সুপ্রিম কোর্টের কঠোর রায়: শিশু পাচারে জড়িত হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল

সুপ্রিম কোর্টের কঠোর রায়: শিশু পাচারে জড়িত হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল
সর্বশেষ আপডেট: 15-04-2025

১৫ই এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট শিশু পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর রায় দিয়েছে। শিশু চুরির সাথে জড়িত হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অভিযুক্তদের জামিন বাতিল করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট: শিশু পাচারের (Child Trafficking) গুরুতর ঘটনায় সোমবার সুপ্রিম কোর্ট একটি বৃহৎ ও কঠোর রায় দিয়েছে। কোর্ট বলেছে, যদি কোনও হাসপাতাল থেকে নবজাতক শিশু চুরি হয়, তাহলে রাজ্য সরকারকে প্রথমেই ওই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে দিতে হবে। কোর্ট এটি রোধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং অভিযুক্তদের সমাজের জন্য বিপজ্জনক বলে আখ্যায়িত করেছে।

বেনারসের মামলা থেকে শুরু, দেশব্যাপী চক্র পর্যন্ত পৌঁছেছে ঘটনা

এই মামলা উত্তরপ্রদেশের বেনারস ও আশপাশের হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনার সাথে সম্পর্কিত। ২০২৪ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এই ঘটনার অভিযুক্তদের জামিন দিয়েছিল। শিশুদের পরিজনরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। শুনানির সময় কোর্ট এর আওতা বৃদ্ধি করে NHRC (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) এবং Indian Institute of Development থেকে প্রতিবেদন চেয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট জামিন বাতিল করেছে

বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা-প্রধান বেঞ্চ সকল অভিযুক্তদের জামিন বাতিল করে দিয়েছে। কোর্ট বলেছে, এই চক্রটি দেশব্যাপী কাজ করছে এবং চুরি হওয়া শিশুরা পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্য থেকে উদ্ধার হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনা করে বলেছে, হাইকোর্টের জামিন আদেশকে চ্যালেঞ্জ না করা একটি অবহেলার পরিচায়ক।

রাজ্য সরকারগুলিকে কঠোর নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সকল রাজ্য সরকার Indian Institute of Development-এর পরামর্শগুলি বাস্তবায়ন করবে। কোর্ট বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছে, যদি কোনও হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ তার লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে এবং এই ধরণের অপরাধ রোধে সাহায্য করবে।

মা-বাবাদের সাবধানতার পরামর্শ

কোর্ট সকল মা-বাবাকে অনুরোধ করেছে হাসপাতালে তাদের নবজাত শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন থাকতে। পাশাপাশি, দেশব্যাপী সকল হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিশু পাচারের সাথে সম্পর্কিত সকল অনিষ্পন্ন মামলার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে ৬ মাসের মধ্যে ট্রায়াল কোর্টকে রায় দেওয়ার নির্দেশ দিতে।

শিশু কেনাকাটা করা ব্যক্তিদের উপরও কঠোরতা

সুপ্রিম কোর্ট যারা চুরি হওয়া শিশুদের ইচ্ছাকৃতভাবে কিনেছে তাদেরও জামিন বাতিল করে দিয়েছে। কোর্ট বলেছে, “যদি কেউ নিঃসন্তান হয়, এর অর্থ এই নয় যে সে চুরি হওয়া শিশু কিনবে। এটি অপরাধ এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকারক।”

কোর্টের আবেগঘন মন্তব্য

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, "যদি কোনও মা-বাবার সন্তান মারা যায়, তাহলে তারা ভাবে যে সে ঈশ্বরের কাছে চলে গেছে, কিন্তু যখন সন্তান চুরি হয়, তখন সে অজ্ঞাত হাতে থাকে। এই দুঃখ বর্ণনার বাইরে।"

Leave a comment