি লখনউতে স্বামী প্রসাদ মৌর্য এবং আজাদ সমাজ পার্টি-র সভাপতি চন্দ্রশেখর আজাদের মধ্যে দীর্ঘ সাক্ষাতের ফলে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন দিকপ্রাপ্তি ঘটেছে। এই সাক্ষাত যদিও ব্যক্তিগত স্থানে হয়েছে, কিন্তু এর প্রভাব জনসাধারণের রাজনীতিতে প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, উভয় নেতার মধ্যে সামাজিক ন্যায়, দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর সমস্যা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

কি আজাদ সমাজ পার্টি হবে পরবর্তী পদক্ষেপ?

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে যে, স্বামী প্রসাদ মৌর্য শীঘ্রই চন্দ্রশেখর আজাদের দলে যোগ দিতে পারেন। আজাদ সমাজ পার্টি তাঁকে উত্তরপ্রদেশে বৃহৎ সাংগঠনিক দায়িত্ব দিতে পারে, যার ফলে দলটি স্থানীয় পর্যায়ে শক্তিশালী হবে। মৌর্য একজন অভিজ্ঞ পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর নেতা হিসেবে পরিচিত, যাঁর দলিত এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মধ্যে ভালো সমর্থন রয়েছে। তাই যদি তিনি আসপা (কানশীराम)-তে যোগ দেন, তাহলে এটি দলের জন্য একটি বৃহৎ কৌশলগত অগ্রগতি হতে পারে।

সপা-বসপার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে

স্বামী প্রসাদ মৌর্যের আজাদ সমাজ পার্টিতে যোগদানের ফলে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি উভয়কেই ক্ষতি স্বীকার করতে হতে পারে। মৌর্যের প্রভাব অনেক আসনে রয়েছে, বিশেষ করে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে। সমাজবাদী পার্টির সাথে তাঁর সাম্প্রতিক সম্পর্ক যদিও বেশি সফল হয়নি, কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব এখনও অনেক জেলায় অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

স্বামী প্রসাদ মৌর্যের এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক জীবন

স্বামী প্রসাদ মৌর্যের রাজনৈতিক জীবন অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তিনি বহুজন সমাজ পার্টি থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে মায়াবতীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিগণিত হতেন।

  • ২০১২ সালে তিনি পড়ৌনা বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করে বসপা সরকারে কেবিনেট মন্ত্রী হন।
  • তিনি ১৩তম, ১৪তম এবং ১৫তম বিধানসভায়ও বিধায়ক ছিলেন।
  • বসপায় দুই দশক কাটানোর পর ২০০৬ সালে তিনি দল ছেড়ে দেন।
  • এরপর ২০১৭ সালে তিনি ভাজপার পতাকা তুলে নেন এবং যোগী সরকারে মন্ত্রী হন।
  • ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ठीक আগে তিনি ভাজপা থেকে পদত্যাগ করে সপা-তে যোগ দেন এবং ফাজিলনগর থেকে নির্বাচনে লড়াই করেন, কিন্তু পরাজিত হন।

জনতা পার্টির সভাপতি কিন্তু প্রভাব সীমিত

ভাজপা এবং সপা ছেড়ে স্বামী প্রসাদ মৌর্য তাঁর নতুন দল "জনতা পার্টি" গঠন করেন। তবে এই দল এখনও পর্যন্ত কোনও বৃহৎ জনসমর্থন তৈরি করতে পারেনি। यही কারণে মৌর্য এখন কোনও শক্তিশালী এবং সক্রিয় সংগঠনের সন্ধান করছেন, যা তাঁকে সামাজিক ন্যায়ের তাঁর এজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি স্বামী প্রসাদ মৌর্য এবং চন্দ্রশেখর আজাদের জুটি হয়, তাহলে এটি উত্তরপ্রদেশের জাতিগত রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

Leave a comment