এসির গ্যাস রিফিল: খরচ, গ্যাসের ধরণ এবং স্মার্ট গ্রাহকের টিপস

এসির গ্যাস রিফিল: খরচ, গ্যাসের ধরণ এবং স্মার্ট গ্রাহকের টিপস
সর্বশেষ আপডেট: 15-04-2025

গ্রীষ্মকাল আসতেই বাড়িঘর এবং অফিসে এসি চালানো সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রা যত বাড়ে, এসির চাহিদাও ততই বেড়ে যায়। কিন্তু যদি আপনার এসি আগের মতো ঠান্ডা না করে, তাহলে এর পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। কখনও কখনও কারণ হয় ময়লা ফিল্টার বা সময়মতো সার্ভিস না করা, আবার কখনও কখনও আসল কারণ হয় – এসির গ্যাস লিক হয়ে যাওয়া। যদি গ্যাস লিক হয়ে যায়, তাহলে আপনাকে এসির গ্যাস রিফিল করাতে হবে।

কিন্তু, আপনি কি জানেন এই প্রক্রিয়ায় কত খরচ হয় এবং এসিতে কোন গ্যাস ব্যবহার করা হয়? অনেক লোক এই তথ্যের অভাবে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করে ফেলে বা কোনও স্থানীয় টেকনিশিয়ানের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়। তাই আজ আমরা আপনাকে এসির গ্যাস রিফিল সংক্রান্ত সকল প্রয়োজনীয় তথ্য জানাব – যাতে আপনি একজন স্মার্ট গ্রাহক হতে পারেন এবং কেউ আপনাকে প্রতারণা করতে না পারে।

এসিতে ব্যবহৃত গ্যাস

১. R22 গ্যাস: এটি পুরানো এসি মডেলগুলিতে পাওয়া যায়। এখন ধীরে ধীরে এর ব্যবহার কমে যাচ্ছে কারণ এটি ওজোন স্তরকে ক্ষতি করে।
২. R410A গ্যাস: এটি কিছুটা উন্নত সংস্করণ কিন্তু এর পরিবেশগত প্রভাব এখনও রয়েছে।
৩. R32 গ্যাস: বর্তমানে বেশিরভাগ নতুন মডেলগুলিতে R32 গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, এনার্জি দক্ষতার ক্ষেত্রেও উন্নত বলে মনে করা হয়।

এসির ঠান্ডা কম হওয়ার পিছনে আসল কারণগুলি

• ময়লা ফিল্টার – যদি আপনি অনেক দিন ধরে এসির পরিষ্কার না করে থাকেন, তাহলে ধুলোবালি জমে এয়ারফ্লোতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
• সার্ভিসিংয়ে দেরি – প্রতি ঋতুতে এসির সার্ভিসিং করা প্রয়োজন। যদি সময়মতো সার্ভিস না হয়, তাহলে ঠান্ডা কমে যেতে পারে।
• কম্প্রেসার বা মোটরের সমস্যা – কম্প্রেসারের ত্রুটির মতো প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঠান্ডার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
• গ্যাস লিক – যদি এসির গ্যাস লিক হয়, তাহলে ঠান্ডা সম্পূর্ণরূপে প্রভাবিত হয়। এটাই কারণ যে অনেক সময় গ্যাস রিফিল করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

এসিতে গ্যাস ভরাতে কত খরচ হয়

১.৫ টন স্প্লিট এসিতে সাধারণত ১.৫ থেকে ২ কিলোগ্রাম গ্যাসের প্রয়োজন হয়। এই হিসেবে আপনার ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
• R22 গ্যাস: ৪০০-৬০০ টাকা প্রতি ১০০ গ্রাম
• R410A গ্যাস: ৫০০-৭০০ টাকা প্রতি ১০০ গ্রাম
• R32 গ্যাস: ৬০০-৮০০ টাকা প্রতি ১০০ গ্রাম

কি টেকনিশিয়ান আপনার খরচ বাড়াতে পারে?

স্থানীয় টেকনিশিয়ান প্রয়োজন ছাড়াই গ্যাস ভরার পরামর্শ দেয় বা গ্যাসের সঠিক দামের চেয়ে বেশি চার্জ করে। তাই এই বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্য রাখুন:
লিক ডিটেকশন অবশ্যই করান: গ্যাস ভরানোর আগে দেখে নিন যে গ্যাস কোথা থেকে লিক হচ্ছিল এবং সেই জায়গাটি ঠিক করা হয়েছে কিনা।
বিল এবং গ্যাসের বিস্তারিত তথ্য চান: টেকনিশিয়ানের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চান যে কোন গ্যাস কত পরিমাণে ভরা হয়েছে।
খ্যাতিমান ব্র্যান্ড বা সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছ থেকেই কাজ করান: স্থানীয় টেকনিশিয়ানের পরিবর্তে কোম্পানির অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিস করা বেশি নিরাপদ।

গ্যাস রিফিল কখন কখন করানো উচিত?

এসির গ্যাস সাধারণত বছরের পর বছর চলে যদি কোন লিকেজ না হয়। যদি আপনার এসি সঠিকভাবে ঠান্ডা করে, তাহলে গ্যাস রিফিল করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি গ্যাস লিক হয় তাহলে তা অবিলম্বে ঠিক করা প্রয়োজন নয়তো কম্প্রেসারের উপর প্রভাব পড়তে পারে এবং মেরামতের খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে। যদি আপনার এসি সঠিকভাবে ঠান্ডা না করে তাহলে প্রথমে সার্ভিসিং করান।

তবুও যদি সমস্যা থাকে, তাহলে কোনও নির্ভরযোগ্য টেকনিশিয়ানের কাছে গ্যাস পরীক্ষা করান। প্রয়োজন হলেই গ্যাস ভরান এবং অবশ্যই জেনে নিন যে কোন ধরণের গ্যাস ভরা হচ্ছে এবং কত পরিমাণে। এভাবে করলে আপনি শুধু টাকা বাঁচাতে পারবেন না, একইসাথে কারো ফাঁদেও পড়বেন না।

```

Leave a comment