শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬,০০০ নিয়োগ বাতিল

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬,০০০ নিয়োগ বাতিল
সর্বশেষ আপডেট: 03-04-2025

কলকাতা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মমতা ব্যানার্জি সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের কড়া আঘাত লেগেছে। সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলগুলিতে ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিলের কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখেছে। এই রায়ের পর রাজ্য সরকারের জন্য বড় সংকট দেখা দিয়েছে।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: মমতা ব্যানার্জি সরকার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে বড় ধাক্কা পেয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সরকারি স্কুলগুলিতে ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিলের কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখেছে। আদালত এই মামলায় কঠোর মন্তব্য করে বলেছে যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়ম ছিল। এর আগে, কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ চাকরির প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল, কারণ তদন্তে দেখা গিয়েছিল যে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেওয়া হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্টের কঠোর অবস্থান

প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে. ভি. বিশ্বনাথনের বেঞ্চ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রচুর অনিয়ম পেয়েছে। আদালত স্পষ্ট করে বলেছে যে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ছিল না এবং তাতে দুর্নীতির গন্ধ রয়েছে। আদালত আরও বলেছে যে এখন পর্যন্ত কাজ করছেন এমন কর্মীদের বেতন ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই, কিন্তু এই আদেশের পর তাদের চাকরি বাতিল বলে ধরা হবে।

সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের সেই আদেশকে সমর্থন করেছে যাতে ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হয়েছিল। হাই কোর্ট পেয়েছিল যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছিল এবং প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়েছিল।

সিবিআই তদন্ত অব্যাহত থাকবে

সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই-কে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত বলেছে যে ২৩ লক্ষ উত্তরপত্রের মধ্যে কোনগুলির তদন্ত করা হয়েছে এবং কোনগুলির হয়নি, সে বিষয়ে কোন স্পষ্টতা ছিল না। তাই সমস্ত উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত মানবিক ভিত্তিতে একজন প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে চাকরিতে থাকার অনুমতি দিয়েছে। অন্যান্য প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের জন্যও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু ছাড় দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

যদিও, সুপ্রিম কোর্ট এও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এখন পর্যন্ত চাকরি করছেন এমন শিক্ষক ও কর্মীদের বেতন ফেরত দেওয়ার দরকার নেই। হাই কোর্ট আগে আদেশ দিয়েছিল যে এই কর্মীদের কাছ থেকে সুদসহ বেতন আদায় করা হবে, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাতে রোক লगाয়।

রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি

এই রায়ের পর রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। বিরোধী দলগুলি মমতা সরকারের উপর আক্রমণ করে বলেছে যে এটি দুর্নীতির স্পষ্ট উদাহরণ। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করার অন্যান্য আইনি বিকল্পগুলির উপর বিবেচনা করছে। এখন মমতা সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল তিন মাসের মধ্যে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।

এছাড়াও, আদালত স্পষ্ট করে বলেছে যে যারা পূর্ব প্রার্থী নির্দোষ ছিলেন তাদের নতুন প্রক্রিয়ায় ছাড় দেওয়া যেতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের আবেদনের পরবর্তী শুনানির জন্য ৪ এপ্রিলের তারিখ নির্ধারণ করেছে।

Leave a comment