শিলংয়ে হানিমুনের আড়ালে স্বামীর হত্যা: স্ত্রীর চাঞ্চল্যকর ষড়যন্ত্র

শিলংয়ে হানিমুনের আড়ালে স্বামীর হত্যা: স্ত্রীর চাঞ্চল্যকর ষড়যন্ত্র
সর্বশেষ আপডেট: 13-06-2025

সোনম রঘুবংশী তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং তার বন্ধুদের সাথে মিলে তার স্বামী রাজার হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। বিয়ের আগেও একজন তরুণীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছিল।

Sonam Raghuvanshi: শিলংয়ে ঘটে যাওয়া রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলা সমগ্র দেশকে কাঁপিয়ে তুলেছে। এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তার স্ত্রী সোনম রঘুবংশী, যিনি তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং তার বন্ধুদের সাথে মিলে নিজেরই স্বামীর হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং তা বাস্তবায়নও করেছিলেন। এটি কোন সাধারণ হত্যা নয়, বরং ভেবেচিন্তে করা এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা ছিল, যা শুনে কেউই অবাক হবে না।

হানিমুনের বहाনায় হত্যার ষড়যন্ত্র

সোনম তার স্বামী রাজা রঘুবংশীকে শিলংয়ে হানিমুনে যাওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিল এবং সেখানে পৌঁছেই আগে থেকেই ঠিক করা পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়েছিল। পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে এটি কোন কন্ট্রাক্ট কিলিং ছিল না, বরং রাজ কুশওয়াহার বন্ধুত্ব পালনের এক ভয়ঙ্কর উদাহরণ। রাজার হত্যা তারই পরিচিত লোকেরা করেছে, এবং তা শুধুমাত্র এই কারণে যে সোনম এবং রাজ কুশওয়াহাকে তার পথ থেকে সরাতে হয়েছিল।

বিয়ের আগে আরও একটি হত্যার পরিকল্পনা করেছিল

এই মামলার চাঞ্চল্যকর দিক হলো এটি প্রথমবার নয় যখন সোনম কারও হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে। পুলিশের মতে, বিয়ের আগেই সোনম এবং রাজ আরও একজন তরুণীর হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এই পরিকল্পনা ফেব্রুয়ারী মাসে করা হয়েছিল, যখন রাজা এবং সোনমের রোকা হয়েছিল।

ষড়যন্ত্র অনুযায়ী, তারা একজন তরুণীকে হত্যা করে তার পরিচয় সোনম হিসেবে দেখাতে চেয়েছিল, যাতে সকলেই মনে করে যে সোনমের মৃত্যু হয়েছে এবং সে সমাজ ও পরিবারের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছে। এর জন্য তারা একটি স্কুটি, নদী এবং জ্বলন্ত লাশের গল্পও গড়ে তুলেছিল। কিন্তু এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছিল।

১১ দিন আগে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়েছিল

যখন প্রথম ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছিল, তখন সোনম এবং রাজ একটি নতুন পরিকল্পনা করেছিল। বিয়ের ঠিক ১১ দিন আগে তারা রাজার হত্যা করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা ভেবেছিল বিয়ের পর রাজাকে হত্যা করা আরও সহজ এবং নির্ভরযোগ্য হবে। এর পর সোনম রাজাকে শিলং ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, যাতে সেখানে হত্যা করে কাউকে সন্দেহ না হয়।

পুলিশ রহস্য উন্মোচন করেছে

শিলংয়ের খালি হিল এলাকার এসপি বিবেক স্যামের মতে, এই হত্যা কোন পেশাদার দল বা সুপারি কিলিংয়ের মাধ্যমে করা হয়নি। এই হত্যা সম্পূর্ণরূপে রাজ কুশওয়াহা এবং তার তিন বন্ধু - আকাশ, আনন্দ এবং বিশাল - করেছে, যারা রাজের বন্ধুত্ব পালন করছিল। এই বন্ধুত্ব এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তারা একজন নিরপরাধকে হত্যা করার ক্ষেত্রেও দ্বিধা করেনি।

কীভাবে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হলো

হত্যার পর সোনম তার স্বামীর নিখোঁজের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিল এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পেরে সিসিটিভি ফুটেজ, কল রেকর্ডিং এবং ডিজিটাল ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন শুরু করে।

কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ বেশ কিছু প্রমাণ পেয়েছে, যার মধ্যে সোনমের আলাপচারিতা, তার ভ্রমণের পরিকল্পনা এবং রাজ কুশওয়াহার সাথে তার সম্পর্ক সামনে এসেছে। এরপর সোনম এবং তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে নেয়।

Leave a comment