ইন্দোরের সোনম তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহার সাথে মিলে তার স্বামী রাজা রঘুবংশীর হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। হানিমুনের অজুহাতে শিলং নিয়ে গিয়ে হত্যা করে।
সোনম রঘুবংশীর প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা: ইন্দোরে ঘটে যাওয়া রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ড সমগ্র দেশকে কাঁপিয়ে তুলেছে। এই ঘটনার আসামী অন্য কেউ নয়, রাজার স্ত্রী সোনম রঘুবংশী, যে তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহার সাথে মিলে তার স্বামীর হত্যার পরিকল্পনা করে এবং হানিমুনের অজুহাতে মেঘালয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে। এটি একটি এমন প্রেমকাহিনী যা ধীরে ধীরে রক্তাক্ত ষড়যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।
রাজ কুশওয়াহা কে?
রাজ কুশওয়াহা ইন্দোরের বাসিন্দা এবং বয়সে সোনমের চেয়ে প্রায় ৫ বছর ছোট বলে জানা গেছে। পেশায় সে একজন সাধারণ কর্মচারী, যে সোনমের পরিবারের প্লাইউডের দোকানে কাজ করত। দোকানে কাজের সময় রাজ ও সোনমের মধ্যে পরিচয় হয়, যা ধীরে ধীরে বন্ধুত্বে এবং পরে প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়।
বিবাহের পরেও চলছিল প্রণয় সম্পর্ক
যখন সোনমের বিবাহ রাজা রঘুবংশীর সাথে ঠিক হয়, তখনও সে রাজ কুশওয়াহার সাথে যোগাযোগ রাখে। ২০১৫ সালের ১১ই মে ইন্দোরে হিন্দু রীতিনীতিতে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিবাহের পরেও সোনমের তার প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক ছিল। তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং রাজাকে পথ থেকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকে।
কিভাবে হত্যার পরিকল্পনা তৈরি হয়
রাজা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সোনম ও রাজ মিলে একটা পরিকল্পনা তৈরি করে। পরিকল্পনা ছিল যে, হানিমুনের অজুহাতে সোনম রাজাকে মেঘালয়ে নিয়ে যাবে, যেখানে রাজ এবং তার তিনজন বন্ধু আগে থেকেই থাকবে। সেখানে সুযোগ পেলে তারা রাজার হত্যা করবে এবং লাশ এমনভাবে লুকিয়ে রাখবে যাতে কোনো প্রমাণ না থাকে।
হানিমুন মৃত্যুর পথে পরিণত হয়
২০শে মে সোনম ও রাজা হানিমুনে শিলং যায়। ২২শে মে তারা নোংগ্রিয়াট গ্রামের শিপারা হোমস্টেতে থাকে। পরের দিন ২৩শে মে তাদের চেক আউট রেকর্ড করা হয়, কিন্তু এর পরে তাদের মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর ২৪শে মে ওসরা হিলসের পার্কিংয়ে একটি পরিত্যক্ত স্কুটি পাওয়া যায় এবং পরে জঙ্গলে তাদের জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। ২রা জুন ওয়েইসাওডং ঝর্ণার কাছে এক গভীর খাদ থেকে রাজার লাশ পাওয়া যায়। তার হাতে থাকা ট্যাটুর মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
সোনমের সাথে ছিল রাজ এবং তার তিনজন বন্ধু
তদন্তে জানা যায় যে, সোনম ও রাজা শিলংয়ে একা ছিল না। তাদের সাথে রাজ কুশওয়াহা এবং তার তিনজন বন্ধুও ছিল। গাইডও নিশ্চিত করেছে যে, সোনমের সাথে আরও চারজন ছিল। সবাই মিলে পরিকল্পিতভাবে রাজাকে খাদে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করে।
সোনম নিজেই গাজীপুরে আত্মসমর্পণ করে
রাজার হত্যার পর সোনম পলাতক ছিল। কিন্তু ৯ই জুন সে হঠাৎ গাজীপুরের একটি ঢাবায় গিয়ে ঢাবার মালিকের ফোন নিয়ে তার ভাইকে ভিডিও কল করে জানায় যে সে গাজীপুরে আছে। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তদন্ত শুরু করে।
পুলিশের বক্তব্য কি?
মেঘালয় পুলিশ ও ইন্দোর পুলিশের যৌথ তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজার হত্যার পরিকল্পনা সোনম তার প্রেমিকের সাথে মিলে করেছিল। হত্যাকাণ্ডে মোট চারজন জড়িত ছিল, যার মধ্যে তিনজনকে ইন্দোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং একজন উত্তরপ্রদেশ থেকে পলাতক আছে।
রাজ কুশওয়াহার এখন পর্যন্ত রেকর্ড
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ কুশওয়াহার কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড ছিল না। সে সোনমের বাড়ির দোকানে কাজ করত এবং সেখান থেকেই তাদের সম্পর্কের সূত্রপাত হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সম্পর্ক এতটাই এগিয়ে যায় যে তারা মিলে এক নির্দোষ স্বামীর হত্যা করে।