ইলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্ভল মসজিদ-মন্দির বিরোধে মসজিদ কমিটির আপত্তি খারিজ

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্ভল মসজিদ-মন্দির বিরোধে মসজিদ কমিটির আপত্তি খারিজ
সর্বশেষ আপডেট: 19-05-2025

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্ভল মসজিদ-হরিহর মন্দির বিরোধে মসজিদ কমিটির রিভিশন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জরিপের আদেশকে সঠিক বলে মনে করেছে, এখন মামলা জেলা আদালতে এগিয়ে যাবে।

UP News: সম্ভলের জামা মসজিদ এবং হরিহর মন্দিরের বিরোধে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি বড় রায় দিয়েছে। আদালত মসজিদ কমিটির রিভিশন পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে, যার ফলে মসজিদ কমিটি বড় ধাক্কা খেয়েছে এবং এখন জরিপের পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে। এই মামলা গত কয়েক মাস ধরে শিরোনামে ছিল এবং এর সাথে জড়িত আইনি লড়াইও চলছিল। এই রায়ের পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্ভলের জেলা আদালতেই হবে।

মসজিদ কমিটির আপত্তি খারিজ

সম্ভল মসজিদ-হরিহর মন্দির বিরোধে মসজিদ কমিটি ইলাহাবাদ হাইকোর্টে ১৯ নভেম্বর ২০২৪-এর সিভিল কোর্টের জরিপ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। মসজিদ কমিটির যুক্তি ছিল যে নিম্ন আদালত মুসলিম পক্ষকে তাদের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ না দিয়েই এডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করেছে, যা একতরফা এবং ভুল। এর বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশন পিটিশন দাখিল করেছিল।

কিন্তু ইলাহাবাদ হাইকোর্ট মসজিদ কমিটির এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এবং সিভিল কোর্টের জরিপ আদেশকে সঠিক বলে ঘোষণা করেছে। বিচারপতি রোহিত রঞ্জন আগরওয়ালের বেঞ্চ মুসলিম পক্ষের যুক্তি গ্রহণ করেনি এবং বলেছে যে আদালত সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। এর ফলে এখন সম্ভলের শাহী মসজিদের জরিপের পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং মামলা জেলা আদালতে এগিয়ে যাবে।

পূর্ববর্তী শুনানি এবং আদালতের প্রতিক্রিয়া

ইলাহাবাদ হাইকোর্টে এই মামলার বিতর্ক ১৩ মে ২০২৫-এ শেষ হয়েছিল। আদালত সে সময় রায় স্থগিত রেখেছিল। এছাড়াও, ৮ জানুয়ারী ২০২৫-এ হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করে সিভিল কোর্টের জরিপ আদেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যাতে মামলার গভীরতর তদন্ত করা যায়।

২৮ এপ্রিল ২০২৫-এর শুনানিতে আদালত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব জরিপ (ASI) কে নির্দেশ দিয়েছিল যে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জরিপ এবং রিপোর্টে তাদের জবাব দাখিল করতে হবে। বিরোধপূর্ণ স্থানের অবস্থা এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

বিরোধের ইতিহাস এবং হিংসাত্মক ঘটনা

গত বছর ২৪ নভেম্বর ২০২৪-এ এই বিরোধ আরও গুরুতর হয়ে ওঠে, যখন সম্ভলে শাহী জামা মসজিদের জরিপের সময় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সেদিনের সংঘর্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয় এবং ২৯ পুলিশ কর্মী আহত হয়। এই ঘটনার পর সম্ভলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় এবং অনেক এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

হিংসার এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি এসআইটি (Special Investigation Team) গঠন করা হয়েছে যা মামলার গভীরতর তদন্ত করছে। এই ঘটনা সমগ্র দেশে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে প্রমাণিত হয়।

হিন্দু পক্ষের দাবি এবং সিভিল কোর্টের আদেশ

এই সমগ্র মামলার মূলে হিন্দু পক্ষের এই দাবি রয়েছে যে বিরোধপূর্ণ স্থানে হরিহর মন্দির ছিল, যা মসজিদের দখলে নেওয়া হয়েছিল। এই দাবীর ভিত্তিতে হিন্দু পক্ষ সম্ভল সিভিল কোর্টে আবেদন দাখিল করেছিল। আদালত আবেদনের উপর বিবেচনা করে মসজিদের জরিপের আদেশ দিয়েছিল।

মসজিদ কমিটি এই আদেশকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল, কিন্তু এখন ইলাহাবাদ হাইকোর্ট তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে যে মসজিদের জরিপ জেলা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী হবে এবং তারপরই পরবর্তী আইনি পদ্ধতি চলবে।

Leave a comment